অসম্ভবকে সম্ভব করাই যেন টাইগারদের কাজ। টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের পর আয়ারল্যান্ড জয়। এবার নিজেদের মাঠে শক্তিশালী আফগানদের গুড়িয়ে দিল সাকিববাহিনী। ব্যাট বলে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে জয়। এ জয়ের ফলে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-০ তে জিতল টাইগাররা। একই সাথে প্রথমবার টানা তিন সিরিজ জয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অনন্য উচ্চচায় পৌঁছে গেল টাইগারা।
বৃষ্টি ভেজা মাঠে ১৭ ওভারের খেলায় ৭ উইকেটে ১১৬ রানে থামে আফগানরা। তবে ডিএলএস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ১১৯ রানে। সেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৬.১ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯ রান তুলে নেয় বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচে অবিশ্বস্য জয়ের পর রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়ন্টিতে আফগানদের হারাতেই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। সেই মিশনে সিলেটে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে তাসকিনের হাতে বল তুলে নেন ক্যাপ্টেন সাকিব। বল হাতে শুরুতেই আফগান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন ডানহাতি এই পেসার। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা হজম করে পরের বলেই ওপেনার গুরবাজকে ফেরান তিনি। ফলে ৫ বলে ৮ রান করে ফেরেন গুরবাজ।
এরপর তৃতীয় ওভারে এসে জাজাইকে তুলে নেন তাসকিন। ৫ বলে মাত্র ৪ রান করেন তিনি। আফগানদের উড়ন্ত শুরুর পরও পাওয়ার প্লেতে মাত্র ৩৪ রান দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু অষ্টম ওভারে সাকিব বোলিং করার মাত্র ২ বলের মাথায় হানা দেয় বৃষ্টি। এরপর বৃষ্টির কারণে খেলা নেমে আসে ১৭ ওভারে। বৃষ্টির বাধার পর আর ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেনি শুরুর ধাক্কা সামলে হাল ধরা দুই ব্যাটার মোহাম্মদ নবি ও ইব্রাহিম জাদরান। তাদের পর সাজঘরের পথ ধরেছেন নাজিবুল্লাহ জাদরান।
দুবার জীবন পাওয়া নবিকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। ইব্রাহিম ও নাজিবুল্লাহকে ফিরিয়েছেন সাকিব আল হাসান। নবি ১৬, ইব্রাহিম ৫ ও নাজিবুল্লাহ ৫ রান করে বিদায় নেন। ১১ ওভার শেষে আফগানদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৬৭ রান। এরপর আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। ২১ বলে ২৫ রান করে শামিমের তালুবন্দি হন আজমতউল্লাহ। ইনিংসের শেষ ওভারে ২৯ রান করা করিম জানাতকে ফিরিয়ে তিন উইকেট পূর্ণ করেন তাসকিন। তবে রশিদ ৬ ও মুজিবুর ১ রান করে অপরাজিত থাকেন। তাতে ১৭ ওভারে ৭ উইকেটে ১১৬ রানে থামে আফগানরা। তবে ডিএলএস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ১১৯ রানে।
ইতিহাস গড়ারার সেই লক্ষ্যে আফিফ হোসেনকে সাথে নিয়ে ওপেনিংয়ে ঝড় তোলেন লিটন দাস। ১০ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ২২ রান তোলেন এই ওপেনার। দ্বিতীয় ওভারেই ১৭ রান তোলে তারা। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ৫ ওভারে ৫০ পূর্ণ করে দুই ওপেনার। ব্যাটিংয়ের শুরু থেকে আক্রমাত্মক ছিলেন তিনি। তবে অপফর্মে থাকা আফিফ হাত খোলেন একটু দেড়িতে। বাউন্ডারি ছাড়াই দুটি বিশাল ছক্কায় ১৯ বলে ২৪ রান তুলে নেন আফিফ।
ঝড়ো শুরুর পর ইনিংসের ১০ম ওভারে বিদায় নেন ওপেনার লিটন। মুজিবুর রজমানের বলে রশিদের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে ৩৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৩৫ রান করেন এই ওপেনার। দারুণ শুরুর পর ঐ ওভারেই বিদায় নেন আফিফ। মুজিবরের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডাতে করিমের হাতে ক্যাচ দেন আফিফ। ২০ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২০ রান করেন তিনি।
১০ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের দলীয় রান তখন ৭০। ১১তম ওভারের শেষ বলে আজমতউল্লার বলে বোল্ড শান্ত। এরপর হৃদয় ও সাকিবের জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল দর্শকরা। ঠিক তখনই বিদায় নেন হৃদয়। ১৭ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৯ রান করে আজমতের বলে নবির তালুবন্দি হন। এরপর সাকিবের সাথে জুটি গড়ে ম্যাচে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন শামিম হোসেন। সাকিব ১১ বলে ১৮ ও শামিম ৭ বলে ৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। ফলে ১৬.১ ওভারে ৬ উইকেটের বড় জয় টাইগারদের।
সর্বশেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩, ০০:৩১
পাঠকের মন্তব্য