সহকারি শিক্ষকের হয়রানি থেকে বাঁচতে প্রধান শিক্ষকের সংবাদ সম্মেলন

বরগুনা প্রতিনিধিঃ সহকারি শিক্ষকের হয়রানী থেকে বাঁচতে নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বরগুনার ধূপতি মনসাতলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সামসুন্নাহার মুনমুন। বুধবার দুপুরে বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সহকারি শিক্ষক গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে হয়রানীর অভিযোগ আনেন।

লিখিত বক্তব্যে মুনমুন বলেন, গত ১৭ জুলাই ধুপতি মনসাতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম মোস্তফার ৫ম শ্রেণির ৬ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতে যখম করে। অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি তদন্তে সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় লেমুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে  মৌখিক ডেপুটেশন দেয়া হয়। ২৯ জানুয়ারী শিক্ষক মোস্তফাকে পূর্ব বধূঠাকুরানী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশাসনিক বদলী করা হলেও ১০ মার্চ তিনি শিক্ষক বিকাশ রায়কে সাথে তার পূর্বের কর্মস্থল নিয়ে ধূপতি মনসাতলী বিদ্যালয়ে উকিল নোটিশ নিয়ে যোগদান করতে আসেন। বিধিগতভাবে উকিল নোটিশের মাধ্যমে যোগদানের কোনো নিয়ম না থাকায় আমি তাকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যথাযথ নিয়মে যোগদানের অনুরোধ জানাই এবং বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। কিন্ত সে এসবে কর্নপাত না করে পরেরদিন আবারো বিদ্যালয়ে এসে জোর করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেয়ার চেষ্টা করে। উদ্ভুত পরিস্থিতি আমি বিয়ষটি উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামকে জানাই। তিনি মোস্তফাকে ডেকে পাঠান এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে যোগদানের পরামর্শ দেন। কিন্ত এসব উপেক্ষা করে পরেরদিন আবারো শিক্ষক মোস্তফা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আমাকে বাজে বাক্য ছুড়ে দেয়। বিষয়টি আমি বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মহোদয়কে জানালে তিনি পুলিশরে সহায়তায় মোস্তফাকে বিদ্যালয় থেকে নিয়ে যান।
মুনমুন বলেন, এ ঘটনার পর শিক্ষক মোস্তফা আমার বিরুদ্ধে তাঁেক মারধরের অভিযোগ আনেন এবং স্থানীয় দৈনিক দ্বীপাঞ্চলে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর তিনি আমিসহ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও আরো স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা দায়ের করেন। মুনমুন বলেন,  এ ঘটনার পর গোলাম মোস্তফা বিভিন্ন সময়ে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকী দিচ্ছে। উল্লেখ্য এই গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে ভবন নির্মাণে চাঁদা দাবি, অননুমোদিতভাবে বিদ্যালয়ের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছিল এবং জেলহাজতেও গিয়েছে। এখনো একটি মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়াও ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সাথে অসদাচারণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। মোস্তফা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার চালিয়ে বিষোদগার করে তুলছে। আমি একজন নারী হিশেবে আমার ভবিষ্যত নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শিক্ষক মোস্তফা বলেন, আমি উচ্চাদালতে রিট করে ওই বিদ্যালয়ে যোগদানের আদেশ পেয়েছি। আদেশের পূর্বে আইনজীবীর লিখিত নিয়ে যোগদানে গেলে প্রধান শিক্ষক মুনমুনের নেতৃত্বে আমাকে মারধর করা হয়। আমি এর বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি।

উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন, বিধিবহির্ভূতভাবে প্রভাব খাটিয়ে ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে যোগদানের চেষ্টা করে। বিষয়টি নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষক মোস্তফাকে ডেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিধিগতভাবে যোগদানের জন্য অনুরোধ করি। কিন্ত পরবর্তিতে সে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে।

ভিডিও:-

https://youtu.be/emrhyqPz-es

সর্বশেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০, ১৭:৩৬
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও