এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের খুঁটির জোর কোথায়? পর্দার আড়াল থেকে তাকে কি বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে? সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এবং এনবিআর সদস্য পদ থেকে দুর্নীতির এই রাজপুত্রকে অব্যাহতি দেয়া হলেও তাকে গ্রেফতার করা হয়নি এবং তিনি কোথায় সে ব্যাপারে কোনো সঠিক তথ্য দেশবাসী জানতে পারছে না। ইতোমধ্যেই তাকে এবং তার স্ত্রী-পুত্রের বিদেশ সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি কি দেশ থেকে হাওয়া হয়ে গেলেন? নাকি তিনি আইন শৃংখলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিদেশ পালিয়েছেন? এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউল আলম তার একটি বইয়ে প্রশাসনে মতিউর রহমানের শক্ত খুঁটির চিত্র বয়ান করেছেন। তাহলে কি ১৯৮২ সালের যুব প্রতিমন্ত্রী আবুল কাশেমের গাজীপুরের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ইমদাদুল হক ইমদুর শেল্টার দেয়ার মতো মতিউর রহমানকে কেউ আশ্রয় দিয়েছেন? দেশের চৌকস আইন শৃংখলা বাহিনী যেখানে কারণে অকারণে বিরোধী দলের লোকজনকে পাকড়াও করেন; সেখানে এক সাপ্তাহেও মতিউরের অবস্থান বুঝতে পারছেন না? হাজার মিলিয়ন ডলারের এসব প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করেছেন নেটিজেনরা।
দেশে জনগণের ভোটের অধিকার পুন:প্রতিষ্ঠায় যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্যর্থতার কারণে গণমাধ্যমগুলো বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে চলে গেছে। যদিও এখনো তথ্য প্রকাশ এবং ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ব্লগ, টুইটার খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। সেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছেন এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের নাম। ১৯৮২ সালের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ইমদাদুল হক ইমদুর গ্রেফতারের কথা মনে আছে? বিচারপতি আবদুস সাত্তার তখন প্রেসিডেন্ট। কালিগঞ্জের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ইমদুকে যখন আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা হন্যে হয়ে খুঁজছেন তখন গ্রেফতার এড়াতে যুব প্রতিমন্ত্রী আবুল কাশেম বাসায় তাকে আশ্রয় দেন। ৮ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করে প্রতিমন্ত্রীর মিন্টো রোডের বাসা ঘেড়াও করে আইন শৃংখলা বাহিনী ইমদুকে পাকড়াও করেন। দেশ-বিদেশে হৈচৈ পড়ে যায়। ১১ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে প্রেসিডেন্ট আবদুস সাত্তার মন্ত্রিসভা ভেঙ্গে দিতে বাধ্য হন। এ ঘটনার দেড় মাসের মাথায় ২৪ মার্চ ক্ষমতা দখল করেন এইচ এম এরশাদ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তা দুর্নীতির কুখ্যাত রাজা মতিউর রহমানকে কয়েকদিন থেকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার প্রথম স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লাইলা কানিজ কোথায় আছেন কেউ জানেনা। তাদের বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে একটি আদালত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নেটিজেনরা বলছেন, মতিউর রহমানকে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে নয়তো লুকিয়ে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ লিখেছেন মতিউর রহমান স্থল পথে বিদেশে পালিয়েছেন। আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ভারত চলে গেছেন। কিন্তু আখাউড়া ইমিগ্রেশন পরিদর্শক খায়রুল আলম ইনকিলাবকে জানান, আখাউড়া দিয়ে মতিউরের পালিয়ে যাওয়ার খবর সঠিক নয়। তিনি দেশেই রয়েছেন।
সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের চাকরির সময় প্রশাসনে তার শক্তখুঁটি ছিল এবং প্রশাসনের হোমড়াচোমড়াদের প্রশ্রয় পেয়েছিলেন। খবরে বের হয়েছে মতিউর রহমানকে চাকরিতে প্রমোশনে দেয়া এবং প্রশ্রয় দেওয়া তিন প্রভাবশালীর ব্যক্তিরা এখনো প্রশাসনে ক্ষমতাবান। তাদের মধ্যে এক জন সচিব। তিনি জন প্রশাসন ক্যাডারের অত্যন্ত প্রভাবশালী কর্মকর্তা। আরেক জন বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম শীর্ষ পদে আছেন। তার বদৌলতেই মতিউর সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হয়েছিলেন। অন্য প্রভাবশালী হলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে স্টক এক্সচেঞ্জে এসেছেন। তার কাছ থেকেই বিশেষ সুবিধা পেয়ে মতিউর ও তার ছেলে-স্ত্রী প্লেসমেন্ট শেয়ারের কারসাজি করে হাজার হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন।
দুর্নীতির বরপুত্র মতিউর রহমানের প্রভাবের চিত্র তুলে ধরেছেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউল আলম। স্পষ্টভাষি হিসেবে পরিচিত সাবেক সচিব বদিউল আলম তার লেখা বাইয়ে ‘মতিউরের বদলি বাতিলের তদবির কেন এবং কীভাবে ঠেকালাম’ শীর্ষক প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘এনবিআরের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে রুটিনমাফিক কর্মকর্তাদের বদলির সিদ্ধান্ত নিই। সে সময় মতিউর রহমান ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দরে যুগ্ম কমিশনার। তাঁকে যেদিন রাজশাহীতে বদলির সিদ্ধান্ত হয় সেদিনই বোর্ডের ৪ জন সদস্য দ্বিমত পোষণ করে বলেন, ‘আপনি মতিউরকে বদলি করলেও রাখতে পারবেন না।’ কিন্তু আমি সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। এরপর সামরিক ও বেসামরিক মহল থেকে তার জন্য তদবির আসতে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লিখিত চিঠিতে জানায়, তাদের ছাড়পত্র ছাড়া মতিউর রহমানকে বদলি করা যাবে না। এরপর চট্টগ্রামে কর্মরত সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান নাসির বদলির আদেশ বাতিলের অনুরোধ করেন। তৎকালীন সিজিএস মেজর জেনারেল সিনাহ ইবনে জামালীও তার পক্ষে ওকালতি করেন। এমনকি তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন উ আহমদ টেলিফোন করে মতিউরের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন।’ মতিউর রহমানের প্রভাব নিয়ে সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান বদিউর রহমান লিখেছেন, ‘তিনি (মতিউর) অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া সাহেবের বেড রুম পর্যন্ত যেতে পেরেছেন। সাইফুর রহমানের বেড রুমেও যেতে পারতেন।’
এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউরের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মুলাদী। প্রথম স্ত্রীর বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীতে। মো. মতিউর রহমান এখন কোথায় আছেন সে বিষয়ে তার স্বজন ও সহকর্মীরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না। বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিচ্ছে না আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোও। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছেও তার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে দুদক জানতে পেরেছে, মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশ ত্যাগ করার চেষ্টা করছেন। মতিউর কোথায় নিশ্চিতভাবে কিছু জানাতে পারেননি। দুর্নীতির রাজা এনবিআরের মতিউর রহমান দুটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর নাম লাইলা কানিজ। যিনি বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। আগে ঢাকার মহাখালির তিতুমীর কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর আর্শিবাদে সরকারি কলেজে চাকরি ছেড়ে দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন। তাদের ছেলের নাম আহাম্মেদ তৌফিকুর রহমান ও মেয়ের নাম ফারজানা রহমান। অন্যদিকে দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম শাম্মি আখতার শিভলি (শিবু) ও ছেলের নাম মুশফিকুর রহমান (ইফাত)। এই শিবু ফেনি-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারির মামাতো বোন। এই ইফাতের ছাগল কা-ে হঠাৎ বিপদে পড়েছেন।
মতিউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনে (পিকেএসএফ) কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত কাজ করেন সেখানে। অতপর বিসিএসে চাকরি পেয়ে ১৯৯৩ সালের ১ এপ্রিল যোগ দেন কাস্টমস বিভাগে। ২০১৫ সালে পদোন্নতি পেয়ে কমিশনার হন তিনি। ২০২১ সালের ১২ আগস্ট তাকে কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে সদস্য (টেকনিক্যাল) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মতিউর রহমান তার দুই স্ত্রী ছেলেমেয়েদের নামে যে সম্পদের সন্ধান দুর্নীতি দমন কমিশন পেয়েছে তাতে সবার চোখ চরকগাছ। সরকারি চাকরি করে একজন মানুষ এতো সম্পত্তির মালিক হয় কিভাবে?
বাংলাদেশের প্রশাসনের ভিতরে দুর্নীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েলথ-এক্স একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ২০১৮ সালে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, অতি ধনীর সংখ্যা বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশের অবস্থান এখন বিশ্বের শীর্ষে। চীনকে হারিয়ে গত পাঁচ বছরে এই অবস্থানটি দখল করেছে বাংলাদেশ। ওয়েলথ এক্স ‘ওয়ার্ল্ড আলট্রা ওয়েলথ রিপোর্ট-২০১৮’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধনকুবেরের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান তাদের প্রতিবেদনে না থাকলেও ধনকুবের বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এখন শতকরা ১৭ দশমিক ৩ ভাগ হারে অতি ধনীর সংখ্যা বাড়ছে। আর এই হার বিশ্বে সর্বোচ্ছ। বাংলাদেশের পরই চীনের অবস্থান। চীনে অতি ধনী বাড়ছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ হারে। এরপর যথাক্রমে আছে ভিয়েতনাম, কেনিয়া, ভারত, হংকং এবং আয়ারল্যান্ড। ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ধনকুবের বাড়ার হার পর্যবেক্ষণ করে বাংলাদেশের শীর্ষ অবস্থান নির্নয় করা হয়।
সাবেক সেনাপ্রধান আবদুল আজিজকে দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। পুলিশের ঢাকার সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া অবৈধভাবে ক্রয় করা শত শত কোটি টাকার সম্পদের অনুসন্ধান পেয়েছে দুদক। শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের খবর প্রকাশের পর আসাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বরং তিনি দেশে নাকি বিদেশে তার সঠিক তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না। আর দুর্নীতির এতো ভয়াবহ চিত্র প্রকাশের পর বেনজির আহমেদ ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা উঠিয়ে নিয়ে নির্বিঘেœ বিদেশে চলে গেছেন। তাকে এবং তার স্ত্রী-কন্যাদের দুর্নীতি দমন কমিশনে তলব করে এবং হাজির না হওয়ায় পরে নতুন করে হাজিরার তারিখ নির্ধারখ করে। কিন্তু তিনি তার পরিবার দুদককে পাত্তাই দেননি। গত ২৪ জুন দুদক কর্মকর্তারা দিনভর বেনজিরের স্ত্রী ও কন্যার জন্য অফিসে অপেক্ষা করেছেন। কিন্তু তারা আসেননি। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান দুদককে তারা থোরাইকেয়ার করেন। বিদেশী গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে প্রশাসনের কর্মতর কর্মকর্তাদের বেশির ভাগের ছেলেমেয়েরা বিপুল অর্থ ব্যায়ে বিদেশে পড়াশোনা করেন। তারা এতো টাকা কোথায় পান?
২৫ জুন দৈনিক ইনকিলাবে ‘দুর্নীতিবাজরাই প্রমোশনে এগিয়ে’ শীর্ষক লিড নিউজ প্রকাশ হয়। পঞ্চায়েত হাবিবের ওই প্রতিবেদনে প্রশাসনের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রশাসনে কর্মরত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ তদন্ত হয় কিন্তু শাস্তি হয় না বরং যে যত বড় দুর্নীতিবাজ সে ততবেশি দ্রুত প্রমোশন পেয়ে থাকেন। চিত্রটা সত্যিই ভয়াবহ। অনুসন্ধান করে দেখা গেছে গ্রামের স্কুলের পিওন. দাড়োয়ান, মালির চাকরি নিতে গেলে ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। অন্যান্য চাকরির পেতে কি পরিমাণ ঘুষ দিতে হয় এতেই তা অনুমেয়। আবার একটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করে দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে দেয়া হয়। এতে প্রকল্প পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট আমলারা কি পরিমাণ অর্থ আয় করেন? আর রাজস্ব কর্মকর্তাদের বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। ড. ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের সময় কাষ্টমস কর্মর্তাদের বাসায় পুলিশের অভিযান চালিয়ে টাকার কয়েকটি করে বস্তা উদ্ধারের চিত্র মানুষ দেখেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নেটিজেনদের অনেকেই মন্তব্য করেছেন যে, অন্যদের ধরতে সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো রেড অ্যালার্ট জারী করে। বিমানবন্দর, ও সীমান্ত এলাকাগুলোতে কঠোর নির্দেশনা দেয়। এমনকি সামান্য কারণে বিরোধী দলের নেতাদের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার সময় বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠায়। অথচ প্রশাসনের হোমড়াচোমরা বেনজিরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর পর তিনি বিদেশ চলে গেছে প্রশাসন নীরব ছিল। আসাদুজ্জামান মিয়া কোথায় তা জানানো হচ্ছে না। এমনকি আসাদুজ্জামান মিয়ার দুর্নীতির তথ্য দেয়ায় পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখান্ত করা হয়েছে। মতিউর রহমান কোথায় আছে তা অনুসন্ধান করতে পারছে না; অথচ বিরোধী পক্ষ্যে কোনো নেতা হোটেলে কর্মীদের সঙ্গে কথা বললে নাশকতার ষড়যন্ত্র অভিযোগ তুলে গ্রেফতার করছে। নেটিজেনদের একজন লিখেছেন, ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০১৮ সালের রাতের নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতায় আনায় ভুমিকার কারণে প্রশাসনে কর্মরত আমলারা অনেকেই বৈধ-অবৈধ সুযোগ সুবিধার মাধ্যমে বিল গেটস, ইলন মাস্ক, মুকেশ আম্বানি, গৌতম আদানি, রতন টাটার মতো সম্পদশালী হয়ে গেছেন। তারা কোনো ভাবেই চাইবেন না সাবেক এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। পুলিশের সাবেক দুই কর্মকর্তার দুর্নীতির চিত্র গণমাধ্যমে তুলে ধরায় পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন থেকে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে সেটা তারই উদাহরণ।
সর্বশেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ০২:০৮
পাঠকের মন্তব্য