ভারী বর্ষণে কারণে সিলেটে অনেকে দিতে পারেননি পশু কোরবানি

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্সঃ

সিলেটে ভারী বর্ষণের কারণে বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এখনো অনেকে পশু কোরবানি দিতে পারেননি। সোমবার (১৭ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর ১০, ২২, ২৪ ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের অনেক এলাকায় অনেকে পশু জবাই করতে পারেননি। তবে বিকেলে কিছু কিছু এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ায় অনেকে পশু জবাই শুরু করেছেন।

সোমবার (১৭ জুন) রাত পৌনে ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নগরীর উপশহর, তেররতন, সাদাটিকর ও দক্ষিণ সুরমার কয়েকটি এলাকায় কোরবানির পশু জবাই করার কাজ চলছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর উপশহর, তেররতন, সাদাটিকর, ছড়ার পাড়, পাঁচঘর, ঘাসিটুলা, বেতেরবাজার ও দক্ষিণ সুরমার কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে থাকায় মানুষজন কোরবানির পশু জবাই করতে পারেননি। কিছু কিছু এলাকায় পানি কমতে থাকায় সোমবার দুপুরে কোরবানি দিয়েছেন। কেউ কেউ বিকেল থেকে শুরু করেন পশু জবাই। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উপশহর এলাকায় সন্ধ্যার পরও কেউ কেউ পশু কোরবানি দিতে শুরু করেছেন। তবে, অনেক এলাকা এখনো পানিতে ডুবে থাকায় মঙ্গল বা বুধবার কোরবানি দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রোববার (১৬ জুন) দিনগত মধ্যরাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ভারী বর্ষণে তলিয়ে যায় নগরীর বেশিরভাগ এলাকা। সোমবার সকালে ঈদের নামাজের আগে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলো ডুবেছিল হাঁটু থেকে কোমরসমান পানিতে। এতে ঈদের নামাজে যাওয়া থেকে শুরু করে কোরবানির পশু জবাই করা নিয়েও বিপাকে পড়েন নগরবাসী।

ভারী বর্ষণে নগরীর উপশহর, তালতলা, শেখঘাট, পায়রা, ঘাসিটুলা, দরগামহল্লা, পায়রা, জামতলা সুবিদবাজার, বনকলাপাড়া, চৌহাট্টা, কাজলশাহ, মেডিকেল রোড, বাগবাড়ি, কালীবাড়ি, হাওলাদারপাড়া, সোবহানীঘাট, যতরপুর, তেরোরতন, সোনারপাড়া, কেওয়াপাড়া, সাগরদিঘিরপাড়, পাঠানটুলা, মিয়া ফাজিলচিশত, জালালাবাদ, হাউজিং এস্টেট, শাহী ঈদগাহ, শিবগঞ্জ ও মাছিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এসব এলাকার রাস্তাঘাট কোথাও হাঁটু পর্যন্ত, কোথাও কোমর পর্যন্ত ডুবে ছিল। এতে ঈদের নামাজের পরপরই কোরবানির পশু জবাই করতে পারেননি অনেকে। তবে কিছু কিছু এলাকায় পানি কমে যাওয়ায় দুপুরের দিকে কোরবানির পশু জবাই করা হয়। অনেককে বিকেলেও কোরবানি দিতে দেখা গেছে।

সারাদিন অপেক্ষার পর বিকেলে পশু জবাই করতে পেরেছেন নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান রুমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাসা উঁচু এলাকায়। উপশহরের অনেক বাসা নিচু এলাকায়। তারা আজ রাতেও পশু জবাই করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজলে রাব্বী চৌধুরী বলেন, ‘মানুষের বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অনেকেই আজ কোরবানি দিতে পারেননি। বিকেলে পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় অনেকে পশু কোরবানি দিতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ সন্ধ্যার পর কোরবানি দিচ্ছেন। আবার অনেকের বাসাবাড়ি থেকে পানি নামা শুরু না হওয়ায় মঙ্গল বা পরদিন কোরবানি দেওয়ার চিন্তা করছেন।

তিনি বলেন, ‘উপশহর এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ, বি, সি ও ডি ব্লক। এ চার ব্লকে রোববার মধ্যরাতে পানিতে তলিয়ে যায়। আজ সকালেও হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি ছিল।’

কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘উপশহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ এই চার ব্লকে থাকেন। যে কারণে এই চার ব্লকের বেশিরভাগ মানুষেই পশু কোরবানি দিতে পারেননি।’

২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ন কবীর সুহিন বলেন, ‘সকালে বাসাবাড়ি ও সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কোরবানি দিতে দেরি হয়েছে। যারা একাধিক পশু কোরবানি দিতে চেয়েছিলেন তারা একটি করে দিয়েছেন। অনেকে আগামীকাল বা পরশু কোরবানি দেবেন।’

সিসিকের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন বলেন, এই ওয়ার্ডের কয়েকটি এলাকা এখনো পানিতে নিমজ্জিত। সকালে পানি থাকায় অনেকে বেশ কষ্ট করে কোরবানির পশু জবাই করেছেন।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে যারা এখনো পশু কোরবানি দিতে পারেননি, তাদের সুবিধার্থে বর্জ্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আরও দুদিন চলমান থাকবে। সিসিকের প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন। নগরবাসীর সুবিধার্থে তারা সবসময় কাজ করে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৪, ০১:৩৮
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও