কুলাউড়া আহমদাবাদ মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীকে অমানবিক নির্যাতন

ছবি মুক্তিবাণী
ছবি মুক্তিবাণী
কুলাউড়া প্রতিনিধি ॥

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ‘জামেয়া মোহাম্মদিয়া আহমেদাবাদ মাদ্রাসা’য় এক শিক্ষার্থীকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থীকে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে কুলাউড়া হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থী ফারহাবি হাসান (১৪) জানান, সোমবার ফজরের নামাজ শেষ করে তাদেরকে সবকের (পড়ার) জন্য একত্রিত করেন এবাদুর রহমান জগন্নাথপুরী হুজুর। ক্লাস চলাকালে ফারহাবির চোখে একটু ঘুম চলে আসে। আর এই বিষয়টি দেখেই জালি বেথ নিয়ে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন জগন্নাথপুরী হুজুর। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৪০-৫০ টি বেত্রাঘাতের গাড়ো চিহ্ন রয়েছে। মারধরের বিষয়টি বাইরের কেউ না জানার জন্য দুপুর পর্যন্ত ফারহাবিকে মাদ্রাসায় নজরবন্দী করে রাখেন শিক্ষক এবাদুর রহমান।

নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীর পিতা লিটন আহমদ জানান, তিনি কুলাউড়া সরকারি হাসপাতালের এম্বুলেন্স চালান। রোগী নিয়ে মৌলভীবাজার ছিলেন। বিকালে এসে ছেলের শরীরের এই অবস্থা দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারছেন না। একটা বাচ্চাকে হুজুর সাহেব এভাবে মারলেন, উনার মনে কি কোন দুঃখ-দরদ নেই।

লিটন অভিযোগ করে আরও বলেন, ভালো শিক্ষার জন্য ছেলেকে আহমদাবাদ মাদ্রাসায় ভর্তি করেছিলাম। এখন দেখছি এখানে শিক্ষার নামে চলে অমানবিক নির্যাতন। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিচ্ছেন।

ময়নুল হক পবনসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে জানান, আহমদাবাদ মাদ্রাসায় শিক্ষার নামে শিশুদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। মাদ্রাসার শিক্ষকদের নির্যাতন সইতে না পেরে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নানা ভাবে প্রতিষ্ঠানটি থেকে পালিয়ে যায়। যার কারনে ঘন ঘন এই প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। মারধরের ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় যেতে চায় না। আর এসবের কারণেই অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে মাদ্রাসা বাদ দিয়ে অনত্র্য নিয়ে গেছেন৷

এ ব্যাপার মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মাহমুদুর রহমান এমরান বলেন, মারধরের বিষয়টি আমি জেনেছি এ বিষয়ে শিক্ষার্থীর পরিবারের লোকজন মাদ্রাসায় আসবেন। আমরা বসে এই বিষয়টি মিমাংসা করবো। এ ধরনের ঘটনা হটাৎ ঘটে যায়, তবে আমরা চেষ্টা করবো এধরণের ঘটনা যাহাতে আর না ঘটে।

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেন, শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা আমার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন, আমি বলেছি থানায় একটি অভিযোগ দেওয়ার জন্য।

সর্বশেষ আপডেট: ৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:০১
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও