চাপ নেই, লাভই দেখছে আ.লীগ

মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্স :

মার্কিন প্রতিনিধিদের সফর কোনো চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি বলে দাবি ক্ষমতাসীনদের। উলটো জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাদের এই সফর ও আলোচনায় নিজেদের লাভই দেখছে আওয়ামী লীগ। 

ক্ষমতাসীন দলটির মন্ত্রী ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, বিএনপি মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বিদেশিদের কাছে যে পক্ষপাতমূলক সমর্থন চেয়েছিল, সেটা ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি আশা করেছিল, বিদেশি প্রতিনিধিরা এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের কথা বলবে। কিন্তু এটা কেউ বলেনি। বরং বাংলাদেশে এসে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান তারা উপলব্ধি করতে পেরেছে। বিএনপি অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়তে গিয়ে নিজেরাই সেখানে পড়েছে। সরকারকে চাপে ফেলতে গিয়ে তারাই উলটো চাপে পড়েছে।

এ বিষয়ে শুক্রবার ধানমন্ডিতে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা বলেছে- একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন তাদের কাম্য। বন্ধু দেশ হিসেবে তারা এ কথাগুলো বলেছে। ভিসানীতি আসবে, এ ধরনের কোনো উক্তি তারা করেননি। সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা তারা বলেছেন। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে তারা কিছু বলেননি। এটাই ছিল তাদের বক্তব্যের মূল কথা।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি- বিএনপি মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বিদেশিদের কাছে যে পক্ষপাতমূলক সমর্থন চেয়েছিল, সেটা ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সবাই একমত, আমরা সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন করব।

এদিন চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি আশা করেছিল বিদেশি প্রতিনিধিরা এসে একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের কথা বলবে। কিন্তু এটা কেউ বলেনি। কারো সঙ্গে কোনো আলাপে এই প্রসঙ্গটাই আসেনি। বিএনপির একদফা হচ্ছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকার গঠন। এটি বাংলাদেশে যেমন হালে পানি পায়নি, বিদেশিদেরও সমর্থন তারা পায়নি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় শুক্রবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফর নিয়ে কথা বলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তিনি বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দল আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। নির্বাচনে যাতে সহিংসতা না হয় সেটাই তাদের কাম্য। মন্ত্রী আরও বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশে সেই আইনি ব্যবস্থা আছে, আইনি অবকাঠামোও আছে। আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, মার্কিন ও ইইউ প্রতিনিধিরা যেভাবে আলাপ-আলোচনা করেছেন তা থেকে আমরা যা বুঝতে পেরেছি- বিএনপি তাদের যেভাবে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করেছিল তা সফল হয়নি। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থানও তারা উপলব্ধি করতে পেরেছে। এজন্যই তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো কথা বলেনি।

তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, বিএনপি ব্যর্থ হয়েছে। তারা অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়তে গিয়ে নিজেরাই সেখানে পড়েছে। তারাই উলটো চাপে পড়েছে। ফলে বিগত সময়ের মতো হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি না দিয়ে পদযাত্রার মতো দুর্বল কর্মসূচি দিচ্ছে। আসলে তারা নির্বাচনে আসার প্রস্তুতিও নিচ্ছে।

আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ বলেন, যদিও তারা (বিদেশিরা) আমাদের উন্নয়ন সহযোগী কিন্তু আমি সব সময় মনে করি, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে আলোচনা করাটা শোভন নয়। তবুও আমাদের কথা বলতে হয়, আলোচনা করতে হয়। কারণ বিএনপি সব সময় তাদের কাছে নালিশ করে।

তিনি আরও বলেন, বিরোধী দল হয়তো বিদেশিদের বোকা ভাবে কিন্তু আসলে তারা তো বোকা নয়। ফলে তাদের ভুল বোঝাতে পারেনি। যারা বাংলাদেশে এসেছেন তারা সবকিছু দেখেছেন। তাদের কাছেও তথ্য আছে। ফলে তারা অন্য কিছু বলেননি। শুধু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছেন। সেটা তো আমরাও চাই। আমরাও তাদের সেটাই বলেছি।

সর্বশেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৩, ০১:৪৩
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও