মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আজমেরু এলাকায় কৃষি কাজে ব্যবহৃত সরকারি খাল বা গোপাট দখল করে সীমানা প্রাচীন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর নির্দেশে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ করা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, মোস্তফাপুর ইউনিয়নের আজমেরু এলাকায় রাস্তার পাশের সরকারি খাল বা গোপাট দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন ফখরুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি।খালটির অবস্থান উপজেলার মোকামবাজার-অফিসবাজার সড়ক থেকে দক্ষিণ দিক হয়ে আজমেরু এলাকা হয়ে কোদালীছড়া পর্যন্ত।
এটি প্রায় ৪০ বছর আগে গোপাট হিসেবে পরিচিত ছিল। পরে ওই গোপাটের পশ্চিম পাশে খাল খনন করে পূর্ব পাশদিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। ওই খালের বেশ কিছু অংশ দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন ফখরুল ইসলাম সহ আরও এক ব্যক্তি। এ বিষয়ে স্থানীয় উপকার ভোগী কয়েকজন কৃষক খাল দখল করে সীমানা প্রাচীন নির্মান করায় আপত্তি করেন।
ফখরুল ইসলাম গংরা কৃষকদের আপত্তি উপেক্ষা করে জোরপূর্বক দ্রুত সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় এলাকাবসির পক্ষে কৃষক রাজু মিয়া ৩১ জানুয়ারি দূপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে ওইদিন বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে একটি টিম সরেজমিন প্রদর্শন করে অবৈধ ভাবে খাল বা গোপাট দখলের সত্যতা পান। পরে তারা খাল বা গোপাটের ভুমি বাদ দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দেন।
জানা যায়, খালের উত্তর পাশে রাজু মিয়ার বাড়ির সীমানা ও দক্ষিণ পাশে শাহীন মিয়ার কৃষি জমির সীমানা বিদ্যমান রয়েছে। তারা সহ অন্যান্য কৃষি জমির মালিকগণ খালের বাহিরে তাদের সীমানার অবস্থান। দীর্ঘ দিন থেকে ওই খাল থেকে পানি সেচ দিয়ে কৃষি কাজ করে আসছেন এলাকাবাসী। তবে খালটি ভরাট হওয়ায় সেচ্ছাশ্রমে খননের জন্য সম্প্রতি জেলা প্রশাসক বরাবরে এলাকাবাসীর পক্ষে একটি আবেদন করা হয়েছে। খালটি খনন হলে কৃষি কাজ সহ ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে পাশের মোকামবাজার অফিসবাজার সড়কের প্রতিবন্ধী পূর্ণবাসন কেন্দ্রের উত্তর পাশেও সরকারি গাইড ওয়াল ও সড়ক দখল করে রিপন গাজী নামের অপর এক ব্যক্তি সুকৌশলে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। রিপন গাজী প্রথমে কৃষি জমিতে মাটি ভরাট করার সময় গাইড ওয়ালটির উপর মাটি ফেলে তার দখলে নেন। এর উপর বাঁশ ও কঞ্চি দিয়ে কিছু সবজি গাছ ও কচু লাগিয়ে আড়াল করেন। তার পর বাঁশের বেড়া দেন। সর্বশেষ তিনি কাট ও টিন দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে পূরো সরকারি গাইড ওয়াল ও রাস্তার ভুমি অবৈধভাবে নিজ দখলে নেন।
অভিযুক্ত ফখরুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।এ বিষয়ে গিয়াসনগর ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে মৌখিক ভাবে এলাকাবাসি জানালেও কোন প্রদক্ষেপ এ পর্যন্ত নেয়া হয়নি বলেও জানান স্থানীয়রা।
মৌলভীবাজারের সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন চৌধুরী বলেন, সরকারি খাস ভূমিতে সীমানা প্রাচীন নির্মাণ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে সরকারি যে অংশটুকু যুক্ত করা হয়েছে তা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সর্বশেষ আপডেট: ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ২০:১১
পাঠকের মন্তব্য