হজরত শাহজালালের (র.) ৭০৫তম ওরস শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার (৯ জুন)। দুই দিনব্যাপী ওরসকে ঘিরে দরগাহ এলাকায় নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। দলবেঁধে আসা দেশ-বিদেশের ভক্তদের হাতে রয়েছে বাহারি গিলাফ। আর মুখে মুখে উচ্চারণ ‘লালে লাল– বাবা শাহজালাল’!
শান্তিপূর্ণভাবে ওরস সম্পন্ন করতে প্রশাসন এবং মাজার কর্তৃপক্ষ নিয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। ওরসের সার্বিক নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। দরগাহ এলাকায় বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা এবং মাজারের প্রত্যেকটি প্রবেশ দ্বারে বাড়ানো হয়েছে বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা। পুলিশ ও মাজার-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, প্রতি বছরের ন্যায় হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজারের বার্ষিক ৭০৫তম ওরস মোবারক উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৩টি গরু হস্তান্তর করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। সিসিক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে সফরে থাকায় ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো: মখলিছুর রহমান কামরান এ উপহার হস্তান্তর করেন। গত রবিবার (২৬ মে) বিকাল সাড়ে ৫টায় মাজারের মতওয়াল্লী সরেকওম ফতেউল্লাহ আল আমানের কাছে এ ৩টি গরু হস্তান্তর করেন তিনি। এসময় সিসিক ভারপ্রাপ্ত মেয়র মখলিছুর রহমান কামরান বলেন— ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে প্রতি বছর ওরসের সময় মাজারে আগত ভক্তদের খাবারের জন্য গরু উপহার হিসেবে দেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ৩টি গরু হস্তান্তর করেছে সিটি কর্পোরেশন।’ তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিলেটের মানুষের আবেগ—অনুভূতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত। তাই সিলেটের বিশেষ বিশেষ দিনে তিনি উপহার সামগ্রী পাঠিয়ে থাকেন। যুক্তরাজ্য থেকে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সার্বক্ষনিক খবর রাখছেন এবং ওরসে আগত ভক্তদের কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
জানা যায়, প্রতিবছর আরবি মাসের ১৯ ও ২০ জিলকদ দুই দিনব্যাপী হজরত শাহজালালের (র.) ওরস অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত থেকে পশু জবাই করার মধ্য দিয়ে ওরসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ঐতিহাসিক গিলাফ ছড়ানোর মাধ্যমে ওরস কার্যক্রমের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে শাহজালাল (রহ.) দরগাহ কর্তৃপক্ষ। কাল (বুধবার) ভোররাতে অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত, এরপর শিরনি বিতরণের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়ে দুইদিন ব্যাপী এই ওরসের কার্যক্রম। ওরস উপলক্ষে ভক্ত-আশেকানরা শতাধিক গরু ও খাসি এসেছেন নজরানা হিসাবে। সারাদেশ থেকে আসা ভক্ত-আশেকানদের মধ্যে শিরনি বিতরণের জন্য পশুগুলো জবাই করা হয়। এই সময়ে ভক্তরা জিকির ও এবাদত বন্দেগির মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করবেন।
উল্লেখ্য, ইসলাম প্রচারের জন্য হযরত শাহজালাল (রহ.) ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে ৩৬০ সফরসঙ্গী নিয়ে সিলেট আসেন। ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জিলকদ ইন্তেকাল করেন তিনি । সিলেটে যে টিলায় বসবাস করতেন, সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। তার কবরকে ঘিরেই পরে গড়ে উঠেছে এ মহান ইসলাম প্রচারকরে মাজার।
সর্বশেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২৪, ১৯:৩১
পাঠকের মন্তব্য