মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের শেখবাড়ি জামিয়ার ইসলামী মহাসম্মেলন ও আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ইসলাহী জোড় সফলের লক্ষ্যে সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল ১১টায় কলেজ রোডস্থ শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে দেশের প্রাচীনতম অরাজনৈতিক সংগঠন আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা শাব্বীর আহমদ ফতেহপুরী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাওলানা শাব্বির আহমদ বলেন, কুরআন সুন্নাহর আলোকে সু-সংগঠিত খোদাভীরু জাতি ও সমাজ গঠন ও আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ১৯৪৪ সালে গঠিত হয় আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। কুতবে দাওরান মুজাদ্দিদে যামান শাইখুল ইসলাম আল্লামা লুৎফুর রহমান শায়খে বর্ণভী (রহ.) এ সংগঠন প্রতিষ্ঠাতা করেন। এসংগঠনের উদ্যোগে
আগামী ২৩-২৪ নভেম্বর বৃহস্পতি ও শুক্রবার শ্রীমঙ্গলের ভৈরবগঞ্জ বাজারস্থ শেখবাড়ী জামিয়া মাদরাসা মাঠে আয়োজন করা হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘কেন্দ্রীয় ইসলাহী জোড়’।
এতে ইংল্যান্ড, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ এবং রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে দেশের শীর্ষ উলামা-মাশায়েখ ও ইসলামী স্কলারগণ জোড় ও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। তিনি সাংবাদিকদের জানানন ইতোমধ্যে ইসলাহী জোড়ের সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ। আশাকরি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক লক্ষ মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন। অরাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনটির লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি বাস্তবায়নে সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা জিয়া উদ্দিন ইউসুফ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা লুৎফুর রহমান জাকারিয়া, কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক মাওলানা সাইফুর রহমান মক্কি, সংগঠনের শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সেক্রেটারি ইসমাঈল হোসেন এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ আজিজুর রহমান ফটিক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা শাব্বীর আহমদ ফতেহপুরী আরও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর শায়খে বরুণী রহ. আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর মৌলিক ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচিগুলো হলো: ১. দাওয়াত। ২. সংগঠন। ৩. তালীম।৪. তারবিয়াত ও তাযকিয়া। ৫. খেদমতে খালক তথা সৃষ্টির সেবা। ৬. আমর বিল মারুফ নাহি আনিল মুনকার। পঞ্চাশের দশকে ইসলামী রেনেসা ও সংস্থার আন্দোলনে এদেশে যারা নেতৃত্বে ছিলেন তাদের প্রায় সকলই আঞ্জুমানের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কর্মসূচির সাথে ঐক্যমত পোষণ করেছিলেন। তৎকালীন ভারত ও পাকিস্থানের শীর্ষ উলামা-মাশায়েখদেরও সমর্থন ছিলো আঞ্জুমানের প্রতি। আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে তার লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কর্মসূচির আলোকে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ঐকা প্রয়াসী এ সংগঠন টি সু-সংগঠিত জাতি ও সমাজ বিনির্মাণে ব্যাপকভাবে দ্বীনি দাওয়াত ও সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করে চলেছে। বর্তমানে দেশ ও বিদেশে আঞ্জুমানের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালু রয়েছে। দেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে সোনার মানুষের প্রয়োজন। তাই প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে জরুরিয়াতে দ্বীনের জ্ঞান বিতরণ ও চর্চায় আঞ্জুমানের রয়েছে পাঁচটি কর্মধারা।
কর্মধারাগুলো হলো: ১. পবিত্র কুরআনুল কারীমের দশটি সুরা মশক। ২. জরুরি মাসাইলের আলোচনা। ৩. আল মুনাদী। ৪. ছয় মঞ্জিলের আলোচনা। ৫. পঞ্চাশঘরী পরিকল্পনার বাস্তবায়ন এবং চতুর্থ কর্মসুচি তারবিয়াত ও তাযকিয়া তথা আত্মশুদ্ধির লক্ষ্যে আরো দুটি কর্মধারা রয়েছে। ১. সাপ্তাহিক ইউনিয়ন ভিত্তিক চিল্লা। ২. মাসিক শবগুজারী। সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা শাব্বীর আহমদ ফতেহপুরী আরও বলেন, ধর্মীয় জ্ঞান চর্চা ও আত্মশুদ্ধিমূলক কর্মসূচি সমূহ আঞ্জুমানের শাখা সংগঠনগুলোতে চলমান রয়েছে। সকল আহলে তাওহিদের মধ্যে ঐক্য, জরুরিয়াতে দ্বীনের জ্ঞান চর্চার প্রেরণা, আমল ও আত্মশুদ্ধির আগ্রহ সৃষ্টি করা।
সর্বশেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ০১:৫১
পাঠকের মন্তব্য