ভারতে কমেছে চিনির দাম। এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে চোরাকারবারিরা। প্রতিদিনই মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে চিনি আসছে দেশে। এতে করে চোরাকারবারি ও কিছু ব্যবসায়ী লাভবান হলেও রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুলাউড়া উপজেলার ফুলতলা, চাতলাপুরসহ সীমান্তের কয়েকটি স্পট দিয়ে প্রতিদিন আনা হচ্ছে ভারতীয় চিনি। সাধারণত ভোরে সীমান্ত এলাকার নিরীহ সাধারণ লোকদের দৈনিক ভিত্তিতে মজুরি দিয়ে এ চিনি আনা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, শমশেরনগরের স্থানীয় চোরাকাবারিসহ কমলগঞ্জ ও কুলাউড়ার একটি প্রভাবশালী মহল অবৈধ চিনি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। সীমান্ত অতিক্রম করেই তারা ভারতীয় বস্তা পরিবর্তন করে দেশীয় বস্তা দিয়ে চিনি পরিবহন করছে। ফলে প্রশাসন ইচ্ছে করলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে ভারতে প্রতি কেজি চিনির দাম ৪৪ রুপি। ৫০ কেজি বস্তার দাম ২ হাজার ২০০ রুপি। দেশের বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায়। মুদি দোকানিরাও অবৈধ চিনি কিনে দেশীয় চিনির তুলনায় লাভবান হচ্ছেন। তবে ভোক্তারা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা দামেই কিনছেন এই চিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শমশেরনগর বাজারের দুজন ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় চিনি কিনে বিক্রি করছি। শমশেরনগর ভেতর বাজারের এক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে তুলনামূলক কম দামে ভারতীয় চিনি পাওয়া যাচ্ছে। তিনি একবার অকশনের মাল কেনেন পরে পুরো মাস অবৈধভাবে আসা চিনি সরবরাহ করেন।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি সূত্র জানায়, কিছুদিন আগে মৌলভীবাজারে ১৬০ বস্তা চিনিসহ ট্রাক র্যাবের গোয়েন্দা আটক করে। পরে উচ্চ মহল থেকে ফোন আসার কারণে ছেড়ে দিতে হয়েছে। দেশীয় চিনির দাম বেশি থাকায় আর তুলনামূলক ভারতীয় চিনির দাম কম থাকায় চোরাকারবারিরা কৌশলে অবৈধ চিনি কিনে আনছে।
এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের সহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আসলে এই বিষয়টি পুলিশ দেখলে ভালো হয়। সেখানে মামলার বিষয়ও সম্পৃক্ত। তারপরও অভিযানে আসলে তা খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। একই সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে আরও খোঁজখবর নিচ্ছি। সঠিক তথ্য পাওয়া গেলেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সর্বশেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৩, ০০:২৯
পাঠকের মন্তব্য