রবিরবাজার কাঁচাবাজারের পুকুরটি এখন ময়লার ভাগাড়

ছবি মুক্তিবাণী
ছবি মুক্তিবাণী
কুলাউড়া প্রতিনিধিঃ

কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজারে কাঁচাবাজার সংলগ্ন পুকুরটি এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে এমন অবস্থা হয়েছে পুকুরটির। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ এক পুকুরটি ময়লায় ভরাট হয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়লেও এ নিয়ে নজরদারি নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

রবিরবাজার কাঁচাবাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কাঁচাবাজারে ছোট-বড় সব মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজারের অধিক দোকানপাট রয়েছে। বাজারের মাঝখানে ২৬ শতাংশ জায়গাজুড়ে পুকুরটির অবস্থান। আগে নানা কাজে স্থানীয়রা পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন। তদারকি না থাকায় বর্তমানে ময়লা ফেলে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে পুকুরটি। দুর্গন্ধ ও দূষণ ছড়াচ্ছে চারদিকে। পুকুরের ঘাটও দখল করে দোকান বসানো হয়েছে। এ ছাড়া রবিরবাজারের মহালদার সরকারের ইজারা শর্ত ভঙ্গ করে রাস্তা দখল করে দোকানপাট, বাজারদরের সাইনবোর্ড না বসিয়ে ইচ্ছামতো অতিরিক্ত টাকা আদায় করার অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারের ভেতরে কোনো ডাস্টবিনের সুবিধা না থাকায় ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনা পুকুরে ফেলছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী হিরা মিয়া ও ইউসুফ আলী জানান, আগে বাজারের ব্যবসায়ীরা পুকুরে অজু ও গোসল করতেন। এ ছাড়া সবজি পরিষ্কার করতেন সেখানে। বর্তমানে এই পুকুরে কোনো পানিই নেই, আছে শুধু ময়লা আর আবর্জনা। বাজারের ভেতরে কোনো ডাস্টবিন না থাকায় লোকজন সব ময়লা-আবর্জনা এনে ফেলছে এই পুকুরে।

রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মাসুক আহমদ জানান, এটি সরকারি বাজারের পুকুর। বাজারে কোনো অগ্নিকা- ঘটলে যে পুকুরটি থেকে পানি পাওয়া যেত, সেটি এখন ভাগাড়। পুকুরটি পরিষ্কার করে পুরোনো পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। দ্রুতই পুকুরটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রকিব আহমদ জানান, রবিরবাজার ভূমি অফিসের পার্শ্ববর্তী পুকুরটিতে অনেক দিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এটি পরিষ্কার করার জন্য স্থানীয় ভূমি অফিসে কোনো সরকারি বরাদ্দ নেই।

পৃথিমপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন জানান, বিশাল এই রবিরবাজারে আগুন লাগার মতো দুর্ঘটনা ঘটলে পানি সরবরাহের কোনো উপায় নেই। মহালদার কিবরিয়া হোসেন খোকন পুকুরটি পরিষ্কার না করিয়ে এটিকে ডাস্টবিন বানিয়ে ফেলেছেন। ইজারাদারদের জামানতের ৫ শতাংশ টাকা দিয়ে বাজারের ডাস্টবিন নির্মাণ ও পুকুর পরিষ্কারের উদ্যোগ নিতে উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

রবিরবাজারের মহালদার কিবরিয়া হোসেন খোকন এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বাজারের জায়গা সংকুলানের কারণে ব্যবসায়ীরা অনেক সময় রাস্তায় বসে ব্যবসা করেন। কাঁচাবাজারের ময়লা পুকুরে না ফেলতে বারন করা হলেও অনেকে শোনেন না। এভাবেই ধীরে ধীরে পুকুরটি ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুর রহমান মামুন জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

সর্বশেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৪, ০৩:০৮
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও