তৃতীয় তারাবির সালাতে তৃতীয় পারার সারসংক্ষেপ: হেদায়েতের আলোকবর্তিকা
মাহে রমাদ্বানের পবিত্র রজনীতে তৃতীয় তারাবির সালাতে কুরআন মাজিদের তৃতীয় পারা (জুজ) তিলাওয়াত করা হয়। এই পারার শুরু হয় সূরা আল-বাকারার ২৫৩ নং আয়াত থেকে এবং শেষ হয় সূরা আল-ইমরানের ৯২ নং আয়াতে। এতে রয়েছে গভীর হিকমত, ইতিহাসের শিক্ষা ও মানবজাতির জন্য পথনির্দেশ। নিম্নে এর মূলবক্তব্য উপস্থাপন করা হলো:-
প্রধান বিষয়বস্তু ও হেদায়েত:- ১. আয়াতুল কুরসি (সূরা আল-বাকারা ২৫৫): - আল্লাহর সার্বভৌমত্ব, জ্ঞান ও ক্ষমতার মহিমা বর্ণিত হয়েছে। এই আয়াত ঈমানদারদের অন্তরে প্রশান্তি আনে এবং তাকওয়া বৃদ্ধি করে।
২. তালুত ও জালুতের কাহিনি (সূরা আল-বাকারা ২৪৬-২৫১): - সংখ্যায় কম হয়েও আল্লাহর সাহায্যে বিজয়ের প্রতীক। এতে বিশ্বাস, ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসার গুরুত্ব ফুটে উঠেছে।
৩. ঋণ ও আর্থিক জবাবদিহিতা (সূরা আল-বাকারা ২৮২-২৮৩): - লেনদেনের ন্যায়নীতি, সাক্ষী রাখা ও ঋণগ্রস্তদের প্রতি সদয় হওয়ার নির্দেশ। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কুরআনের গাইডলাইন।
৪. সূরা আল-ইমরানের সূচনা (১-৯২): - ঐক্য ও সহিষ্ণুতা:- মুমিনদেরকে বিভেদ এড়িয়ে একতাবদ্ধ থাকতে বলা হয়েছে।
- ইবাদতের মর্ম:- আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিষ্ঠার সাথে ইবাদতের তাগিদ।
- উহুদের যুদ্ধের শিক্ষা:- বিপর্যয়ের মুহূর্তেও আল্লাহর নির্দেশনা মেনে চলা এবং ধৈর্য ধারণের গুরুত্ব।
- মরিয়ম ও ঈসা (আ.)-এর কাহিনি:- আল্লাহর অলৌকিক ক্ষমতা ও নবীদের প্রতি অনুসরণের আহ্বান।
হেদায়েতের মূলসূত্র: - আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রেখে জীবনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা।
- আর্থিক ও সামাজিক লেনদেনে সততা ও ন্যায়পরায়ণতা বজায় রাখা।
- ঐক্যবদ্ধ সমাজ গঠনে ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের চর্চা।
- ইতিহাস ও নবীদের জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে আত্মশুদ্ধির প্রয়াস।
প্রতিফলন:-রমাদ্বানের এই রাতগুলোতে তৃতীয় পারার তিলাওয়াত মুমিনদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করে, পাশাপাশি ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে সঠিক পথের সন্ধান দেয়। এর শিক্ষাগুলো অনুসরণ করাই হলো প্রকৃত হেদায়েত।
সর্বশেষ আপডেট: ৪ মার্চ ২০২৫, ০০:৪০
পাঠকের মন্তব্য