১৪তম পারা সূরা আল-হিজর (১৫) এবং সূরা আন-নাহল (১৬) এর অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত। এই পারার মূল বিষয়গুলো হলো:
১. সূরা আল-হিজর: এই সূরায় আল্লাহ তায়ালা শয়তানের অহংকার এবং আদম (আ.) কে সিজদা না করার ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।
* আল্লাহর নিদর্শন ও শক্তির প্রতি মানুষের অবিশ্বাসের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।
* নবী ইব্রাহিম (আ.) এবং লুত (আ.) এর কাহিনী উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে আল্লাহর অনুগ্রহ ও শাস্তির উদাহরণ দেওয়া হয়েছে।
* কুরআনের মর্যাদা ও সংরক্ষণের বিষয়ে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি বর্ণিত হয়েছে।
২. সূরা আন-নাহল: এই সূরায় আল্লাহর নিদর্শন ও অনুগ্রহের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে, যেমন বৃষ্টি, ফসল, পশু-পাখি ইত্যাদি।
* আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের গুরুত্ব এবং শিরক থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
* ন্যায়বিচার, সদাচরণ এবং অন্যদের প্রতি দয়া প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
* কিয়ামত ও পরকালের জীবনের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
মুসলিম উম্মাহর সমকালীন করণীয় ও বর্জনীয়:
করণীয়:
১. আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে চিন্তা করা: সূরা আন-নাহলে আল্লাহর সৃষ্টি ও নিদর্শন সম্পর্কে চিন্তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। মুসলিম উম্মাহর উচিত প্রকৃতি ও জীবনযাত্রার বিভিন্ন দিকে আল্লাহর কুদরত সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করা।
২.ন্যায়বিচার ও সদাচরণ: সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং অন্যদের প্রতি সদাচরণ করা মুসলিমদের কর্তব্য। এটি সামাজিক শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য।
৩. কুরআন অধ্যয়ন ও আমল: কুরআনের জ্ঞান অর্জন এবং তা জীবনে বাস্তবায়ন করা মুসলিমদের প্রধান দায়িত্ব। কুরআনের শিক্ষা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা উচিত।
৪. দাওয়াত ও তাবলিগ: সমাজে ইসলামের সঠিক বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করা মুসলিম উম্মাহর দায়িত্ব।
বর্জনীয়:
১. শিরক ও কুফর থেকে দূরে থাকা: শিরক ও কুফর থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকা মুসলিমদের জন্য অপরিহার্য। আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা বা তাঁর নির্দেশনা অস্বীকার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. অন্যায় ও জুলুম: সমাজে অন্যায় ও জুলুম করা থেকে বিরত থাকা উচিত। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং অন্যদের অধিকার রক্ষা করা মুসলিমদের দায়িত্ব।
৩. অহংকার ও গর্ব: শয়তানের মতো অহংকার ও গর্ব থেকে দূরে থাকা উচিত। বিনয় ও নম্রতা মুমিনের বৈশিষ্ট্য।
৪. অশ্লীলতা ও পাপ কাজ: সমাজে অশ্লীলতা ও পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা এবং অন্যকেও এগুলো থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা উচিত।
মুসলিম উম্মাহর উচিত কুরআনের শিক্ষা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে সমাজে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা।
সর্বশেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৩:০৬
পাঠকের মন্তব্য