বিশ্বকাপে প্রায় অজেয় ভারত ফাইনালে এসেই হয়ে গেলো পরাজিত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াইও করতে পারলো না। ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারলো রোহিত শর্মার দল। ট্রাভিস হেডের একার ব্যাটে ১৪০ কোটি মানুষের স্বপ্নভঙ্গ হলো।
কী এমন কারণ ছিল, যার ফলে পুরো বিশ্বকাপে দাপট দেখানো ভারতের ফাইনালে এসে এমন করুণ পরিস্থিতিতে পড়তে হলো? দেখে নেওয়া যাক, সে কারণগুলো কী কী-
১। টসভাগ্যের কাছে অসহায়
ভারতের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সন্ধ্যার পর কুয়াশা পড়তে পারে। যে কারণে আয়োজকদের পক্ষ থেকে শিশির কমানোর জন্য স্প্রে ব্যবহারের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল।
টসে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা হেরে যাওয়ার কারণে তিনি পছন্দ মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারলেন না। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন। সন্ধ্যার পর থেকে শিশির পড়ার কারণে শেষমেষ সুবিধা নিলো অস্ট্রেলিয়াই। ভারতের ব্যাটিংয়ের সময় উইকেট শুকনো থাকার কারণে ব্যাটে-বলে ভালো সংযোগ করতে পারছিলেন না ব্যাটাররা; কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের সময় সে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে গেলো।
২। ভারতের কেউই স্থিতিশীল ব্যাটিং করতে পারেননি
পরিকল্পনা অনুযায়ী আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করছিলেন রোহিত শর্মা; কিন্তু যখন উইকেট পড়তে শুরু করেছিল তখন ভারতীয় ব্যাটারদের সংযত হওয়ার দরকার ছিল। অথচ, তারা সেটা পারেননি। ফলে বিরতি দিয়ে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। অবশেষে ২৪০ রানেই গুটিয়ে যায় ভারত।
৩। ফিনিশাররাও ব্যর্থ
দলকে নাজুক অবস্থায় পেয়ে কিছুই করতে পারেননি ফিনিশাররা। শেষদিকে সূর্যকুমার দলের হালের ধরতে পারেননি। ওয়ানডতে নিজের অদক্ষতার প্রমাণ আরও একবার দিলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। হাসেনি রবিন্দ্র জাদেজার ব্যাটও। জাদেজা করলেন ৯ রান। সূর্যকুমার আউট হলেন ১৮ রানে। দলকে লড়াকু পুঁজিও এনে দিতে ব্যর্থ হলেন তারা।
৪। অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত ফিল্ডিং
ভারতের পুরো ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ফিল্ডিং ছিল চোখে পড়ার মতো। অসাধারণ ফিল্ডিং করেছেন অসিরা। অনেকগুলো নিশ্চিত বাউন্ডারি ঠেকিয়ে দিয়েছেন তারা। রোহিতের আকাশে তোলা বলকে উল্টোদিকে দৌড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ বানিয়েছেন ট্রাভিস হেড। এই ক্যাচটিই হয়তো অজিদের ম্যাচ জয়ের বড় কারণ।
৫। ভারতের বাজে ফিল্ডিং
এক্ষেত্রে দায় এড়াতে পারবেন না ভারতের উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল। সহজ বলও তিনি গ্লাভসে পুরতে পারেননি। তার পায়ের ফাঁক দিয়ে বেশ কয়েকবার থার্ডম্যান অঞ্চলে বল চলে গিয়েছিল। সে সুযোগে সিংগেল রান কুড়িয়ে নিয়েছেন অসি ব্যাটাররা। এমনকি রাহুলের এমন বাজে কিপিংয়ের কারণে বাউন্ডারিও পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
৬। অসিদের উপর শুরুর চাপ বজায় রাখতে ব্যর্থ ভারত
৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সাজঘরে ফিরেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল মার্শ ও স্টিভ স্মিথ। কিন্তু অসিদের উপর সেই চাপ ম্যাচের বাকিটা সময় ধরে রাখতে পারেনি ভারত। ১৯২ রানের ম্যাচজয়ী জুটি করে ফেলেন ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেন। জয়ের মাত্র ২ রান বাকি থাকতে আউট হন হেড। ফলে ম্যাচটি ততক্ষণে অস্ট্রেলিয়ারই হয়ে গিয়েছিল।
সর্বশেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০২:২৯
পাঠকের মন্তব্য