নির্বাচনের কাউন্ট ডাউন শুরু

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্সঃ

ত্রায়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের টাইমলাইন ‘দাবির পারদ’ উঠানামা করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর কেউ চাচ্ছেন দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক। কেউ বলছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন। কেউ বলছেন, ভোট নিয়ে তাড়াহুড়া না করে দীর্ঘ সময় নিয়ে সংস্কার করে নির্বাচন দেয়া হোক। নির্বাচনের টাইমফ্রেম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর এই বিতর্কের মধ্যেই আজ নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিতকরণে নির্বাচন কমিশনের সংস্কারের রুপরেখা তৈরি করবেন। ৩১ ডিসেম্বরের (তিন মাস) মধ্যেই সংস্কার প্রস্তাবনা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেবেন। অতপর কমিশন সংস্কার করে নির্বাচন কমিশন পুণর্গঠন করা হবে। নতুন কমিশন দায়িত্ব নিয়েই নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ ত্রায়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের টাইমফ্রেম দেবেন। নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচন কমিশন সংস্কার, নতুন কমিশন গঠন, ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি এক বছরের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার নির্বাচন বিশেষজ্ঞ। তিনি অনেক আগেই নির্বাচন কমিশনের সংস্কারের কিছু কাজ করে রেখেছেন। ফলে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচনের কথা চিন্তাভাবনা করে বলেছেন। শুধু তাই নয় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাপানের টোকিও ভিত্তিক নিউজ আউটলেট এনএইচকে ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ‘দ্রুত সংস্কার ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের’ দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচন নিয়ে অন্যেরা যাই বলুক না কেন অন্তর্বর্তী সরকার আগামী দেড় বছরের মধ্যে ত্রায়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ছক এঁকেই সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছেন। ফলে আজ পহেলা অক্টোবর থেকেই নির্বাচনের কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গেল।

এ প্রসঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কখন হবে এটা আমার জানার কথা নয়। আমার ধারণা, সরকার ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই নির্বাচনের দিনক্ষন নির্ধারিত হবে। তবে নির্বাচন কমিশন সংস্কারে আমাদের ৯০ দিন সময় দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দল ও সরকারের মধ্যে সংলাপ হবে। নির্বাচনী ব্যবস্থার সব দিক নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করব এবং এর ভিত্তিতে সুপারিশ প্রণয়ন করব।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল আলীম বলেন, নির্বাচন নিয়ে আইনি কাঠামো যা আছে সেগুলো সংস্কার করা খুব জরুরি। অর্থাৎ পুরো নির্বাচনি প্রক্রিয়া রিভিউ করতে হবে। শুধু নির্বাচনের আগে না, ভোটের পরও নির্বাচনি বিরোধগুলো বছরের পর বছর ঝুলে থাকে সেগুলো নানা সংকটে সমাধান হয় না, সে সব বিষয়ও এই পর্যালোচনায় উঠে আসতে পারে। এগুলো দ্রুত করা সম্ভব। নির্বাচন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, সংস্কারে সংবিধানের বিষয়টি থাকবে মৌলিক। সংবিধান সংস্কার করা হলে তার ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচন প্রক্রিয়ার অন্য কাজগুলো শুরু করতে হবে।

গত ১৯ জুলাই ৬টি সেক্টরে সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান প্রফেসর আলী রিয়াজ দায়িত্ব পালন করবেন।

ড. বদিউল আলম মজুমদারে নেতৃত্বাধীন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের অন্যান্য সদস্য হিসেবে কাজ করার কথা রয়েছে, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, নির্বাচন কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনালের মুখ্য পরিচালক ড. আবদুুল আলীম, আন্তর্জাতিক শাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বিশেষজ্ঞ মীর নাদিয়া নিভিন এবং লেখক ও রাজনীতি বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমানের।

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেঁধে দেয়া সময় ৯০ দিনের মধ্যে সংস্কারের প্রস্তাবনা জমা দিতে হবে। গতকাল প্রধান উপদেস্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, মঙ্গলবার থেকে ছয় কমিশনের কাজ শুরুর কথা। কিন্তু একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদ আরেক দফা আলোচনা করতে চাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো এখানে স্টেকহোল্ডার। তাদের সঙ্গে আলাপ হবে। অনেক কিছুতে তাদের মতামত চাওয়া হবে। এ আলোচনা দ্রুতই হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরই কমিশনগুলো (চূড়ান্তভাবে) কাজ শুরু করবে।

এদিকে সেনাপ্রধানের সংস্কার করে ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান উপদেষ্টার ১৮ মাস সংস্কারের পর নির্বাচন বক্তব্য নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মূলত ১৮ মাস ধরে সংস্কার করে পরে নির্বাচন নাকি ১৮ মাসের মধ্যে সংস্কারের পর নির্বাচন এই টাইমফ্রেম নিয়ে ধোঁয়াশা চলছে। এ প্রসঙ্গে জাহিদ উর রহমান নিজের ইউটিউবে বলেছেন, নির্বাচন ও সংস্কার ১৮ মাসের মধ্যে নাকি সংস্কার ১৮ মাস অতপর নির্বাচন বিষয়টি জাতির কাছে পরিস্কার করা উচিত। কারণ সেনাপ্রধান ১৮ মাসের মধ্যে সংস্কার ও নির্বাচনের কথা বলেছেন। অথচ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব নিউইয়ূর্কে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ১৮ মাস সংস্কারের পর নির্বাচন। জাতির কাছে টাইমফ্রেমের বিষয়টি পরিস্কার হওয়া দরকার ।

৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যূত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর দেশের ভোট পাগল মানুষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। রাজনীতির ম্যারর্পাচ না জানা গ্রামের মানুষ মনে করছেন দেশে আর পাতানো নির্বাচন হবে না। এবার ভোট দিতে পারবেন। সে জন্য তাদের মধ্যে ভোট নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। আগামী নির্বাচনে কারা প্রার্থী হবেন কোন দলের প্রার্থীর অবস্থা কেমন হবে সেসব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনকে উৎসব মনে করেন, অথচ প্রায় এক যুগ ধরে ভোট কেন্দ্রে যান না। হিন্দুত্ববাদী ভারতকে রাজনৈতিক খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করে শেখ হাসিনা পর পর তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘পাতানো ভোট’ করেন। ২০১৪ সালে ‘প্রার্থী ও ভোটারবিহীন’ নির্বাচন, ২০১৮ সালের ভোটের আগের ‘রাতে ব্যালটে সিল মারা’ নির্বাচন এবং ২০২৪ সালে সব রাজনৈতিক দলের বর্জনের মুখে ‘ডামি প্রার্থীর’ নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসেন। প্রতিটি নির্বাচনে তিনি প্রশাসনের আমলা, পুলিশ বানিহী, র‌্যাব, বিজিবি এমনকি সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করেন। এসব বিতর্কিত নির্বাচন দেশের মানুষ মেনে নেয়নি এবং উন্নয়ন সহযোগী দেশ, সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তবে ভারত শেখ হাসিনার পক্ষ্যে প্রভাবশালী দেশগুলোতে দেনদরবার করে গণভিত্তিহীন শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখেন। হাসিনা পুলিশ ও র‌্যাব দিয়ে জনগণকে ঠেঙ্গিয়ে দমিয়ে রেখে হত্যা-গুম-দুর্নীতি-লুটপাটে মেতে ওঠেন। কিন্তু হাসিনা পালনোর পর পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। দেশের মানুষ এখন নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছেন।

ৎ দেশে এখন ৩৩ বছর যার বয়স এবং এক যুগ আগে ভোটার হয়েছেন নাগরিক হিসেবে তিনি কোনোদিন ভোট দেয়ার সুযোগ পাননি। অথচ ১৮ বছর বয়সে ভোটার তালিকায় নাম উঠার পরই প্রত্যেক নাগরিককে প্রতিটি জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দেয়ার কথা। পতিত শেখ হাসিনা ভারতীয় খুঁটির জোরে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনে তাবেদার বসিয়ে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে একের পর এক পাতানো নির্বাচনের খেলা খেলেছেন। নির্বাচন কমিশনের হিসেবে দেখা যায় হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮ জন। ২০১৮ সালে রাতের ভোটের নির্বাচনের পর ৫ বছরের ভোটারের সংখ্যা বেড়ে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে ৭৯ লাখ ৮৩ হাজার ২৭৭ জন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদের ভোটারের সংখ্যা ছিল ৮ কোটি ৭৯ লাখ ৪ হাজার ১৫৮ জন। সে হিসেবে গত ১৫ বছরে ভোটারের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় তিন কোটি (২৭৯৭৪১৫৮ জন)। নির্বাচনে ভোট দিতে না পারা এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পাতানো নির্বাচন হওয়ায় দেশের প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়েদের অনেকের বয়স ১৮ বছর পার হলেও ভোটার হওয়ার আগ্রহ দেখাননি। অন্তর্র্বর্তী সরকারের সংস্কারের পর ত্রায়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। নতুন ভোটারের সংখ্যা কয়েক লাখ বাড়লে মোট ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

দিল্লিতে বসে হাসিনার কূটচাল এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম শুরু হওয়ার মধ্যে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ২৩ সেপ্টেম্বর রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে যেকোনো পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, আগামী ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সে জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে এই সরকারকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সেনাবাহিনীর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত করার একটি রূপরেখা দিয়ে তিনি বলেন, আমি তার (ড. ইউনূস) পাশে থাকব। যা-ই হোক না কেন। যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন।

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়ূর্ক গেলে সেখানে জাপানের টোকিও ভিত্তিক নিউজ আউটলেট এনএইচকে ওয়ার্ল্ডকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘দ্রুত সংস্কার ও নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার করা এবং সরকার প্রস্তুত হলেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে।’ জাতিসংঘের অধিবেশের সময় সাইড লাইনে প্রধান উপদেস্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে জো বাইডেনসহ বিশ্বের প্রভাবশালী নেতারা সাক্ষাৎ করেন। তারা সকলেই ড. ইউনূসকে সব ধরণের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। সেখানে ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তাকে ড. ইউনূস যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন করার কথা জানান। আর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র সব ধরণের সহায়তা করতে চায়। ওই বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে জানান, ড. ইউনুস-ব্লিঙ্কেন বৈঠকে প্রস্তাবিত রাষ্ট্র সংস্কার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং হালনাগাদ ভোটার তালিকা শেষ হওয়ার কমপক্ষে ১৮ মাস পর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে- এমনটা জানালে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার কথা জানান।

ত্রায়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলো সোচ্চার হয়ে উঠেছে। হাসিনা পালানোর পর আওয়ামী লীগ কার্যত ‘হাওয়া’ হয়ে গেছে। একাধিক উপদেষ্টা বলেছেন, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে রাজনৈতিক দল হিসেব আওয়ামী লীগের বিচার অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালে হওয়ার পর সিদ্ধান্ত হবে দলটি রাজনীতি করতে পারবে কিনা। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, দেড় বছর পর নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ সে নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি এটাও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হবে না। সুবিধাবাদী রাজনীতির কারণে জাতীয় পার্টির প্রতি মানুষের কোনো আগ্রহ নেই। সাধারণ মানুষের দাবি গণতন্ত্র হত্যাকারীকে সহায়তা করতে তিনটি পাতানো নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং পুতুল সংসদের বিরোধী দলের সুবিধা নেয়ায় দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেফতার করতে হবে। এর বাইরে দেশের সবচেয়ে বড় এবং জনসমর্থিত দল বিএনপি চায় যৌক্তিক সময়ে সংস্কার করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। সম্প্রতি ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনার ব্যবস্থা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। এই সরকারের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, জনগণের আস্থা আছে। তবে অবশ্যই এটা (নির্বাচন) সীমিত সময়ের মধ্যে, একটি যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।’

অন্যদিকে জামায়াতের আমীর আমির শফিকুর রহমান রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আইনজীবী সমাবেশে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ২টি রোডম্যাপ প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে যে, নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে হবে। আমরা বলছি-একটা রোডম্যাপে হবে না। দুইটা রোডম্যাপ দিতে হবে। প্রথম রোডম্যাপটি সংস্কারের। এটা যখন একটা পূর্ণতার পর্যায়ে পৌছে যাবে, সঙ্গে-সঙ্গেই একটা নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে দিতে হবে, আর দেরি করা যাবে না।

সর্বশেষ আপডেট: ১ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৩
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও