বরগুনার আমতলীতে স্বামীর সন্ধান চাওয়ায় ছেলের বউকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে হলদিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সহিদুল ইসলাম মৃধার বিরুদ্ধে। গতকাল (রবিবার) সকালে রংপুরের কোতোয়ালি থানায় ভিকটিম ফারজানা রশীদ স্বপ্নীল এই মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
জানা যায়, চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলাম মৃধার একমাত্র পুত্র সাইমুম ইসলাম সরোজ সিরাজগঞ্জের হারুন অর রশীদের কন্যা ফারজানা রশীদ স্বপ্নীলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হন। পরে ২০১৭ সালের ৬ই নভেম্বর ঢাকার ধানমন্ডিতে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়েতে কাবিন হয়েছিল ১০ লাখ টাকা। ফারজানা রশীদ স্বপ্নীল রংপুর মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত। পড়াশোনা চলমান থাকায় তিনি রংপুরে থাকেন আর স্বামী সরোজ মোহাম্মদপুর হাউজিং এর রোড নং -০৮, বাড়ি নং -১২৭ ঢাকা মহানগরে বসবাস করেন। হঠাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে তার স্বামীর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এমনকি স্বামী সরোজের মুঠোফোনটিও সচল নয়।
তাই স্বামীর অবস্থান জানতে স্বপ্নীল শ্বশুর সহিদুল ইসলাম মৃধাকে ফোন দেয় এবং তার স্বামীর অবস্থান জানতে চায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি তার পুত্রবধূর সাথে অশালীন আচরণ করেন। তাছাড়া স্বামীর সন্ধান তো দূরের কথা, লোকজন লাগিয়ে দিয়ে তার জীবনের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেয়। এজন্য স্বপ্নীল কোতোয়ালি থানায় স্বামী নিখোঁজ ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এ বিষয়ে ফারজানা রশীদ স্বপ্নীল বলেন, “আমার শ্বশুর কিছুদিন আগে ঢাকায় আসছিল। তারপর থেকেই আমার স্বামীর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। আমি পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে আমার স্বামীর সাথে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখানেও আমাকে আত্মীয়-স্বজনের সামনে অপমান করা হয়। সরোজের ছোট বোন সারা ও তার হাসবেন্ড সামনে থাকায় এবং স্বামীর সংসার টিকিয়ে রাখতে আমি সব অপবাদ ও অপমান নীরবে সহ্য করেছি”।
তিনি আরও বলেন, “স্ত্রী হিসাবে স্বামীর সন্ধান চাওয়া তো অপরাধ নয়। এমনকি আমার বাবাও আমার শ্বশুরকে ফোনে বলেছেন আমার মেয়েটা অসুস্থ। আপনি দয়া করে সরোজের অবস্থান নিশ্চিত করুণ। কিন্তু তিনি তা মূল্যায়ন করেননি। তাই বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আশা করছি আইন আমাকে আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন না”।
ফারজানা রশীদ স্বপ্নীল দাবি করেন, “স্বামী সাইমুম ইসলাম সরোজকে তার শ্বশুরই লুকিয়ে রেখেছেন। কারণ স্বামীর সাথে তার খারাপ সম্পর্ক ছিল না। তাই তার স্বামী কখনোই নিজ থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করবেন না। স্বপ্নীল মনে করেন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা নষ্ট করতেই তার প্রভাবশালী শ্বশুর একটা ষড়যন্ত্র করছে”।
স্বামীর সন্ধান না পেলে আপনি কি করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ফারজানা রশীদ স্বপ্নীল বলেন, “স্বামীকে ফিরে পেতে আমার যতটুকু করা দরকার ঠিক ততটুকুই করবো। আপাততঃ সাধারণ ডায়েরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে ইচ্ছুক”।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলাম মৃধার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া সত্বেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আমতলী মডেল থানার ওসি মো. আবুল বাশার বলেন, আমরা বিষয়টি অবগত নই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
সর্বশেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ২৩:৫৫
পাঠকের মন্তব্য