বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার রাষ্ট্রদ্রোহ ও সাইবার নিরাপত্তা আইনের পৃথক দুটি মামলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) আরও দুই কর্মকর্তাকে দুই দিন করে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।

শনিবার বিকালে শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. আক্তারুজ্জামানের আদালত এই অনুমতি দেয়।

রিমান্ড যাওয়া আসামিরা হলেন, লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আলী হাসান মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (আইটি) এস কে শাকিল আহমেদ (৩১)।

এদিন তাদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক আশিকুর রহমান দেওয়ান। আসামিদের পক্ষে আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

গত ১৮ অক্টোবর ঢাকার খিলক্ষেত থানার পৃথক দুই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) ছয় কর্মকর্তাকে তিন দিন করে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।

আসামিরা হলেন, মুন্সীগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার রাজন কুমার দাস, ব্রাহ্মবাড়িয়ার নবীনগরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, কুমিল্লার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শ্রী দীপক কুমার সিংহ, মাগুরার শ্রীপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রাহাত, নেত্রকোনার সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মনির হোসেন ও সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বেলাল হোসেন। এদের মধ্যে বেলাল হোসেন এক মামলার আসামি। অন্য পাঁচজন আরেক মামলার আসামি।

মামলায় অভিযোগে বলা হয়, গত ২৮ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কতিপয় বিপথগামী কর্মকর্তা/ কর্মচারী একত্রিত হয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি পরিচয়ে পরস্পর যোগসাজশে জরুরি সেবা বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে জড়িত হয়ে এবং বিগত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালীদের মদদে নানা অযৌক্তিক দাবি দাওয়ায় ষড়যন্ত্র করে পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম কাজে লিপ্ত আছে। তাদের এ ধরনের কার্যকলাপ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে চরমভাবে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করার শামিল।

আরও বলা হয়, এসব কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা, বোর্ডের কর্মকর্তাদের সম্মানহানি এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অচল করে দিয়ে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতা তথা জনমনে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করার মাধ্যমে সরকারকে চরমভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা, যা দেশদ্রোহিতার শামিল।

এর আগে বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) খিলক্ষেত থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড খিলক্ষেত থানার পরিচালক প্রশাসন (আইন শাখার) আরশাদ হোসেন। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সাইবার নিরাপত্তা আইনের অভিযোগ আনা হয়েছে।