ঢাকাই সিনেমার নন্দিত চিত্রনায়ক রিয়াজ। নব্বই দশকের শেষদিকে লাভার বয় খেতাব পাওয়া এই নায়ক বহুমাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় নায়কদের একজন হিসেবে।
আজ ঢাকাই ছবির অন্যতম রোমান্টিক নায়ক রিয়াজের জন্মদিন। ১৯৭২ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
জন্মদিন উপলক্ষে রিয়াজ অভিনীত ১২টি দর্শকপ্রিয় সিনেমা নিয়ে উৎসব আয়োজন করেছে নাগরিক টেলিভিশন। আগামী ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন একই সময়ে দেখানো হবে সিনেমাগুলো।
নাগরিক টিভির অনুষ্ঠান প্রধান কামরুজ্জামান বাবু জানান, ছবিগুলোর মধ্যে ২৬ অক্টোবর সকাল ৮টায় দেখানো হবে ‘মনে পড়ে তোমাকে’, বেলা ১১টায় ‘মিলন হবে কতো দিনে’, বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে ‘বুক ভরা ভালোবাসা’ আর রাত ১১টা ২০ মিনিটে ‘হৃদয়ের আয়না’।
২৭ অক্টোবর পর্যায়ক্রমে একই সময়ে প্রচার হবে ‘মেঘের কোলে রোদ’, ‘গুণ্ডার প্রেম’, ‘মন ছুঁয়েছে মন’ ও ‘স্বপ্নের পুরুষ’। আর ২৮ অক্টোবর শেষ দিনের আয়োজনে দেখানো হবে ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’, ‘হৃদয়ের বন্ধন’, ‘নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’ এবং ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’।
এমন আয়োজনে বেশ আনন্দিত রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘নাগরিকের মাধ্যমে এবারই প্রথম কোনো চ্যানেল আমার জন্মদিনে এতগুলো ছবি একসঙ্গে প্রদর্শনের উদ্যোগ নিয়েছে। এটা খুবই ভালো লাগার বিষয়। ধরে নিচ্ছি এই ভালোবাসাই আমার জন্মদিনের বড় উপহার। আশা করছি, ছবিগুলো যারা দেখেননি, তারাও উপভোগ করবেন।’
প্রয়াত নায়ক জসীমের হাত ধরে ‘বাংলার নায়ক’ নামের চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রিয়াজের অভিষেক হয় ১৯৯৫ সালে। ১৯৯৭ সালে মহম্মদ হান্নান পরিচালিত ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’ ছবির মাধ্যমে জনপ্রিয় নায়কে পরিণত হন এই নায়ক।
এরপর সালমান শাহের মৃত্যুতে যে শূণ্যতা দেখা দেয় প্রযোজক ও পরিচালকরা রিয়াজকে বেছে নেন সেই শূণ্যতা পূরণের নায়ক হিসেবে। শাবনূরের সঙ্গে জুটি বেঁধে আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পান রিয়াজ। নানা কারণে সেই জুটি ভেঙ্গে গেলে পূর্ণিমার সঙ্গেও জুটি বেঁধে দারুণ সাফল্য পান রিয়াজ।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করা রিয়াজ উপহার দিয়েছেন ‘নারীর মন’, ‘বিয়ের ফুল’, ‘এই মন চায় যে’, ‘হৃদয়ের আয়না’, ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘স্বপ্নের বাসর’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘হৃদয়ের বন্ধন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘কাজের মেয়ে’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘সাবধান’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘খবরদার’, ‘লাল দরিয়া’, ‘মিলন হবে কতদিনে’, ‘শাস্তি’, ‘কি যাদু করিলা’, ‘হাজার বছর ধরে’, ‘পাগল তোর জন্য’সহ অসংখ্য ব্যবসা সফল ও প্রশংসিত সিনেমা।
এছাড়াও রিয়াজ ভারতীয় চলচ্চিত্রকার ও অভিনেতা মহেশ মাঞ্জরেকারের ‘ইট ওয়াজ রেইনিং দ্যাট নাইট’ নামে একটি ইংরেজি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। কলকাতার সঙ্গে বেশ কিছু যৌথ প্রযোজনার ছবিতেও দেখা গেছে তাকে।
অনেকদিন ধরেই সিনেমাতে অনিয়মিত তিনি। তবে সম্প্রতি আবারও নতুন করে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী বছর থেকে প্রযোজনাতেও দেখা যেতে পারে এমনটাও জানালেন একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাতকারে।
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। চলচ্চিত্রগুলো হলো- ‘দুই দুয়ারী’ (২০০০), ‘দারুচিনি দ্বীপ’ (২০০৭) ও ‘কি যাদু করিলা’ (২০০৮)।
সর্বশেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯, ২০:৪৪
পাঠকের মন্তব্য