“মধুর আমার মায়ের হাসি, চাঁদের মুখে ঝরে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”। এই গানের সঙ্গেই মিলে যায় আমার জীবনের গল্প। সবসময় মনে পড়ে আমার মায়ের কথা। বিশেষ করে মায়ের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ আমার হৃদয়কে নাড়া দেয়।
মা সবসময় বলতেন বাবা তোমার বিজয় হবেই, এতো হতাশ হইওনা। আল্লাহ তোমার সাথে আছেন। মায়ের সেই অনুপ্রেরণাই আজকে আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে।
আমার মা সালেহা বেগম। তিনি তার ভাই-বোনদের মধ্যে সবচেয়ে শান্ত-শিষ্ট ও ভদ্র। তিনি খুবই সহজ সরল জীবন-যাবন করেন। আমাদের দেখা শোনা করার জন্য তিনি তার মূল্যবান সময় ব্যয় করেন। তিনি পেশায় একজন গৃহিণী।
আমরা চার ভাই এক বোন। আমাদের সবাইকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মা তার সারাটা জীবন ব্যয় করেছেন। বাড়িতে তিনি হাঁস মুরগি লালন-পালন করতেন। এগুলো লালন-পালন করে পরিবারের খাবার যোগান দেওয়ার পাশাপাশি কিছু টাকা উপার্জন করেন। উপার্জিত টাকা আমাদের পড়াশোনায় ব্যয় করেন।
আমি হলাম বাবা-মায়ের সবচেয়ে ছোট সন্তান। তাই তারা আমাকে খুব বেশি ভালোবাসতেন। মা আমাকে নিয়ে গর্ব করতেন। প্রাইমারি স্কুলের পড়া শেষ করার পর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় আমার পরীক্ষার রেজাল্ট ভালো হতে শুরু করে। এতে আমার লেখাপড়া নিয়ে আমার মায়ের আগ্রহও বৃদ্ধি পায়।
এরপর মায়ের উৎসাহে ক্লাসের পারফরমেন্স ভালো হতে থাকে। আমাকে নিয়ে মার স্বপ্নও বাড়তে থাকে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে আমি একজন ভালো মানুষ হবো, মানুষের সেবা করব। সর্বোপরি একজন সুশিক্ষিত ও সুনাগরিক হবো।
ষাটের অধিক বয়স হওয়া সত্বেও এখনো আমাদের কথা চিন্তা করে সময় ব্যয় করেন মা। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছি। এই পড়াশোনার পেছনে আমার মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি।
তিনি এখনো আমার কথা চিন্তা করে কান্নাকাটি করেন। আমি কখন আরও ভাল একটা চাকরি পাব সে আশায় বসে আছেন।
পরিশেষে আমি আমার মাকে বলব ‘মা আমি তোমাকে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি। আমি যেন তোমার সুখে-দুঃখে সবসময় পাশে থাকতে পারি মহান আল্লাহর কাছে এই মিনতি করছি।’
সর্বশেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারী ২০২০, ২১:০৫
পাঠকের মন্তব্য