ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় ‘জয় বাংলা’ কোনো সময় জাতীয় স্লোগান ছিল না। মূলত এটি ছিল আওয়ামী লীগের স্লোগান। ফলে এই স্লোগানকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, ২০২২ সালে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মার্চ মাসের দুই তারিখে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাহলে প্রশ্ন ওঠে এর আগে জাতীয় স্লোগান কী ছিল। আসলে এর আগে কোনো জাতীয় স্লোগানই ছিল না। বাংলাদেশ স্বাধীনের আগে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ হিসেবে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তবে এটি কোনো প্রজ্ঞাপন হিসেবে জারি হয়নি। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান বানায়। ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাধারণ জনগণের দাবির মুখে এই ঘোষণাকে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় স্লোগান থেকে বাদ দেয়।
এ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বেশিরভাগ নেটিজেনরাই বলছেন, কোনো সময় জাতীয় স্লোগান ছিল না জয় বাংলা।
সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক মেহেদী হাসান পলাশ নামে একজন লিখেছেন, আজকে যারা ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অম্লান স্লোগান দাবি করে সোচ্চার হয়েছেন, তাদের কাছে আমার সবিনয়ে প্রশ্ন?
বিগত ১৫ বছরে ‘জয় বাংলা’ জিতবে এবার নৌকা’ স্লোগান দিয়ে জয় বাংলার পাল তুলে সারা বাংলাদেশ দাপিয়ে যে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছিল, তখন কিন্তু কেউ বলেন নাই একটি জাতীয় স্লোগান দেশের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। তখন কিন্তু আপনারা বলেন নাই দলীয় লেভেল মেরে এই জয় বাংলার পাল তুলে একের পর এক নির্বাচনে ভোট কারচুপি, ভোটারবিহীন নির্বাচন, ভোট ডাকাতি করে একটি জাতীয় স্লোগানকে অপমানিত করা হচ্ছে!
১৯৭১ সালের একটি ছবি দিয়ে মইন উদ্দিন আরিফ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ইতিহাস বলে জন্মগতভাবেই আমাদের স্লোগান বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
নেটিজেনরা বলেন, সবাই নিজের সুবিধা মতো ইতিহাস তৈরি করে জাতীয় স্লোগান বানায়। আসলে এই দেশের কোনো জাতীয় স্লোগানই ছিল না। তবে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ জাতীয় স্লোগান হিসেবে পরিচিত ছিল। আর পাকিস্তান আমলে জাতীয় স্লোগান ছিল পাকিস্তান জিন্দাবাদ।
তবে হাতে-গোনা কয়েকজন জয় বাংলার পক্ষে ফেসবুকে পোস্ট দেন। পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ফেসবুকে লিখেন, ‘জয় বাংলার বিকল্প স্লোগান শুধুই জয় বাংলা।’
সর্বশেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৫৪
পাঠকের মন্তব্য