আমলের বিনিময়ে মানুষ দুনিয়ায় শান্তি পাবে আর পরকালে নাজাত পাবে এমন চিন্তার কোনো সুযোগ নেই। আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও পরকালের নাজাতের একমাত্র পথ হচ্ছে তার রহমত। আল্লাহ তাআলা কুরআনে ঘোষণা করেছেন-
‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সব গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৫৩)
Loading..
Copy video url
Play / Pause
Mute / Unmute
Report a problem
Language
Mox Player
আল্লাহ তাআলা ঠিকই বলেছেন। তার রহমত ছাড়া কোনো বান্দার মুক্তি লাভের উপায় নেই। মানুষ কম-বেশি যে আমল ও ইবাদত করে থাকে, তা-ও মহান আল্লাহর রহমতের ওপর ভরসা করেই আদায় করে। তার রহমতের ভরসাতেই মাসনুন দোয়ার মাধ্যমে তারই কাছে ধরণা দেয় মানুষ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতে মোহাম্মাদিকে আল্লাহর কাছে ধরণা দেয়ার অনেক দোয়া ও উপায় শিখিয়েছেন। এসব মাননুন দোয়ার মধ্যে নিজেদের সব অপারগতা ও অযোগ্যতার দোয়াও রয়েছে। আল্লাহর কাছে যে দোয়াগুলো করা খুবই জরুরি।
দুনিয়ার যাবতীয় অযোগ্যতা ও অপরাগতা থেকে মুক্ত থাকতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে এ দোয়াগুলো শিখিয়েছেন। হাদিসের বর্ণনা এসেছে-
হজরত যায়েদ ইবনে আরকাম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে তা-ই শেখাবো, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা আমাদেরকে শেখাতেন। তিনি বলতেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَالْهَرَمِ، وَعَذَابِ الْقَبْرِ، اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ قَلْبٍ لَا يَخْشَعُ، وَمِنْ نَفْسٍ لَا تَشْبَعُ، وَعِلْمٍ لَا يَنْفَعُ، وَدَعْوَةٍ لَا يُسْتَجَابُ لَهَا
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল আঝযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল বুখলি ওয়াল ঝুবনি, ওয়াল হারামি, ওয়া আজাবিল ক্বাবরি।
আল্লাহুম্মা আতি নাফসি তাক্বওয়াহা, ওয়া যাককিহা আংতা খাইরু মান যাক্কাহা, আংতা ওয়ালিয়্যুহা ওয়া মাওলাহা।
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন ক্বালবিন লা ইয়াখ্শাউ, ওয়া মিন নাফসিন লা তাশবায়ু, ওয়া ইলমিন লা ইয়ানফায়ু, ওয়া দাওয়াতিন লা ইয়ুসতাঝাবু লাহা।’ (নাসাঈ)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই অপারগতা ও অলসতা থেকে। কৃপণতা ও কাপুরুষতা থেকে। চরম বার্ধক্য এবং কবর আযাব থেকে।
হে আল্লাহ! আমার আত্মায় তাকওয়া বা ভয় দান করুন। আর একে (আত্মাকে) মন্দ কাজ থেকে পবিত্র করুন; আপনিই উত্তম পবিত্রকারী আর আপনিই (আত্মার) বন্ধু এবং মালিক।
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে ওই অন্তর থেকে আশ্রয় চাই যে অন্তর ভীত হয় না, আর ওই আত্মা থেকে যা তৃপ্ত হয় না, ওই ইলম বা জ্ঞান থেকে যা উপকারে আসে না। আর ওই দোয়া থেকে যা কবুল করা হয় না।’
হাদিসে পাকের এ দোয়ায় ওঠে এসেছে মানুষের যাবতীয় অযোগ্যতা ও অপারগতার কথা। আল্লাহ তাআলঅ তার রহমতে এগুলো থেকে মানুষকে হেফাজত না করলে বান্দার এসব বিষয় থেকে মুক্ত থাকার কোনো শক্তি নাই।
সুতরাং আল্লাহর রহমতের আশায় প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো ভাষায় হৃদয়ে গভীর থেকে তারই কাছে প্রার্থনা করা একান্ত আবশ্যক।
আশা করা যায়, মাসনুন দোয়াগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করলে তিনি বান্দাকে যাবতীয় অযোগ্যতা ও অপারগতা থেকে মুক্ত করবেন। ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাসনুন দোয়াগুলোর মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা পূরণে তার কাছে ধরণা দেয়ার তাওফিক দান করুন। অফুরন্ত রহমত বরকত ও মাগফেরাত দান করুন। আমিন।
সর্বশেষ আপডেট: ৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:১৯
পাঠকের মন্তব্য