মাহে রমাদ্বানে ১৮তম তারাবিহর সালাতে ১৮ তম পারার তেলাওয়াতের সারসংক্ষেপ

মুক্তিবাণী ইসলামিক ডেক্সঃ

১৮তম পারা তেলাওয়াতের সারসংক্ষেপ নিম্নরূপ:

১৮তম পারা (সূরা আল-মুমিনুন শুরু থেকে সূরা আল-ফুরকানের ২০ নং আয়াত পর্যন্ত):

1. সূরা আল-মুমিনুন (আয়াত ১-১১৮): এই সূরায় মুমিনদের গুণাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। যারা নামাজে বিনয়ী, অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে দূরে থাকে, জাকাত প্রদান করে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, তাদের সাফল্যের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে।

* আল্লাহর সৃষ্টি নিদর্শন, মানবজাতির সৃষ্টি, আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী, পানি, গাছপালা ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহর মহিমা বর্ণনা করা হয়েছে।

* পূর্ববর্তী নবীদের কাহিনী যেমন নূহ, মুসা, ঈসা (আ.) এবং তাদের সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের প্রতি অবিশ্বাস ও শাস্তির কথা বলা হয়েছে।

* কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা এবং জাহান্নামের শাস্তির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

2.সূরা আন-নূর (আয়াত ১-৬৪): এই সূরায় সমাজের নৈতিক ও সামাজিক বিধি-বিধান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদ থেকে বেঁচে থাকা, পর্দা রক্ষা করা এবং শরীয়তের নির্দেশনা মেনে চলার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।

* আল্লাহর নূর (আলো) এবং তার হিদায়াতের কথা বলা হয়েছে, যা বিশ্বাসীদের পথ দেখায়।

* সমাজে শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

3. সূরা আল-ফুরকান (আয়াত ১-২০: এই সূরায় কুরআনকে ফুরকান (সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী) হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

* মুশরিকদের ভ্রান্ত বিশ্বাস ও মূর্তিপূজার নিন্দা করা হয়েছে। তারা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত করে যা তাদের কোনো উপকার বা ক্ষতি করতে পারে না।

* আল্লাহর একত্ববাদ এবং তার অসীম ক্ষমতার কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এই পারায় বিশ্বাসীদের চরিত্র গঠন, সমাজের নৈতিকতা এবং আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।

ছবি মুক্তিবাণীছবি মুক্তিবাণী

বদর দিবস ইসলামী ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, যা বদর যুদ্ধের স্মরণে পালিত হয়। এই যুদ্ধটি ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে (ইসলামী বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ২ হিজরির ১৭ রমজান) সংঘটিত হয়েছিল। এটি ইসলামের ইতিহাসে প্রথম বড় সামরিক সংঘাত এবং মুসলিম ও কুরাইশ বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল। বদর যুদ্ধের তাৎপর্য নিম্নরূপ:

ছবি মুক্তিবাণীছবি মুক্তিবাণী

বদর দিবস এর তাৎপর্য

১. ইসলামের বিজয়ের সূচনা: বদর যুদ্ধে মুসলিমরা সংখ্যায় কম হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহর সাহায্যে বিজয় লাভ করে। এই বিজয় ইসলামের প্রসার ও প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি মুসলিমদের আত্মবিশ্বাস ও বিশ্বাসকে শক্তিশালী করেছিল।

ছবি মুক্তিবাণীছবি মুক্তিবাণী

২. আল্লাহর সাহায্যের প্রতীক : কুরআনে বদর যুদ্ধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে (সূরা আনফাল, আয়াত ৯-১০)। এই যুদ্ধে আল্লাহর বিশেষ সাহায্য ও নির্দেশনার কথা বলা হয়েছে, যা মুসলিমদের জন্য আল্লাহর প্রতি আস্থা ও নির্ভরতার শিক্ষা দেয়।

৩. ন্যায় ও সত্যের প্রতিষ্ঠা: বদর যুদ্ধ ন্যায় ও সত্যের প্রতিষ্ঠার জন্য সংঘটিত হয়েছিল। এটি শুধু একটি সামরিক সংঘাতই নয়, বরং সত্য ও মিথ্যার মধ্যে একটি সংঘাত হিসেবে বিবেচিত হয়। মুসলিমরা এই যুদ্ধে তাদের বিশ্বাস ও নৈতিক মূল্যবোধের জন্য লড়াই করেছিল।

৪. মুসলিম ঐক্যের প্রতীক: বদর যুদ্ধে মুসলিমরা একত্রিত হয়ে শত্রুর মোকাবিলা করেছিল। এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।

৫. ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তি: বদর যুদ্ধের পর মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তি আরও শক্তিশালী হয়। এই যুদ্ধ মুসলিমদের রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৬. আধ্যাত্মিক শিক্ষা : বদর যুদ্ধ মুসলিমদের জন্য ধৈর্য, ত্যাগ, আত্মসমর্পণ ও আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থার শিক্ষা দেয়। এটি মুসলিমদের জীবনে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

উপসংহারঃ বদর দিবস মুসলিমদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন, যা তাদের ইতিহাস, বিশ্বাস ও সংগ্রামের প্রতীক। এটি শুধু একটি যুদ্ধের স্মৃতি নয়, বরং ন্যায়, সত্য ও আল্লাহর প্রতি আস্থার একটি শিক্ষা।

সর্বশেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩৪
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও