দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকায় উঠতে চায় সবাই

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্স :

রাজনৈতিক ‘গিনিপিগ’ মেনন-ইনু-দীলিপ আসনের জন্য ফ্যা ফ্যা করে তাকিয়ে আছেন ষ জাপাকে ক্ষমতাসীনদের বি-টিম বানিয়ে সংসদে গিয়ে ব্যবহৃত হয়ে টিসু পেপারের মতো পরিত্যাক্ত হয়েছেন রওশন ষ জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের নিশ্চয়তা চায় আবার অনেকে লাঙ্গল ছেড়ে নৌকার প্রতীক নিতে চায়

‘দশে মিলে করি কাজ/হারি জিতি নাহি লাজ’ বাংলা ব্যাকরণে ভাব সম্প্রসারণ বহুল আলোচিত বাক্য। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও দলটির অনুগত দলগুলোর মধ্যে এই বাক্যটির বিবর্তন ঘটে ‘মিলেমিশে করি কাজ/হারি জিতি নাহি লাজ’ রূপলাভ করেছে। দেশি-বিদেশিদের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপিসহ প্রায় অর্ধশতাধিক দলের আন্দোলনের মধ্যেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আর যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তাদের বেশির ভাগ দলই নিজের প্রতীকের বদলে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার বায়না ধরেছেন। এতে করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের যে আসনে প্রার্থী করবে তারা সেখানেই প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদে যেতে চান।

তাদের অবস্থা বাউল শিল্পী ছোট আবুল সরকারের জনপ্রিয় গান ‘আমি এক নাচের পুতুল/একা একা নাচি না/যেমনি নাচাও তেমনি নাচি/না নাচিলে বাচি না’ মতোই। এমপি হয়ে সংসদে যেতে হবে, আওয়ামী লীগ যেভাবে যেখানে চাইবে সেখানে সেভাবেই প্রার্থী হবেন। নীতি-নৈতিকতা নয়, এমপি হওয়াই মূলকথা।

আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে ২৯৮ আসনে নৌকার প্রার্থী ঘোষণা করায় ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে নির্বাচনী উৎসব শুরু হয়ে গেছে। এখন আওয়ামী লীগের অনুগত দল ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, কিং পার্টি হিসেবে পরিচিত তৃর্ণমূল বিএনপি, তরিকত ফেডারেশনসহ সবগুলো দল আসন ভাগাভাগি চাচ্ছে; সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে নিজেদের প্রতীক রেখেই নৌকা মার্কায় ভোট করতে চাচ্ছেন। শুধু তাই নয় ২০১৪ পাতানো নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের রাতের ভোটের নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদে গৃহপালিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা বায়না ধরেছেন লাঙ্গল রেখে নৌকা মার্কায় নির্বাচন করতে চান। সমঝোতা করে ভাগাভাগির নির্বাচনে অংশ নেয়ার পর জাপার কয়েকজন নেতা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীদের কাছে ধরাসায়ী হওয়ার ভয় থেকেই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার আবদার তুলেছেন।

আন্তর্জাতিক মহলকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে সেটা দেখাতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সে লক্ষ্যে নতুন দল গঠন করে, বিএনপির কিছু পরিত্যাক্ত নেতাকে ভাগিয়ে এনে নির্বাচনে এসেছে। এছাড়াও গৃহপালিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলীয় জোটের শরিক (কার্যত অনুগত) দলগুলোও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। ২৬ নভেম্বরে আওয়ামী লীগ দলের ২৯৮ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করে। এরপর শুরু হয় অনুগত দলগুলোর দৌড়ঝাপ। একদিকে আসন সমঝোতা এবং অন্যদিকে আসন পেলেও নির্বাচিত হওয়া নিশ্চত করতেই নৌকায় উঠেই (নৌকা প্রতীক নিয়ে) নির্বাচন করার বায়না। এতে করে বিপদে পড়ে গেছে আওয়ামী লীগ। কারণ সবাই নৌকা মার্কায় নির্বাচনে প্রার্থী হলে আন্তর্জাতিক মহলকে ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ হয়েছে বোঝানো কঠিন হয়ে পড়বে।

কিং পার্টি খ্যাত তৃর্ণমূল বিএনপিতে যোগদান করেই শমসের মোবিন চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার দলীয় প্রতীক সেনালী আঁশের (পাটগাছ) বদলে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের বায়না ধরেন। অতঃপর বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর কারাগারে বসে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে বিএনপি থেকে পাল্টি দিয়ে জামিনে বের হয়েই নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেন। তিনি অন্য মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হওয়ার কোনো ঝুঁকি না নিয়েই সরাসরি নৌকায় ওঠেন।

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন থেকে ডিগবাজি দিয়ে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহিম নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি নিজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগামে অবাঞ্ছিত হয়ে ঢাকা-৫ ও ঢাকা-১৪ এবং কক্সবাজার-১ আসনের মনোনয়নপত্র কেনেন। অতঃপর তিনি কক্সবাজার-১ আসনে প্রার্থী হন। ফরিদপুর-১ আসনের (মধুখালী, আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী) আসনের সাবেক এমপি শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর বিএনপি থেকে ডিগবাজি দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে (বিএনএম) যোগদান করেন। অতঃপর তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে এখন নৌকা প্রতীকের জন্য দেন-দরবার শুরু করে দিয়েছেন।

পরজীবী রাজনীতির কারণে রওশন এরশাদ এখন পরিত্যক্ত। জি এম কাদের দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে না চাইলেও রওশন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন। শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করতে নিজেকে উৎসর্গ করেন। কিন্তু জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরের গ্রুপের সঙ্গে সমঝোতা হওয়ায় রওশন এখন পরিত্যক্ত। তাকে কলার খোসা এবং পরিত্যাক্ত টিস্যু পেপারের মতো ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে। তিনি দেন-দরবার করেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। অন্যদিকে আসন ভাগাভাগির আশ্বাস পেয়ে জি এম কাদেরের গ্রুপ এখন নির্বাচনে যাচ্ছেন। নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে গত ৬ ডিসেম্বর রাতে গুশলানের এক হোটেলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাহাউদ্দীন নাসিমের সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এবং সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। বৈঠকে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা হয়। জাপাকে কত আসন দেয়া হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি; তবে দলটি ৪০ আসন চেয়েছিল বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও জাতীয় পার্টিকে ফের জাতীয় সংসদে বিরোধী দল করা হবে এ নিশ্চয়তা চেয়েছে।

আলোচনায় উঠে আসে জাপাকে আসন ছেড়ে দেয়া হলেও ওই আসনের নৌকার প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীদের ব্যপারে কী করা হবে। আওয়ামী লীগ থেকে জানানো হয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যপারে আওয়ামী লীগের করার তেমন কিছু নেই। তবে নৌকার প্রার্থীদের উঠিয়ে নেয়া হবে। এ সময় এটাও আলোচনা হয় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে থাকলে যতই সমঝোতা ও আসন ভাগাভাগি হোক আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা লাঙ্গলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে না। তারা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী তথা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন। ফলে সমঝোতা করে আসন পেলেও লাঙ্গল প্রার্থীর বিজয়ী হওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। দলীয় সভাপতির (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে পরে জানানো হবে বলে জাপার নেতাদের আশ্বাস দেয়া হয়। তবে ওই বৈঠকে উঠে আসে জাতীয় পার্টির কয়েকজন প্রার্থী লাঙ্গলের বদলে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়তে চাচ্ছেন। এ ব্যাপার আওয়ামী লীগ থেকে এখনো গ্রিন সিগন্যাল দেয়া হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেই বৈঠকে কী কথা হয়েছে জানানো হয়। জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আসন ভাগাভাগি হয়নি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে ২৭৬ থেকে ২৭৭ জনের মতো প্রার্থী থাকবেন। আসন বণ্টন নিয়ে কোনো কথা হয়নি, নির্বাচন নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ কীভাবে করা যায় তা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যাপারে কথা হয়েছে। আসন বণ্টনের প্রয়োজন নেই, ক্ষমতাসীন দলের কাছে নির্বাচন নিয়ে আস্থা অর্জনের বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি, তারা আশ্বস্ত করেছে। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের বৈঠক সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বৈঠকে আসন বণ্টনের প্রসঙ্গ আসেনি। তবে জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা জানান, তারা মনে করছেন নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী রেখে আসন ভাগাভাগি করে নির্বাচন করলেও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হতে পারবেন না। ফলে কয়েকজন নেতা নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করতে তদবির চালাচ্ছেন।

গত ৪ ডিসেম্বর আসন ভাগাভাগি নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন ১৪ দলীয় জোটের নেতা হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, দীলিপ বড়–য়ারা। ওই বৈঠকে জোটের পক্ষ থেকে সম্মানজনক ৪০টি আসন চাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী নিজে আসন বিষয়ে তেমন কথা না বলে তিনি নির্বাচনের পর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে এবং নির্বাচন পরবর্তী কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন। কিন্তু মেনন-ইনুদের সেই বক্তব্যে মন ভরেনি। সেখানে জানানো হয় শরিক দলগুলোকে ৪টি আসন দেখা হতে পারে। যদিও বর্তমানে রাশেদ খান মেননের স্ত্রী ও হাসানুল হক ইনুর স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের এমপিসহ ১০ জন এমপি রয়েছে। পরে সিদ্ধান্ত হয় গণভবন নয় ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আসনের চূড়ান্ত ভাগাভাগি করবেন। পরে আমুর ইস্কাটনের বাসায় ১৪ দল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আমির হোসেন আমুর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার। বৈঠকে ২০ আসন দাবি করে ১৪ দলীয় জোটের শরীকরা। তারা জানান, আসন ভাগাভাগি যেন জোটের জন্য সম্মানজনক হয়, সেটাই প্রত্যাশা। বৈঠকে আমির হোসেন আমু বলেন, ১৪ দলের শরিকদের আসন ভাগাভাগির বিষয়টি জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত হবে। নির্বাচন জোটগতভাবে হবে। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করবে আওয়ামী লীগ। জোটের আসন বিন্যাস ও প্রার্থী চূডান্ত করতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেও আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী আছে। ১৭ তারিখের আগে জোটকে আসন ছাড়ের বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

দেশের গণতন্ত্র এবং রাজনীতিতে রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনুর অবদান রয়েছে। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে এসে তারা এমপি-মন্ত্রী হওয়ার লোভে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেদের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গিনিপিগে পরিণত করেছেন। জনগণের ভোটের অধিকার পায়ে দলিয়ে দিয়ে এমপি হয়ে সংসদে যাওয়ার জন্য ফ্যা ফ্যা করে আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।

গতকালও আক্ষেপ করে হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘আসন্ন নির্বাচনে কৌশল করতে গিয়ে একটা বিপজ্জনক ফাঁদের ভেতরে পড়ে যাচ্ছি। দলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হওয়ার শঙ্কা দেখছি। বিরোধীদের হাতে আরো শক্ত অস্ত্র তুলে দিচ্ছি কি না, ভাবতে জোট নেতাদের। অথচ কয়েক বছর আগেও তারা আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করেছেন। আওয়ামী লীগকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছিলেন, ‘শরিকরা না থাকলে ফ্যা ফ্যা করে তাকিয়ে থাকলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে পারবে না।

আপনি (আ.লীগ নেতা) আশি পয়সা। আর এরশাদ, দিলীপ বড়ুয়া, মেনন আর ইনু মিললে এক টাকা হয়। আমরা যদি না থাকি, তাহলে আশি পয়সা (আওয়ামী লীগ) নিয়ে রাস্তায় ফ্যা-ফ্যা করে ঘুরবেন। এক হাজার বছরেও ক্ষমতার মুখ দেখবেন না।’ আর রাশেদ খান মেনন নিজের ‘গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তি বিসর্জন দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ যেমনে নাচায় তিনি তেমনি নাচেন। দীর্ঘ তিন নির্বাচনে তিনি ঢাকা আসনের এমপির দায়িত্ব পালন করেছেন। দেড় যুগ পর ফিরে গেছেন বরিশালের একটি আসনে নির্বাচন করতে। ২০১৮ সালের রাতের নির্বাচনের কঠোর সমালোচনা করে ২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর বরিশালে এক সমাবেশে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছিলেন, বিগত নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আমিও বিজয়ী হয়ে এমপি হয়েছি। এরপরও আমি সাক্ষী বিগত নির্বাচনে (রাতের ভোটের নির্বাচন) জনগণ ভোট দিতে পারেননি। বিগত জাতীয়, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি দেশের মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করেন, কেন দেশের মানুষ বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোট দিতে পারেনি?

আওয়ামী লীগের বাইরে যে সব দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তারা কার্যত ‘আসন সমঝোতা’ আশ্বাস পেয়েই নির্বাচনে নেমেছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ২৯৮ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এতে করে আওয়ামী লীগ যে আসনে প্রার্থী করার নির্দেশনা দেবেন সে আসনে প্রার্থী হবেন। নিজস্ব কোনো পছন্দ নেই। ফলে তারা আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে ধরাসায়ী হওয়ার ভয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার বায়না ধরেছেন। জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ নির্বাচনে অংশ নেয়া ছোট দলগুলোর বড় নেতাদের অবস্থা নৌকায় চড়লে এমপি হওয়া নিশ্চিত।

সর্বশেষ আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৫২
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও