বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিবেদন তৈরি করবে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। এ জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে তারা। এরই অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার সরকারি ২৪ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা শেষে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অর্থনৈতিক অবস্থার নানা দিক সম্পর্কে কীভাবে তথ্য পাওয়া যাবে এই বিষয়ে এর আগেও সরকারি অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আওয়ামী লীগের শাসনামলের সব চুক্তি খতিয়ে দেখা হবে।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, আজ আমাদের মূল কাজটা ছিল, যেসব তথ্য-উপাত্ত বিবেচনায় নেওয়া হয় এবং সেই বিবেচনাগুলো নিয়ে সরকারের ভেতরে যারা তথ্য-উপাত্তকে সৃষ্টি করেন, পরিবেশন করেন, মূল্যায়ন করেন, সেই সসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করা। আমাদের দিক থেকে যেসমস্ত চাহিদা আছে জানার তা হলো তথ্য উপাত্তের হালনাগাদ পরিস্থিতি কী আছে? উনাদের কাছে এমন কিছু আছে কি না যেগুলো এতদিন উনারা প্রকাশ করতে পারেন নাই এবং আগামীতে তথ্য-উপাত্ত সঠিকভাবে দেওয়ার জন্য কী কী পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে সেগুলো সম্পর্কে যদি তাদের কোনও পরামর্শ থাকে সেগুলো আমরা শুনেছি।
পরিকল্পনা শেষে এখন শ্বেতপত্র লেখার কাজ এগোবে জানিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা মোটা দাগে পেয়েছি, যে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া বিভিন্ন প্রাক্কলনের বস্তুগত ভিত্তি অত্যন্ত দুর্বল ছিল। অনেক সময় যারা প্রাক্কলন তৈরি করেছেন তারা অসহায়বোধ করেছেন, ওই প্রাক্কলন দিতে বাধ্য হয়েছেন। এই কথাটা অনেক বড়ভাবে এসেছে। দুই মাস পর শ্বেতপত্র লেখা হলে সব বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির এই দুটি বিষয় প্রথমে বিশ্লেষণ করা হবে জানিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, মূলত দুটি তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো। একটা হলো জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধির হিসাব কীভাবে হয়েছিল। দ্বিতীয় হলো মূল্যস্ফীতির হিসাব কীভাবে হয়। এই দুইটো বিষয়কে স্যাম্পল হিসেবে গভীরে গিয়ে দেখার ব্যবস্থা করেছি।
এই অর্থনীতিবিদ আরও জানান, আগামী বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিকে দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য অথবা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রগতি বা কী ঘাটতি ছিল এই বিষয়েও খোঁজ নেবে শ্বেতপত্র কমিটি। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, জ্বালানি ক্রয়, অথবা বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব চুক্তি হয়েছে সেগুলোর মূল চুক্তিগুলো দেখার সুযোগ কীভাবে হবে সেগুলো নিয়েও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, শ্বেতপত্র কমিটি কোনও সংস্কার কর্মসূচি নয়। বরং দেশের অর্থনীতির জিরো পয়েন্ট খুঁজে বের করার কাজ চলছে।
সর্বশেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪২
পাঠকের মন্তব্য