মৌলভীবাজার সূর্যপাশায় ২ লাখ টাকা ছিনতাই !

সূর্যপাশা পাঞ্জেগানা মসজিদের ইমামকে টাকা দিতে যাবার পথে ২ লাখ টাকা ছিনতাই হবার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত ৩ এপ্রিল বুধবার রাত ১২টার দিকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আমতৈল ইউনিয়নস্থিত সূর্যপাশা গ্রামের ছয়ফুর মিয়ার চায়ের দোকানে স্থানীয় আব্দুল হান্নানের পুত্র রুমান আহমদের কাছ থেকে একই গ্রামের মৃতঃ আব্দুল মালিকের ৩ পুত্রসহ ৫ জন অতর্কিত হামলা চালিয়ে এ টাকা ছিনতাই করেছে বলে ভূক্তভোগীর অভিযোগ।

মৌলভীবাজার মডেল থানায় দায়েরী অভিযোগ ও ভূক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে— দীর্ঘ ২ বছর পূর্বে মৃতঃ আব্দুল মালিকের বড়পুত্র মাহমুদ মিয়া ধানের মৌসুমে ৭০ মন ধান দেয়ার অঙ্গীকারে আব্দুল হান্নানের পুত্র রুমান আহমদের কাছ থেকে ঋণ হিসাবে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু, ধানের মৌসুমে ধান না দেয়ায় রুমান আহমদ তলব—তাগাদা দিতে থাকলে মাহমুদ মিয়া দিমু—দিচ্ছি করে করে ১ বছরেও ধান দিতে ব্যর্থ হন। এর প্রেক্ষিতে রুমান আহমদ টাকা ফেরৎ চাইলে উভয়ের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এ টাকা নিয়ে স্থানীয়ভাবে ২ বার এবং ইউপি কার্যালয়ে ১ বার সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি সালিশে মাহমুদ মিয়া টাকা ফেরৎ দেয়ার তারিখ ঘোষণা করলেও, ঘোষিত তারিখে টাকা দেননা।

ছবি মুক্তিবাণী

সর্বশেষ সালিশের বেশ কিছুদিন পর ইউপি মেম্বারের তৎপড়তায় ১০ হাজার টাকা ফেরৎ দিলেও, বাকী টাকা ফেরৎ দেননি এখনও। এভাবে সবমিলিয়ে ২ বছর অতিক্রান্ত হলেও মাহমুদ মিয়া টাকা ফেরৎ না দেয়ায়, মৌখিকভাবে  সালিশকারীরা রুমান আহমদকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন। এমতাবস্থায়, ৩ এপ্রিল বুধবার তারাবীর নামাজ শেষে মাহমুদ মিয়ার ছোট ২ ভাই মোজাহিদ মিয়া ও আব্দুল মোহিতের সাথে রুমান আহমদের পিতা আব্দুল হান্নানের দেখা হয়। এসময় আব্দুল হান্নান তাদেরকে বলেন— দীর্ঘ ২ বছরেও মাহমুদ আমার ছেলের টাকাগুলি ফেরৎ দিলোনা। তোমরা তো তার আপন ভাই। তোমরা চাপ দিলে মাহমুদ হয়তো টাকাগুলি ফেরৎ দিয়ে দিতে পারে। আমি মামলা—মোকদ্দমায় যেতে চাইনা বলেই তোমাদের সাহায্য চাইলাম।  এরপর তিনি নিজ বাড়ীতে ফিরে যান। এর বেশ কিছুক্ষণ পর রাত ১১টার দিকে তার দূরসম্পর্কে নাতি হেলু মিয়া একই গ্রামের পাঞ্জেগানা হালিমা মসজিদের ইমামকে দেয়ার জন্য ২ লাখ টাকা রুমান আহমদকে দিয়ে পাঠান। সাড়ে ১১টার দিকে রুমান আহমদ সেখানে পৌছে ইমামকে না পেয়ে, ফোনেও যোগাযোগ করতে না পেরে ছয়ফুর মিয়ার চায়ের দোকানে চা পান করে ইমামের সাথে যোগাযোগের অপেক্ষা করছিলেন।

এর ২০/২৫ মিনিটের মধ্যে মাহমুদ মিয়া, মোজাহিদ মিয়া, আব্দুল মোহিত ও অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২ জন ধারালো দা ও লোহার রড ইত্যাদিযোগে রুমান আহমদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের কিল, ঘুষি, লাথি ও দায়ের কোপে রুমান আহমদ গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে, মাহমুদ মিয়া তার প্যান্টের পকেটে থাকা পাঞ্জেগানা হালিমা মসজিদের ইমামের ২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এমতাবস্থায়, রুমান আহমদের আর্তচিৎকারে জাহিদ মিয়া, ছয়ফুল মিয়া, জয়নাল মিয়া,রুনু মিয়া, হারুন মিয়া ও আলতু মিয়া ছুটে এসে দোকানে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করান। রুমান আহমদ এ ঘটনায় মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি জানান মাহমুদ মিয়া গং দীর্ঘদিন যাবত কিশোর গ্যাংকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তাদের অত্যাচারে অসহায় মানুষ ক্ষতির সম্মুখিন ও হুমকির মধ্যে রয়েছে। উক্ত ঘটনার পর থেকে আতংকে থাকা রুমান আহমদ এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আইনী পদক্ষেপ কামনা করছেন।

ছবি: সংগৃহীত

উল্লেখঃ মাহমুদ মিয়া কয়েক বৎসর আগে চুরি করতে গিয়ে ধরা খেয়ে স্কুল মাঠে জুতার বাড়ি খেয়ে ছিলো।

সর্বশেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:১৫
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও