জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় দাঁড়িয়ে রশি টেনে নদী পারাপার হতে হয় কমলমতি শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ॥

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৪নম্বর ওয়ার্ডের তিনবারের কাউন্সিলর তানভীর আহমদ শাওন তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি আত্মসম্মান ও জানমালের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের কাছে সুবিচার কামনা করেন।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কাউন্সিলর তানভীর আহমদ শাওন জানান, ২০০৫ সালের ২৬ আগস্ট ইয়াছমিন সুলতানার সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি বলেন, “বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই আমি বুঝতে পারি আমার স্ত্রী লোভী এবং পরশ্রীকাতর। বিয়ের দু’এক মাসের মাথায় বিয়েতে দেয়া স্বর্ণালষ্কার আমার অজান্তে বিক্রি করে বাপের বাড়ি দেয়াসহ আমার ক্ষতি করতে মরিয়া হয়ে উঠেন। যে কারণে আমার সঙ্গে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। একপর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে তালাক সম্পাদন করি। পরবর্তীতে কাজী অফিসের মাধ্যমে ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী তালাক সম্পাদন করার জন্য ৩টি নোটিশ পাঠিয়ে চূড়ান্ত তালাক সম্পাদন করি। সে সময় ইয়াছমিন সুলতানা তার বাবার বাড়িতে ছিলেন।

চূড়ান্ত তালাক কার্যকর হওয়ার প্রায় ২ মাস পর হঠাৎ করে আমার বাসায় জোরপূর্বক অবস্থানের চেষ্টা করে। এসময় আমি বাঁধা দিতে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর হামলা চালান। আমার শরীরে একাধিক আঘাত করেন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে আমার বাসায় নিয়ে আসেন এবং জোরপূর্বক বাসায় প্রবেশের চেষ্টা করেন।”

তিনি আরও বলেন, “এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আমার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে আমার বাসা ত্যাগ করার কথা বললে তিনি শমসেরনগরের একটি ভাড়া বাসায় উঠেন। আমার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। ১ মেয়ে ও ১ ছেলে শমসেরনগর বিএএফ শাহীন কলেজে অধ্যায়নরত থাকার কারণে বাচ্চাদের পড়াশোনার স্বার্থে বাসাভাড়াসহ তাদের যাবতীয় ভরণপোষন দিয়ে আসছি।

এদিকে তালাকের পর আমার নামে ইন্স্যুরেন্সের চেক রিসিভ করে পূবালী ব্যাংক কুলাউড়া শাখায় জমা দিয়ে আমার স্বাক্ষর জাল করে চেকের মাধ্যমে দেড় লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেন। যার প্রমাণাদী আমার কাছে রয়েছে।

এদিকে আরেকদফা পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী গত ১৩ এবং ১৪ আগস্ট আমার বাসায় আবারও প্রবেশের চেষ্টা করলে আমি তাতে বাঁধা দেই। এ বিষয়ে আমি ১৬ আগস্ট মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৫নম্বর আদালতে মামলা (নং ৪৫৮/২৩, কুলা) দায়ের করি। আমার আত্মরক্ষার্থে অহেতুক হয়রানী কিংবা মানসম্মান বিনষ্ট যেন না হয় সেজন্য আইনি সহায়তা চেয়ে গত ১৭ আগস্ট মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত আবেদন করি।

পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করার দিন (১৭ আগস্ট) রাতে আমার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী কুলাউড়া থানায় যৌতুক আইনে একটি মামলা (নং-১১) দায়ের করেন। আমি সেই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করি। এদিকে থানায় যৌতুক মামলা রেকর্ডের পর হাইকোর্টের জামিনের জন্য ঢাকা অবস্থানকালে আমার বাসার দরজার তালা ভেঙ্গে অনাধিকার প্রবেশ করে বাসার সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে ঘরে থাকা মালামাল, নগদ টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র নিয়ে যায়। ”

তিনি জানান, “শুধু তাই নয় যখন তখন ৯৯৯-এ ফোন করে বাসায় পুলিশ এনে আমার মানসম্মান নষ্ট করতে চায়। যা খুবই বিব্রতকর। এসবের একাধিক ভিডিও ফুটেজ প্রমাণ হিসেবে আমার কাছে আছে।

নিজে বেআইনি কর্মকান্ড করে সর্বশেষ গত ১৯ নভেম্বর ফৌজধারী ধারায় আমার বিরুদ্ধে আরেকটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেন কুলাউড়া থানায়। আদালত এই মামলায়ও জামিন মঞ্জুর করেন। আমি দফায় দফায় মিথ্যা ও হয়ারনিমূলক মামলার শিকার হচ্ছি। আমি সামাজিক মানমর্যাদার ভয়ে অনেক কিছুই নিরবে সহ্য করছি। আমি প্রশাসন ও বিজ্ঞ আদালতের কাছে সু-বিচার আশা করছি।”

এ ব্যাপারে কাউন্সিলর তানভীর আহমদ শাওনের অভিযুক্ত স্ত্রী ইয়াছমিন সুলতানা জানান, আমিতো মামলা দিয়ে হয়রানি করছি না। আমি একটা মামলা দিয়েছি, সে আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়েছে। এমনকি আমার উপর অত্যাচার করছে। আমি আইনি প্রক্রিয়ায় আছি। আইনে যা হয় তাই হবে।

সর্বশেষ আপডেট: ৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:০০
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও