ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ-উদ-দৌলার ঘরে এখন তালা ঝুলছে। জানা গেছে, রায়ের ৪-৫ দিন আগ থেকেই তার বাসায় তালা ঝুলছিল। অপরদিকে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি রহুল আমিনের বাড়িতে এখন ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। রুহুল আমিন একইসঙ্গে মাদ্রাসার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষন অত:পর
কীভাবে হত্যা করতে হবে তারও নির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনাও দেন অধ্যক্ষ সিরাজ। পুড়িয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
অপরদিকে নুসরাত হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি রুহুল আমিনের আলিশান বাড়ি এখন ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। বাড়ি ও তার আশপাশে এখন শুনসান নীরবতা। শুক্রবার বিকালে সোনাগাজী পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের গনেশ গ্রামে তার বাড়িতে গিয়ে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়।
ওই বাড়িতে যাওয়ার পথে দেখা যায়, রাস্তায় প্রহরায় রয়েছে তার কিছু ঘনিষ্ঠ কর্মী। তারা বললেন, লিডারের (রুহুল আমিন) সাজাতো আপনাদের চাওয়া অনুযায়ী আদালত দিয়ে দিয়েছেন। এরপর আর কী নতুন করে জানতে আসলেন?
স্থানীয় এক দোকানি জানান, রুহুল আমিন জেলে যাওয়ার পর বাড়িটি এখন নীরব। দেখলে মনে সেখানে ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।
নুসরাত হত্যাকাণ্ডে যেভাবে জড়ায় রুহুল আমিন
নুসরাতের গায়ে কেরাসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে পুলিশ প্রশাসন ম্যানেজ করার আশ্বাস দেয় রুহুল আমিন। নুসরাত হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে যা যা করার সব করে সে। ঘটনার পর শামীমের সঙ্গে দুই দফা ফোনে কথা বলে সবকিছু নিশ্চিত করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হাত-পা বেঁধে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি হলো—সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি রুহুল আমিন, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম, মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল কাদের, প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মাদ্রাসার ছাত্র নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ যোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, কামরুন নাহার মণি, উম্মে সুলতানা পপি ওরফে তুহিন, আবদুর রহিম শরিফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন মামুন, মোহাম্মদ শামীম ও মহি উদ্দিন শাকিল।
পাঠকের মন্তব্য