দেশের বেশিরভাগ এলাকায় গা-জ¦লা ভ্যাপসা গরমের মধ্য দিয়ে এবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। আষাঢ় মাসে এসেও ঈদের আগে-পরের দিনে-রাতেও ছিল গরমের যাতনা। সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগ ছাড়া এ সময়ে দেশের অন্য বিভাগসমূহে তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, অবশেষে বর্ষার বাহক দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় হয়ে উঠেছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু মাঝারি থেকে জোরালো অবস্থায় রয়েছে। সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গতকাল বুধবার দেশের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত, কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটে ১৬৭ মিলিমিটার। এ সময়ে সিলেট, রংপুর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগে হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে স্বল্প ও বিক্ষিপ্ত কিছু জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার প্রায় সারা দেশে বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩০.২ এবং সর্বনিম্ন ২৮.৫ ডিগ্রি সে.।
এদিকে আবহাওয়া বিভাগ জানায়, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
কাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। রংপুর, ময়মনসিংহ, ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। এর পরের ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসের সতর্কতা : সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
সর্বশেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৪, ০২:০৪
পাঠকের মন্তব্য