স্বপদে এখনো বহাল দুদক চেয়ারম্যান-কমিশনারদের আটক করতে লিগ্যাল নোটিশ

ছবি সংগ্রহঃ
ছবি সংগ্রহঃ
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্সঃ

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভুত গণঅভ্যুত্থানে উৎখাত হাসিনা সরকার ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের বিচারপতিগণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণরসহ গুরত্বপূর্ণ প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা পদত্যাগ করেন। কিন্তু অনেকটা নির্লজ্জ্বের মতো ‘দায়িত্ব পালন’ করে চলেছেন শেখ হাসিনার মাফিয়াতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)র তিন শীর্ষ কর্মকর্তারা। স্বাভাবিক ভাবে পদত্যাগ না করায় তাদের পদত্যাগ এবং একই সঙ্গে তাদের আটক করার দাবিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

রোববার সর্বশেষ লিগ্যাল নোটিশটি প্রেরণ করেন সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মাসুদ আর. সোবহান। নোটিশে তিনি দুদক চেয়ারম্যান, দুই কমিশনারের পাশাপাশি সংস্থাটির আইনজীবী খুরশিদ আলম খানেরও পদত্যাগ চেয়েছেন। প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে নোটিশের ‘প্রাপক’ করা হয়েছে। নোটিশের বিষয়ে ব্যারিস্টার মাসুদ আর সোবহান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারের পদত্যাগ এবং তাদেরকে আটকের নির্দেশ চেয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২০ আগস্ট একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ভোলাকোট গ্রামের জনৈক এমাজউদ্দিন মজুমদার। তার পক্ষে নোটিশ পাঠান অ্যাডভোকেট এমএম বিল্লাহ। পৃথক এ নোটিশ দুদকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অপসারণ চাওয়া হয়।

নোটিশে দুদক চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে বলা হয়, আপনি (মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ) বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বর্তমান চেয়ারম্যান। আপনি দায়িত্বে থাকার সময়ে আপনার দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।

২০২১ সালের মার্চ মাস থেকে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা আপনাকে নিয়োগ দিয়েছেন। আপনি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে আসার পর সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্নীতিবাজদের বিশেষ সুবিধা দিয়েছেন। পক্ষান্তরে দুর্নীতি দমনের নামে ভিন্ন দল ও মতের মানুষদের হয়রানি করেছেন। সরকারের পৃষ্ঠপোষক দুর্নীতিবাজদের বাদ দিয়ে চুনোপুঁটি ধরতে ব্যস্ত থেকেছেন। যার অন্যতম উদাহরণ হলো, আলোচিত কানও একটি অভিযোগের বিরুদ্ধে আপনার পক্ষ থেকে স্বতঃপ্রণোদিত কোনও কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। যেমন-পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ইস্যুতে পদক্ষেপ গ্রহণে গড়িমসি করেছেন। এস আলম গ্রুপের দুর্নীতি বিষয়ে রহস্যজনক আচরণ, লোটাস কামাল ইস্যু ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীরর দুর্নীতি ইস্যুতেও স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো উদ্যোগ নেননি। এরকম অনেক দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত ও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আপনার ভূমিকা প্রশ্ববিদ্ধ।

অপরদিকে, সারা বিশ্বে সম্মানিত ব্যাক্তিত্ব ও আমাদের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানের বিপ্লবী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে একজন সম্মানীয় ব্যাক্তিকে চরম মাত্রায় হয়রানি করাকে আমার মক্কেল একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্বে অবহেলা ও আপনার পদ ও পজিশনের অপব্যবহার বলে মনে করেন। আজ থেকে ১১ মাস আগে আপনি একটি প্রেসকনফারেন্স করে, গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বলেছিলেন, ড. ইউনূসের পক্ষে আপনি কোনও বিবৃতি শুনতে চান না। অথচ গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে তখন বিবৃতি দিয়েছিলেন বিশ্বের আলোচিত সনামধন্যআন্তর্জাতিক ব্যক্তিরা।

তাই আমার মক্কেল রাষ্ট্রের একজন সচেতন সাধারণ নাগরিক ও সাম্প্রতিক ফ্যাসিস্ট, স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও অনন্য বিপ্লবের সরাসরি অংশগ্রহণকারী সৈনিক হিসেবে আপনার দায়িত্বে মারাত্মক অবহেলার জন্য আপনার পদত্যাগ দাবি করছেন এবং প্রেস কনফারেন্স করে গণঅভ্যুথানের বিপ্লবী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন। অন্যথায়, আপনার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা যথাপোযুক্ত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে করতে বাধ্য হবে-মর্মে হুঁশিয়ারি দেয়া হয় ওই নোটিশে।

সর্বশেষ আপডেট: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০৯
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও