ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার মিছিলে হামলার জেরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এতে জাতীয় পার্টির অফিসের নিচতলার ফ্লোরটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এলাকা থেকে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার’ ব্যানারে মশাল মিছিল বের হয়। তারা জাতীয় পার্টিকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে মিছিল নিয়ে দলটির কার্যালয় ঘেরাও করতে কাকরাইলের বিজয়নগর এলাকায় আসে। এ সময় সাধারণ জনতাও যোগ দেয় মিছিলকারীদের সাথে। তখন জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে অবস্থানরত নেতাকর্মীরা মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় বেশ কয়েকজন মিছিলকারী আহত হন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। ৭টা ৫০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এলেও বিক্ষুদ্ধরা গাড়ি ফিরিয়ে দেয়। পরে আবার ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এসে ৮টা ১০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন রশিদ বলেন, সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতাকে নিয়ে মিছিল শুরু করি। বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কির সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে মিছিল শেষ হওয়ার কথা। তবে মিছিলটি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় দপ্তরের সামনে যাওয়ার সাথে সাথে উপর্যুপরি আক্রমণ করা হয়। আমাদের প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।
মিছিলকারীদের একজন হাসান আল মামুন বলেন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় দপ্তরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের আগে থেকেই অবস্থান ছিল। মিছিলটি আসার সঙ্গে সঙ্গে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। পরে বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা এক হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
হামলার জবাবে আগুন দেওয়া হয় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে পোড়ার পর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরমধ্যে জাতীয় পার্টির অফিসের নিচতলা পুড়ে যায়। ছিড়ে ফেলা হয় আশপাশের সব ব্যানার-ফেস্টুন।
রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অবস্থান দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব ছাড়াও নেতাকর্মীদের নামে মামলা প্রত্যাহার এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আগামী শনিবার সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি। এই কর্মসূচি ঘোষণার পরই ছাত্র-জনতার মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
সর্বশেষ আপডেট: ১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩
পাঠকের মন্তব্য