মারা গেছেন দেশের আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান ভ‚ঁইয়া। গতকাল সোমবার ভোরে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে তিনি মারা যান। এর আগে গত রোববার রাতে তিনি সাভারেরএকটি ভাড়া বাসায় বুকে ব্যথা অনুভব করেন। পাশে কোন স্বজন না থাকায় বাড়িওয়ালা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তার মৃত্যু হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা মামলার মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত ৬ আসামিসহ ৬০ জনের ফাঁসি কার্যকর করে আলোচিত হন। শাহজাহান ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৬ জনের ফাঁসি দিয়েছেন। এরমধ্যে ছয়জন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত আসামি, চারজন যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি নেতা বাংলাভাইসহ দুজন জেএমবি সদস্য এবং আরও ১৪ জন অন্যান্য আলোচিত মামলার আসামির ফাঁসি কার্যকর করেছেন তিনি।
শাহজাহানের নামে মোট ৩৬টি মামলা ছিলো। এরমধ্যে একটি অস্ত্র মামলা, একটি ডাকাতি মামলা এবং বাকি ৩৪টি হত্যা মামলা। এ মামলায় তিনি ১৯৯১ সালে গ্রেফতার হন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত হাজতি হিসেবে কারাগারে ছিলেন। ১৯৯৫ সালে তার ১৪৩ বছরের সাজা হয়। পরে ৮৭ বছরের সাজা মাফ করে তাকে ৫৬ বছরের কারাদÐ দেওয়া হয়। ফাঁসি কার্যকর ও সশ্রম কারাদÐের সুবিধার কারণে সেই সাজা ৪৩ বছরে এসে নামে।
জানা যায়, সাজার মেয়াদ কমানোর বাসনায় কয়েদি থেকে জল্লাদ বনে যান শাহজাহান। একের পর এক অপরাধীর মৃত্যুদÐ কার্যকর করে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন চার দেওয়ালের বন্দিজীবন থেকে মুক্তি পেতে। জল্লাদ হিসেবে সময় দিলে তার সাজা কিছুদিনের জন্যে হলেও কমবে। এ জন্য জল্লাদের খাতায় নাম লেখান।
গফরগাঁওয়ের নূরুল ইসলামকে ফাঁসি দিয়ে তার জল্লাদ জীবনের সূচনা করেন। আট বছর পর কারা কর্তৃপক্ষ তাকে প্রধান জল্লাদের স্বীকৃতি দেয়। ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানকে প্রথম ফাঁসি দেন শাহজাহান। কারাগারে যারা জল্লাদ হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে, কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শাহজাহান তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
৩২ বছর পর অবশেষে বছর খানেক আগে মুক্ত আকাশের নিচে শ্বাস ফেলার সুযোগ পান জল্লাদ শাহজাহান। মুবÍ হয়ে এক তরুণিকে বিয়ে করেন। প্রতারণার অভিযোগে তিনি ওই স্ত্রীর বিরুদ্ধেও মামলা করেন। কেরানিগঞ্জে চা দোকান ছেড়ে সাভারের হেমায়েতপুরে ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন।
সর্বশেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ০২:১৫
পাঠকের মন্তব্য