ডাচদের হারিয়ে সুপার এইটের পথে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্সঃ

মুস্তাফিজ-তাসকিন-তানজিদদের নিয়ে গড়া বাংলাদেশের বোলিং লাইনে আপের বিপক্ষে ১৬০ রানের লক্ষ্য এমনিতেই কঠিন ছিল। তবে  ইনিংসের বেশির ভাগ সময় কঠিন কাজটা ভালোভাবেই করে  গেছে নেদারল্যান্ডস।ক্ষণিকের জন্য ছিল ফেভারিটও।

বিক্রমাজিৎ-এঙ্গেলব্রেখটের-এডওয়ার্ডসের ব্যাটে একপর্যায়ে সাত উইকেট হাতে রেখে ৪২ বলে মাত্র ৬০ রান প্রয়োজন ছিল নেদারল্যান্ডসের।তবে তরুণ লেগ স্পিনার রিশাদের অসাধারণ  এক ওভারে পাল্টে যায় ম্যাচের চিত্র।ইনিংসের পনেরতম  ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন রিশাদ।সেই জোড়া ধাক্কা সামলে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি নেদারল্যান্ডস নিজের শেষ ওভারেও পেয়েছেন উইকেটের দেখা পেয়েছেন এই প্রতিভাবান লেগ স্পিনার ।

তার বোলিং নৈপুণ্যে ‘ডি’ গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে নেদারল্যান্ডসকে ২৫ রানে হারিয়ে সুপারএইটের এর পথে অনেকখানি এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। টাইগারদের দেওয়া ১৬০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৩৪ রানেই থেমে যায় ডাচদের ইনিংস।

এ জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের দ্বিতীয় স্থান প্রায় নিশ্চিত বাংলাদেশের।তিন ম্যাচে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা।৩ ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট নিয়ে বিদায় নিশ্চিত শ্রীলঙ্কার।

আগে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি।ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিছুতেই যেন ছন্দ খুঁজে পাচ্ছেন না টাইগার ক্যাপ্টেন নাজমুল হাসান শান্ত।আগের দুই ম্যাচে পেসারদের বলে শট করতে করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন।নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও ক্যাচ দিলেন।তবে এবার স্পিনারের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে।দলীয় ৩ রানের মাথায় ডাচ একাদশে ঢুকা আয়রন দত্তের প্রথম শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে মাত্র ১ করেন শান্ত।বিশ্বকাপে তিন ম্যাচে তার সংগ্রহ ৭,১৪,১।পরের ওভারে ব্যক্তিগত  ১ রানে লিটনকে ফেরান এই ডাচ স্পিনার।সেন্ট ভিনসেন্টের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ২৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।এর ভেতর।লোগান ভিকের করা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে ৪ চারে নিয়েছেন ১৯ রান।অন্য প্রান্তে রিশাদও ছিলেন আগ্রাসী।

ফলে দ্রুত রান তুলতে থাকে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ও সপ্তম এই দুই ওভারে আসে ৩১ রান। তবে এরপর কমে যায় রানের গতি।টিম প্রিঙ্গল সপ্তম ওভারে দিয়েছেন কেবল ৪ রান।পল ফন মিকেরেনকে পরের ওভারে ফেরান তানজিদকে।২৬ বলে ৩৫ রান করেন এই বাহাতি ওপেনার। ভাঙে ৩২ বলে ৪৮ রানের জুটি।ক্রিজে থিতু হয়ে উইকেট দিয়ে আসেন তাওহীদ হৃদয়ও(১৫ বলে ৯ রান)।৮৯ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে এরপর টেনে নিয়ে যান সাকিব মাহমুদুল্লাহ। দুজনে মিলে ৩২ বলে যোগ করেন ৪১ রান। ২১ বলে ২৫ রান করে মাহমুদুল্লাহ ফিরলেও ৩৮ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন ফিফটি। ২০ ইনিংস পর টি-টোয়েন্টিতে ফিফটির দেখা পেয়েছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার। জাকের আলী নিয়ে ষষ্ট উইকেটে যোগ করেন ১৫ বলে ২৯ রান।

১৯তম ওভারে জাকের আলী মেরেছেন ৩ চার। সে ওভারে আসে ১৪ রান। ২০তম ওভারে সাকিব তুলেছেন ১২ রান।আর তাতে  বাংলাদেশ গেছে ১৫৯ রান পর্যন্ত। ৪৬ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন সাকিব, জাকের ৭ বলে করেন ১৪ রান।

লড়াকু সংগ্রহের পর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে জয়ের পথেই ছিল বাংলাদেশ। ১৬০ রানে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তাসকিন-তানজিদ বোলিং তোপে পাওয়ার প্লেতে দুই ওপেনারকে হারিয়ে নেদারল্যান্ড তুলতে পেরেছে কেবল ৩৬ রান।তখন ডাচদের জয়ের জন্য ৮৪ বলে প্রয়োজনীয় ১২৪ রান তখন বাংলাদেশের বোলিং লাইনের বিপক্ষে বেশ কঠিনই মনে হচ্ছিল।

তবে চতুর্থ নম্বরে নামা বিক্রমজিৎকে আগ্রাসী  ব্যাটিংয়ে দলকে ম্যাচে ফেরান। সপ্তম ওভারে সাকিবের টানা দুই বলে ছক্কা মেরে দলকে ম্যাচে ফেরান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।মুস্তাফিজের করা পরের ৪ রান এলেও রিশাদের করা পরের ওভারে ছয় চারে ফের ১৪ রান নিয়ে চাপ বাড়ান টাইগারদের উপর।তবে ১০ম ওভারে বোলিংয়ে এসে বিপদজনক হয়ে ওঠা বিক্রমজীৎকে ফেরান মাহামুদুল্লাহ।তার ব্যাট থেকে ১৬ বলে আসে ২৬ রান। এঙ্গেলব্রেখটের-বিক্রমজিৎ জুটি ২৩ বলে যোগ করেন ৩৭ রান।

পরে সাইব্রান্ড এঙ্গেলব্রেশটকে নিয়ে এগোতে থাকেন স্কট এডওয়ার্ডস। ১৩ ওভারে ৯৯ রান করে ফেলে নেদারল্যান্ডস। পরের ওভারে মাত্র ৫ রান দেন সাকিব।৩৬ বলের তখন ডাচদের। এরপরই রিশাদের সেই ওভার।প্রথমে ২২ বলে ৩৩ রান করা এঙ্গেলব্রেশটকে ফিরিয়ে ভাঙেন ৪২ রানের জুটি।এরপর বাস ডি লিডেক ফিরিয়ে ম্যাচের লাগাম টানেন রিশাদ।

এরপর ধীরে ধীরে চাপ বাড়িয়ে বাংলাদেশকে ২৫ রানের সহজ জয় এনে দেন মুস্তাফিজ-তাসকিনরা

সর্বশেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪, ০১:৪৭
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও