শ্রীমঙ্গলে খেজুরীছড়া চা বাগানের রানার স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীকে আই লাভ ইউ বলতে বলার অপরাধের প্রতিবাদের নামে বর্হিরাগত কিছু লোক ছাত্রীদের শীলতাহানি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু ঘটনার একমাস পেরিয়ে গেলেও উপজেলা প্রশাসন, শিক্ষা অফিসার সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রহস্যজনক কারনে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
শ্রীমঙ্গল থানায় লিখিত অভিযোগে জানাযায়, শ্রীমঙ্গল খেজুরিছড়া চা বাগানের রানার স্কুল এন্ড কলেজের ৭ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে ঐ স্কুলের এক খন্ড কালিন এক শিক্ষক ২৭ আগষ্ট ছাত্রীটির এক বান্ধবী সহ তার রুমে ডেকে নিয়ে বান্ধবীটিকে পানি আনতে পাঠিয়ে দেন। ছাত্রীটিকে শিক্ষকের রুমে নিয়ে আই লাভ বলার জন্য বলেন বলে থানার অভিযোগে উল্লেখ করেন। পরে ছাত্রীটি বিষয়টি তার ক্লাস ক্যাপটেন ও তার বান্ধবীকে জানায়। পরবর্তীতে ১ সেপ্টেম্বর ছাত্রী তার পরিবারকে বিষয়টি অবগত করলে তার পরিবার ও বর্হিরাগত কিছু লোক নিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর স্কুলে প্রধান শিক্ষকের নিকট বিচার প্রার্থী হন। পরে তারা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানাযায়, ৩ সেপ্টেম্বর ছাত্রীর পিতা রানার স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীকেকিছু বখাটে ছেলে নিয়ে রাজঘাট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিজয় বুনার্জীর নিকট লিখিত অভিযোগের একটি কপি প্রধান শিক্ষকের নিয়ে আসেন।
৪ সেপ্টেম্বর প্রাধান শিক্ষক জরুরী একটি মিটিং এ মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গেলে তার অনুপস্থিতিতে আন্দোলনের নামে শিক্ষকদেরে তাড়া করে নিয়ে একটি রুমে তালা বদ্ধ করে রাখে। এসময় ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাস রুম থেকে বেড় হতে না চাইলে মারধোর করে জোর পুর্বক টেনে বের করার চেষ্টা করে। এসময় অনেক ছাত্রীদের হাত ধরে টানা হেঁচড়া করে শীলতাহানি করা হয়েছে বলে স্কুলের ছাত্রীরা জানিয়েছে। খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন।
স্কুলের নিরাপত্তা জানিত কারনে স্কুলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্র ছাত্রীরা জানান, প্রতিবাদের নামে ভিকটিমের পরিবার বর্হিরাগত বখাটে নিয়ে এসে তান্ডব চালায় স্কুলে। ছাত্র ছাত্রী ক্লাসের বাহিরে যেতে না চাইলে মারধোর করা হয়। এসময় ছাত্রীদের গায়ে হাত দিয়ে শীলতাহানি করে। ক্ষোভের সাথে ছাত্রীরা বলেন একজন শিক্ষক আই লাভ ইউ বলার জন্য বলে শাস্তি হতে পারে, কিন্তু স্কুলে শিক্ষক লাঞ্চিত, মেয়েদের শীলতাহানির কোন বিচার নেই! খেজুরীছড়া চা বাগানের র্যানার স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল হক বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে ২০১৭ সালে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে স্কুলে নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৩ সেপ্টেম্বর অভিযোগকারী স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীর পিতা অভিমান্য বোনার্জী সহ শতাধিক লোক ওই ছাত্রীকে স্কুলের খন্ডকালিন শিক্ষক তাকে আই লাভ ইউ বলার জন্য বলেছেন বলে রাজঘাট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত আবেদনের অনুলিপি দেন।
তিনি বিষয়টি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে সিন্ধান্ত নেবেন বলে তাদেরকে বললে আগত লোকেরা অভিযুক্ত শিক্ষককে জুতার মালা পড়ানোর দাবী করে। তিনি এই মাবাধিকার লংঙ্গন কাজটি করারা যাবেনা বলে জানান। তখন তাৎক্ষনিক ভাবে তাদের চাপে সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রানতুষ সরকার,রাজঘাট ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সেলিম আহমদ, সাবেক ইউপি সদস্যর সুমন তাতী, গর্ভনিং বডির সদস্য আহসানুল হক দুলাল, খেজুরি ছড়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রষিষ্ট গোয়ালা সহ ৫ সদস্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার হয়। পরদিন ম্যনেজিং কমিটির মাধ্যমে সিন্ধান্ত হবে বলে জানান।
পর দিন জরুরী ভাবে জেলা প্রশাসকের অফিসে মিটিং এ চলে গেলে ছাত্রীটির পরিবারের লোকসহ কিছু লোক স্কুলের ভিতর প্রবেশ করে শিক্ষকদেরে রুমে তালা বদ্ধ করে উশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে বলে জানতে পারেন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক এত বছর ধরে চাকুরী জীবনে তিনি খারাপ কোন কাজের সাথে জড়িত পাননি। তার খারাপ কোন আচরন চোখে পড়লে বা অভিযোগ পেলে অনেক আগেই তাকে স্কুল থেকে অব্যহতি দিতেন। শিক্ষকটি ছাত্র ছাত্রীর লেখা পড়ার প্রতি খুবই আন্তরিক ছিলেন বলে প্রধান শিক্ষক জানান। রাজঘাট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিজয় বুনার্জী বলেন ৩ সেপ্টেম্বর আমাকে বিষয়টি অবগত করা হয়।ঐ দিন একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। পরদিন ম্যানেজিং কমিটিসহ বিষয়টি দেখা হবে বলে সিন্ধান্ত হয়।
কিন্তু প্রধান শিক্ষক জরুরী মিটং এ প্রধান শিক্ষক স্কুলে উপস্থিত থাকতে পারেননি। কিন্তু কিছু লোক স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদেরে রুমে তালা বদ্ধ করে রাখে এবং চাত্র ছাত্রীদেরে প্রতি বাজে আচরন করেছে শুনেছি। এমনকি আমাকেও গালি গালাজ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমি আর এসখানে যাইনি। অভিযুক্ত শিক্ষকের আচার আচরন কোন দিন খারাপ পাইনি। শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, র্যানার স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীকে প্রপোউজ করার বিষয়টি জানার পর আমি আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি। বখাটে কর্তৃক শিক্ষক হেনস্থা ও ছাত্রীদের শীলতাহানির বিষয় বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলাকার শিক্ষানুরাগী ও সচেতন মহলের ধারনা রাজঘাট ইউপি সদস্য সেলিম হক কিছু বখাটে যুবকদেরে নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্টানকে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য শিক্ষকদেরে হেনস্থা ও ছাত্রীদেরে শীলতাহানির ঘটনা ঘটিয়েছেন। এব্যাপারে প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি গঠন করে মুল রহস্য বের করা প্রয়োজন
সর্বশেষ আপডেট: ৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:০১
পাঠকের মন্তব্য