শত শত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এখনো বহাল তারেক রহমানের মামলা

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্সঃ

পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বত্র ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করেন অসংখ্য মামলা। ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন সরকার আমলে দায়েরকৃত মামলাগুলোতে অনুগত বিচার বিভাগ দিয়ে তারেক রহমানকে দণ্ডাদেশ দিয়েছেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ অনেক রাজনৈতিক নেতার শত শত মামলা প্রত্যাহার করেছে। প্রত্যাহার করেনি শুধু বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি মিথ্যা মামলাও। ‘স্বশাসিত স্বাধীন প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে দাবিদার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলাগুলোর একটিও প্রত্যাহার কিংবা বাতিল করেনি। কম গুরুত্বপূর্ণ কিছু মামলা খারিজ হয়ে গেছে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়ায়। ফলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব মামলাই এখনো চলমান রয়েছে। এর ফলে বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের মাঝে এ নিয়ে দানা বাঁধছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ। তাদের মতে, হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার প্রশ্নে সরকার তারেক রহমানের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।

আদালত এবং দুদক সূত্র জানায়, কথিত অর্থ পাচারের একটি মামলায় বিচারিক আদালত তারেক রহমানকে খালাস দিয়েছিলেন। এ রায় দেয়ায় জিঘাংসার বশবর্তী হয়ে জেলা জজ মো: মোতাহার হোসেনকে শেখ হাসিনা দেশান্তরী করেন। তার বিরুদ্ধেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)কে লেলিয়ে দেন। শেখ হাসিনা যাকেই চক্ষুশূল মনে করতেন তার বিরুদ্ধেই লেলিয়ে দিতেন দুদক। সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্ত কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের তৎকালীন বিচারপতি মো: জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধেও দুদককে দিয়ে মামলা করান। বলা চলে দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে মামলাকে হাতিয়ার করেই টিকেছিলো দেড় দশকের হাসিনা রেজিম। হাজার হাজার মিথ্যা মামলা। দায়ের করা হয় শত শত গায়েবী মামলা। এসব মামলায় আসামি করা হয় বিএনপি’র অন্তত ৪০ লাখ নেতা-কর্মীকে। উদ্দেশ্য একটিই। মামলার পর মামলা দিয়ে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’কে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। যদিও এতে ফল হয়েছে উল্টো। মামলা-হামলার মধ্য দিয়ে দেড় দশকে দলটি আরো সুসংহত হয়। জনমানুষের মাঝে আওয়ামীলীগের প্রতি চরম ঘৃণা সৃষ্টি করে। বিপরীতে বিএনপি’র বাড়ে জনপ্রিয়তা। হাসিনার অমানুষিক নির্যাতন, নিবর্তন এবং আপোষহীনতার রাজনীতির কারণে দলটিকে এখন ক্ষমতার সিংহাসন হাতছানি দিচ্ছে। ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট উৎখাত হয় হাসিনা সরকার। এরপর থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই প্রত্যাহার হতে শুরু করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা। খারিজ হয়ে যায় বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্তত ৫টি মামলা। হাসিনা সরকার আমলে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে দেয়া আদালত অবমাননা মামলাও প্রত্যাহার হয়ে যায়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হাসিনার অনুগত প্রশাসনের দায়েরকৃত মামলাগুলোও প্রত্যাহার হয়েছে। কারাবন্দী শিক্ষার্থী এবং বিএনপি-জামায়াতের নেতারা কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেছেন। বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ২টি মামলায় খালাস পেয়েতো রীতিমতো আবেগে কেঁদে ফেলেন।

দেড় দশকে শত শত মামলায় জর্জরিত বিরোধী রাজনীতিকদের মামলাগুলো প্রত্যাহার, বাতিল এবং খালাস পাওয়ায় স্বস্তি নেমে এসেছে হাসিনা বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মাঝে। নিষ্ঠুর হাসিনা সরকারের মামলায় যারা দেশত্যাগ করেছিলেন তারাও ফিরে আসছেন স্বাধীনতার সুখ উপভোগ করতে। ব্যতিক্রম কেবল হাসিনার নিষ্ঠুরতার শিকার বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশ ফ্যাসিস্টমুক্ত হলেও প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে পা রাখতে পারেননি তিনি। কারণ, তার একটি মামলাও অদ্যাবধি প্রত্যাহার হয়নি। যার দক্ষ-দূরদর্শী ও কৌশলী নেতৃত্বে ‘হাসিনাবিরোধী আন্দোলন’ আপামর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রূপ লাভ করে সেই ব্যক্তিটির মামলাই প্রত্যাহার হয়নি এখনো। এখনো মুক্ত হয়নি দেশনায়ক তারেক রহমানের দেশে ফেরার আইনি জঞ্জাল। বিষয়টি সবার লক্ষ্যে নাকি অলক্ষ্যেই ঘটেছে- কে জানে ! রাজনীতি বিশ্লেষকদের একটিই প্রশ্ন, দেশ মাফিয়াতন্ত্র মুক্ত হওয়ার এক মাসের মাথায়ও কেন মামলার জটাজাল তারেক রহমানকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে ? বিএনপিপন্থি আইনজীবীগণ তারেক রহমানের মামলার ইস্যুটি বেমালুম ভুলে গেছেন ? যদিও ফ্যাসিস্ট হাসিনা উৎখাতের পর বিএনপির নেতাকর্মীর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষায় রয়েছেন। কবে তারেক রহমান বীরের বেশে ফিরে আসবেন বাংলাদেশে! তাদের প্রত্যাশা, দ্রুততম সময়ে তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। কিন্তু এ প্রত্যাশা যেন সহজেই পূরণ হওয়ার নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেকের মামলা প্রত্যাহার কিংবা বাতিল করলেও তারেক রহমানের একটি মামলাও প্রত্যাহার করেনি। হাসিনা সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বিএনপি’র এই শীর্ষ নেতা নিজ থেকে এ সরকারের প্রতি এমন কোনো আবেদন-নিবেদনও করেননি। তা সত্ত্বেও সুশাসন ও সংস্কারের অঙ্গীকার নিয়ে শপথ নেয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজ থেকেই মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেবেÑ এমনটি প্রত্যাশা দলটির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। যদিও মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে তারেক রহমান নিজেই আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বনের পক্ষপাতী বলে জানা গেছে। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কোনো দৈব ইশারায় এক নিমিষে মামলাগুলো ‘হাওয়া’ হয়ে যাকÑ এমনটি তারেক রহমান নিজেও চাইছেন না। আইন ও প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধাশীল তারেক রহমান চান, আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার মোকাবেলা করতে। শেখ হাসিনা যেমন ক্ষমতায় আসীন হয়ে নিজের নামে দায়েরকৃত সব মামলা নিজেই প্রত্যাহার করে নিয়েছেন- বহুল বিতর্কিত নোংরা এবং বিচারহীনতার এ পথে তারেক রহমান যেতে চান না। আইনের শাসন প্রশ্নে আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি’র মধ্যে সুস্পষ্ট যে পার্থক্য রয়েছে তারেক রহমান সেটি পুনরায় নিরূপণ করতে চাইছেন। যে কারণে মামলা প্রত্যাহারের কোনো অনুরোধ তিনি কিংবা তার আইনজীবী বর্তমান সরকারের কাছে করতে চান না।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কত মামলা : প্রতিশোধ আর রক্ত-নেশায় উন্মত্ত হাসিনা সরকার তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অর্ধ শতাধিক মামলা করেছে। এর মধ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা এবং ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তাকে কারাদণ্ড দিয়েছে। বাকি মামলা রয়েছে বিচারাধীন। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এসব মামলা ঠুকে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা : ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সমাবেশ চলার সময় গ্রেনেড হামলা হয়। ওই হামলায় শেখ হাসিনা এবং শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা অল্পের জন্য প্রাণেরক্ষা পান। নিহত হন ২৪ জন নেতা-কর্মী। আহত হন ৪ শতাধিক মানুষ। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালে ক্ষমতায় এসে হামলার ঘটনার ‘অধিকতর তদন্ত’ করে। অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদনে তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হয়। এ মামলায় আসামি ছিল ৫২ জন। পরে এ মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। মামলাটি এখন আপিলে রয়েছেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা : ২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে’ দুর্নীতি হয়েছে-মর্মে অভিযোগ এনে মামলা করে। এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে পাওয়া ২ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি নিজেদের অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে-মর্মে অভিযোগ করা হয়। এ মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় বিচারিক আদালত। তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচজনকে দেয়া হয় ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড। এ মামলায় তারেক রহমানকে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।

অবৈধ সম্পদের মামলা : ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান, শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল বানুর বিরুদ্ধে একটি মামলা করে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকারও বেশি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। এ মামলায় গতবছর ২ আগস্ট তারেক রহমানকে ৯ বছর, ডা. জোবায়দা রহানকে ৩ বছর কারাদণ্ড দেয় হাসিনার অনুগত আদালত।

কথিত অর্থপাচার মামলা : ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের একটি মামলায় ঢাকার একটি আদালত তারেক রহমানকে খালাস দেয়। ওই মামলায় তারেক রহমানের বন্ধু ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে এ রায় দেয়ায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার বিচারক মো: মোতাহার হোসেনকে দেশ ছাড়া করেন। তাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেন। বিচারকের বিরুদ্ধে দুদককে দিয়ে মামলা করা হয়। অন্যদিকে তার দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। আপিলে হাসিনার অনুগত হাইকোর্ট ডিভিশনের তৎকালীন একটি বেঞ্চ তারেক রহমানকে ৭ বছর কারাদণ্ড দেয়। তাকে ২০ কোটি টাকা অর্থদণ্ডও করে।

মানহানির মামলায় কারাদণ্ড : ২০১৪ সালে লন্ডনে এক সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজাকার’ ও ‘পাক-বন্ধু’ উল্লেখ করায় শেখ মুজিব সম্পর্কে কটূক্তি করা হয়েছেÑ মর্মে মামলা হয় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। জনৈক আ’লীগকর্মী শাহজাহান বিশ্বাস বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় হাসিনার অনুগত নড়াইলের একটি আদালত। তবে প্রায় একই ধরনের অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ১০টি মামলা রয়েছে ঢাকার বিভিন্ন আদালতে।

কথিত ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ মামলা : তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট হাসিনা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাও করেছেন। ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি তেজগাঁও থানায় করা কথিত রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাটিতে তারেক রহমানের পাশাপাশি একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান আবদুস সালামকেও আসামি করা হয়। একুশে টিভি তারেক রহমানের একটি ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করেছিলো। এ মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এছাড়া নোয়াখালীতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আরেকটি মামলা করা হয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাও রয়েছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, ভারত সমর্থিত মঈন-ফখরুদ্দীন সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ বিএনপির তরুণ নেতা তারেক রহমানকে ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মইনুল সড়কের বাসা থেকে গ্রেফতার করে যৌথবাহিনী। পরে তার বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা করা হয়। বিভিন্ন মামলায় তাকে ৯ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। সেখানে অমানবিক নির্যাতন করে তারেক রহমানের কোমরের হাড় ভেঙ্গে দেয় তৎকালীন স্বৈরশাসকরা। ২০০৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঐ বছরের ১৯ জানুয়ারি নানী বেগম তৈয়বা মজুমদারের ইন্তেকালে তারেক রহমান মাত্র ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিলেন। ১৮ মাস কারাবন্দি থেকে ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সব মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। তিনদিন পর লন্ডনের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হবে তাই সেখানকার (নর্থ লন্ডন) একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে বসবাস করছেন।

বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, দেশনায়ক রহমানের কোনো মামলা এখন পর্যন্ত প্রত্যাহার হয়নি। ১৪টির মতো মামলা খারিজ হয়েছে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। খারিজ করার জন্য তারেক রহমানের পক্ষে কোনো আবেদন করা হয়নি। মামলার তারিখ অনুযায়ী বাদীর ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, বাদীর মৃত্যুসহ নানা কারণে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই খারিজ হয়েছে মামলাগুলো। তারেক রহমানের পক্ষে কোনো আবেদনই করা হয়নি। বিএনপি’র এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই আইনগতভাবে তিনি মামলাগুলো মোকাবেলা করবেন। আপনারা জানেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে শেখ হাসিনা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দেয়া হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা। এ মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মামলায় পঞ্চমবারের মতো দেয়া চার্জশিটে তাকে আসামি করা হয়। এ মামলার আসামি মুফতি হান্নানকে ১৬৭ দিন রিমান্ডে রেখে তার জবানবন্দী থেকে তারেক রহমানের নাম বের করা হয়। কিন্তু মামলাটির বিচার শেষ হওয়ার আগেই মুফতি হান্নানকে অন্য একটি মামলায় ফাঁসির মাধ্যমে হত্যা করা হয়। কারণ তাকে বাঁচিয়ে রাখলে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আদালতে জেরার মুখোমুখি হতে হতো। তাকে যাতে এ বিষয়ে জেরা করা না যায় এ কারণে আগেই তাকে ফাঁসি দেয়া হয়।

সর্বশেষ আপডেট: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৯
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও