জামায়াতের মতোই প্রেসিডেন্টের পদচ্যুতি চায় জাতীয় নাগরিক কমিটি

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্সঃ

জাতীয় নাগরিক কমিটি নামে একটি সংগঠন প্রেসিডেন্টের পদচ্যুতি জানিয়ে সমাবেশ করেছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রেসিডেন্ট মুহম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের লক্ষে ৪৮ ঘন্টার আলটিমেটাম দেন। নাগরিক কমিটির মতোই জামায়াতও চায় প্রেসিডেন্টের পদচ্যুতি।

গতকাল প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ ইস্যুতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে বিএনপি স্পষ্ট জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট সাহাবু্িদ্দনের প্রতি তাদের কোনো সহানুভুতি নেই। তবে সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগে নতুন কোনো সংকট সৃষ্টি হয় কিনা তা নিয়ে তারা শংকিত। কারণ দিল্লিতে বসে হাসিনা একের পর এক ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে জামায়াত প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের ইস্যুতে জাতীয় নাগরিক কমিটির সুরের সঙ্গে সুর মিলিয়েছে। দলটি জানিয়েছে তারা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চায়।

অবস্থা এমন যে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে ভারতের এজেন্ডা ‘সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের’ বিরোধিতায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে বিপরীতমুখি অবস্থান নিয়ে জামায়াত ‘সংখ্যানুপাতির জনপ্রতিনিধিত্ব’ নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এখন হঠাৎ করে মো. সাহাবুদ্দিন প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বিদায় নিলে নতুন করে সংকটের সৃষ্টি হয় কিনা আশঙ্কা বিএনপি প্রকাশ করলেও জামায়াত নাগরিক কমিটির সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। উল্লেখ নাগরিক কমিটির সদস্যদের বেশির ভাগই নুরুল হক নূরের দলের সঙ্গে সম্পর্কিত।

গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও ফ্যাসিবাদের দোসর প্রেসিডেন্ট চুপ্পুর (প্রেসিডেন্টের ডাকনাম) পদত্যাগের দাবিতে বিপ্লবী ছাত্র–জনতার গণজমায়েত’ কর্মসূচির আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেখানে প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেন অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। নাগরিক কমিটির দাবির সঙ্গে সুর মিলিয়ে গতকাল শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক আব্দুল হালিম জানান, প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ চায় জামায়ত। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ চায়। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব মৌলিক সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দেবে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন জরুরি দাবি করে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, যত দ্রুত সম্ভব মৌলিক সংস্কার শেষে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন দেবে বলে প্রত্যাশা জামায়াতের।

এর আগে প্রেসিডেন্টের অপসারণ চেয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গড়ে ওঠা সংগঠনটির নেতারা এ দাবি জানান। রাজধানীর লালবাগে শহীদ আব্দুল আলীম খেলার মাঠে আয়োজিত ‘ঢাকা রাইজিং’ সমাবেশে এ দাবি জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের আসনে বসে চুপ্পু মিথ্যাচার করে বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই। মহামান্যের চেয়ারে বসে যে মহামিথ্যাচার করেছেন তাতে তিনি আর কোনোভাবেই ওই চেয়ারে থাকতে পারেন না। অতএব সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি আমাদের আহ্বান, আপনারা রাষ্ট্রপতির অপসারণের ব্যাপারে সবাই ঐকমত্যে আসুন। তা না হলে ওই সব ফ্যাসিবাদী শক্তি যারা বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, সে ফাঁদে আমাদের পড়তে হবে। এ ফাঁদ থেকে বাঁচতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, চুপ্পু বঙ্গভবনে আর থাকতে পারবে না। হাসিনা পালিয়ে গেছে। এবার সারা দেশের আনাচকানাচে যেসব ফ্যাসিস্ট রয়েছে তারাও পালিয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ! চুপ্পুকে অপসারণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটি সঙ্গে সুর মিলিয়ে জামায়াতের প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনকে পদচ্যুত করার দাবি গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ায় এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সোস্যাল মিডিয়ায় নেটিজেদের কেউ লিখেছেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি কার্যত ভারতের এজেন্ট হিসেবে পরিচিত। জামায়াত কি সে ফাঁদে পা দিচ্ছে? কেউ লিখেছেন, বিএনপিকে ঠেকাতে যা যা করা প্রয়োজন জামায়াত তার সব পথ অনুসরণ করবে। কিন্তু আখেরে জামায়াত ১০ শতাংশের বেশি ভোট পাবে না।

সর্বশেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২২
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও