সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে ঢাকার মহাসমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করেছে বিএনপি। দলটির পছন্দের স্থানে অনুমতি প্রদান নিয়ে নানা নাটকীতার পর পূর্বঘোষিত ২৭ জুলাইয়ের পরিবর্তে আগামীকাল ২৮ জুলাই নয়াপল্টনেই করার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার রাত ৯টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মসূচি পরিবর্তনের এই ঘোষণা দেন।
এর আগে গত ২২ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারুণের সমাবেশ থেকে ২৭ জুলাই রাজধানীতে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব। মহাসমাবেশটি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও নয়াপল্টনে করার জন্য গত ২৩ জুলাই ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) চিঠি দেয় বিএনপি। তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের বিষয়ে উচ্চ আদালতের আপত্তি এবং কর্ম দিবসে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে জনদুর্ভোগের অজুহাতে সমাবেশ অনুষ্ঠানে আপত্তি জানিয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে বিএনপিকে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করতে পরামর্শ দেয়া হয়। এরপর বিকেল থেকেই দফায় দফায় দলটির শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসেন। রাত ৯টায় বৈঠক শেষে মহাসমাবেশ একদিন পিছিয়ে ২৮ জুলাই নয়াপল্টনেই করার ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, অনির্বাচিত ও অবৈধ ক্ষমতাসীন সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, অনাচার, গুম, খুন, অত্যাচার নিপীড়নের শিকার জনগণের রক্তার্জিত স্বাধীনতার সুবর্ণ ফসল গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন আজ এক দফার আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এই আন্দোলনের অংশ হিসাবে বিএনপিসহ দেশের সকল গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ২৭ জুলাই রাজধানী ঢাকায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ সহ নানা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিল।
আমরা মহাসমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টনের কথা গত ২৩ জুলাই ডিএমপি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উচ্চ আদালতের আপত্তি এবং কর্ম দিবসে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে জনদূর্ভোগের অজুহাতে সমাবেশ অনুষ্ঠানে আপত্তি জানিয়েছে। যদিও ইতোপূর্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবং কর্ম দিবসে নয়াপল্টনে অসংখ্য সমাবেশÑমহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের দৃষ্টান্ত রয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি বরাবরই শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী বিধায় সরকার ও সরকার দলীয় বিভিন্ন বাহিনীর নানা উষ্কানি এমনকি গত প্রায় এক বছরে ২০ জন নেতা-কর্মীর হত্যা ও অসংখ্য নেতা-কর্মী নির্যাতিত হওয়ার পরেও সীমাহীন ধের্য্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছে। এমনকি এই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশে অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন হোটেল এবং সারা দেশে নেতা-কর্মীদের বাসা বাড়িতে পুলিশি তল্লাশী চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে আগামী ২৮ জুলাই শুক্রবার-সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেলা ২টায় নয়াপল্টনে পূর্ব ঘোষিত মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিচ্ছি। আমরা আশা করি, দেশে গণতন্ত্র পূণঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অংশ হিসাবে আয়োজিত এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে সরকার কিংবা সরকারের কোন প্রতিষ্ঠান বাধা সৃষ্টি করবে না। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আয়োজিত যেকোন গণতান্ত্রিক কর্মসূচী বাধাগ্রস্থ করার যেকোন অপচেষ্টা দেশবাসী প্রকৃত পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বাধা সৃষ্টি হিসাবেই দেখবে এবং এমন অপচেষ্টায় নিয়োজিতদের গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা সৃষ্টিকারী হিসাবেই গণ্য করবে।
এদিকে গত মঙ্গলবার থেকেই বিএনপির মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করার জন্য দলের নেতাকর্মীরা সারাদেশ থেকে ঢাকায় প্রবেশ করতে থাকেন। গতকাল সারাদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে, প্রাইভেট গাড়িতে করে ঢাকায় আসেন। এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকায় বিভিন্ন হোটেলে এবং সারাদেশে নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করা হয় বলে অভিযোগ করে বিএনপি। তবে কোন বাধাই অতীতের মতো এবারও মহাসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজনীতির মাঠ। সরকার পতনে দাবি আদায়ে একের পর এক কর্মসূচি পালন করছে রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি। সভা, সমাবেশ, পদযাত্রাসহ প্রতিটি কর্মসূচিতে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণের সাফল্য দেখে এখন এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। সরকার পদত্যাগের দাবি মানতে বাধ্য করতে চূড়ান্ত পর্যায়ের এই আন্দোলনে রাজধানীকে টার্গেট করেই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বিএনপি। এলক্ষ্যে রাজধানীর মহাসমাবেশ থেকে আল্টিমেটাম, ঘেরাওসহ লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা আসতে পারে। যার কেন্দ্রে থাকবে রাজধানী। এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে চায় বিএনপি। তবে সরকারের অবস্থান ও পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যেকোন সময় আন্দোলনের গতিবিধি পরিবর্তন হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলটির একাধিক শীর্ষ নেতা। বিএনপির পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে একই ধরণের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকছে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ৩৫টি রাজনৈতিক দল ও জোটও। এদিকে বিএনপির কর্মসূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে শান্তিসমাবেশ, শোভাযাত্রার মতো কমসূচি নিয়ে একই দিনে মাঠে থাকছে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনগুলো।
বিএনপির কর্মসূচি পরিবর্তনের পর যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্যান্য ৩৫টি রাজনৈতিক দলও তাদের মহাসমাবেশ, সমাবেশ, বিক্ষোভ কর্মসূচি একদিন পিছিয়ে শুক্রবার করেছে। বিএনপির সঙ্গে যুগপতে থাকা অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও জোটের মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি পূর্বপান্থপথস্থ এফডিসি সংলগ্ন এলডিপি কার্যালয়ের সামনে, গণতন্ত্র মঞ্চ প্রেসক্লাব এলাকায়, ১২ দলীয় জোট বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট বিজয়নগর আলরাজী কমপ্লেক্সের সামনে, বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি বিজনয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে, গণঅধিকার পরিষদ বিজয়নগর কালভার্ট রোডে, সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহাসমাবেশ করবে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে সরকারকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিতে পারে বিএনপি। সেখান থেকে সরকারকে পদত্যাগের জন্য ৪৮ কিংবা ৭২ ঘণ্টা সময় বেধে দেয়া হবে। এরপরও পদত্যাগ না করলে সচিবালয় কিংবা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেয়া হতে পারে। তবে চূড়ান্ত আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু থাকছে ঢাকা। ঢাকাকে ঘিরেই কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবেন দলটির নেতাকর্মীর। প্রতিটি কর্মসূচিই শান্তিপূর্ণভাবে পালনের নির্দেশনা দিয়েছে দলের হাইকমান্ড। কিন্তু যদি সরকার যদি হার্ডলাইনে যায় তাহলে পরিস্থিতি বুঝে ভিন্ন কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিটি কর্মসূচি ঘোষণার ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা ও গোপনীয়তা অবলম্বন করছেন দলটির নেতারা। সকলের সঙ্গে আলোচনার পর শেষ মুহূর্তে জানানো হচ্ছে পরবর্তী কর্মসূচি।
এদিকে ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। বিএনপি নেতারা বলছেন, শুক্রবার তারা স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি লোকসমাগম ঘটাবেন। শান্তিপূর্ণভাবে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সরকার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টি করলে নেতাকর্মীরা বসে থাকবে না।
জানা গেছে , মহাসমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দফায় দফায় নয়াপল্টন ও গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক করেন দায়িত্বশীল নেতারা। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা পৃথকভাবে বিভিন্ন ইউনিটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। কারা কোথায় দায়িত্ব পালন করবেন সেই তালিকাও সম্পন্ন হয়েছে। একইসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে সদস্য সচিব করে মহাসমাবেশের উপ-প্রস্তুতি কমিটি করেছে বিএনপি। সেখানে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি’র আহ্বায়কদের রাখা হয়েছে। মির্জা আব্বাসের বাসায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। নেতাকর্মীদের নিয়ে আগেভাগেই মহাসমাবেশস্থলে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত স্থান ত্যাগ না করতে নির্দেশনা আসে প্রস্তুতি সভায়। কর্মসূচির বিষয়ে এরইমধ্যে দলীয় প্রধান খালেদা জিয়াকে অবহিত করেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মহাসমাবেশের আগের দিন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গেও বিএনপি নেতারা বৈঠক করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক নেতা বলেন, এবারের মহাসমাবেশ ঘিরে নতুন দিক রয়েছে। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে প্রথমবারের মতো খালেদা জিয়ার উপস্থিতি ছাড়া দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একই দিন ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে। মহাসমাবেশের আগে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য নেতাকর্মী এবং জনসাধারণের মধ্যে ইতিবাচক সারা ফেলেছে। মহাসমাবেশ ঘিরে প্রথমবারের মতো প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে দলের পক্ষ থেকে মহাসচিব বিবৃতি দিয়েছেন। দল এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ইউনিটের বাইরে ও ইউনিয়ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের তাদের অনুসারী শুভাকাক্সক্ষীদের নিয়ে মহাসমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
মহাসমাবেশে ৫ লাখ লোকের সমাগম ঘটাতে চায় বিএনপি। এজন্য ঢাকা মহানগরকে সর্বোচ্চ সংখ্যক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কর্মসূচিতে যেন সাধারণ মানুষও স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশ নেন এজন্য প্রচারপত্র বিলি, লিফলেট বিতরণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণাও চালানো হয়েছে। এছাড়া ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলাগুলো থেকেও নেতাকর্মীদের ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দিতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা পেয়ে গতকাল বুধবারের মধ্যেই ঢাকার বাইরের বেশিরভাগ নেতাকর্মী ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। তবে পথে পথে নেতাকর্মীদের হয়রানি, পুলিশের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসার মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক নেতা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ঠেকাতে সারাদেশ থেকে পুলিশ নেতা-কর্মীদের আটক করছে। তিনি বলেন, আমাদের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। মহাসমাবেশে জনতার ঢল নামবে। আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। নেতা-কর্মীরা সরকারের সকল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে সফল করবেন। কারণ সময় এসেছে রাজপথে ফায়সালা করার।
জানা যায়, ময়মনসিংহ, জামালপুর, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, মুন্সিগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী এসব এলাকা থেকে তুলনামূল কম বেশি নেতাকর্মী ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। অন্যদিকে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ,সুনামগঞ্জ, কক্সবাজার, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম থেকে তুলনামূলক কম সংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকার কর্মসূচিতে যোগ দেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, আমরা মহাসমাবেশ সফল করতে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানার নেতৃবৃন্দকে নিয়ে পৃথকভাবে সভা করা হয়েছে। সকলকে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকাবাসী যেন স্বত:স্ফূর্তভাবে মহাসমাবেশে অংশ নেন এজন্য প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে।
তিনি বলেন, হাতেগোনা কিছু সুবিধাভোগী ছাড়া এই সরকারের দুঃশাসনে বেশিরভাগ মানুষ নির্যাতিত, নিপীড়িত। তারাও এই সরকারের পদত্যাগ চাই। আমরা চাই তারা বিএনপির এই মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে আমাদের দাবি এবং তাদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করুক।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের জন্য মুখিয়ে আছে। এর প্রমাণ হচ্ছে বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচি। সভা, সমাবেশ, পদযাত্রা প্রতিটি কর্মসূচিতেই দেখা গেছে মানুষ স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে। একেকটি কর্মসূচির চেয়ে পরেরটিতে মানুষের অংশগ্রহণ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজধানী থেকেই যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তাই আমরা ঢাকাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। ঢাকায় যদি সফল হওয়া যায় তাহলেই ঢাকার বাইরের আন্দোলন স্বাভাবিকভাবেই সফল হবে। এজন্য সামনের দিনের কর্মসূচিতে ঢাকাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
নয়াপল্টনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, জলকামান, রায়ট কার: গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ধেকেই রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। বিকেল পর্যন্ত নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে থাকলেও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ নেতাকর্মীদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেন। সন্ধ্যার সময় কার্যালয়ের দুই পাশে রাস্তায় দুটি জলকামান ও একটি রায়ট কার দাঁড় করিয়ে রাখে পুলিশ। কার্যালয়ের তিন পাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন বলেন, যেহেতু বিএনপিকে নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি, তাই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।
সর্বশেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩, ০১:৫৭
পাঠকের মন্তব্য