মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শ্রীমঙ্গলস্থ কালাপুর গ্যাস প্লান্টের চাকুরিচ্যুত ২২ কর্মচারী। মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য শ্রমিকদের পক্ষে মো. জাকির হোসেন বলেন, ২০০৪ সাল থেকে আমরা উপজেলার কালাপুরস্থ শেভরণ গ্যাস প্লান্টে এ অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে বিভিন্ন পদে চাকুরি করে আসছি। শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী ২ বছরের মধ্যে কর্মচারীকে স্থায়ীকরণের বিধান রয়েছে।
কিন্তু চাকুরিদাতা প্রতিষ্ঠান সরকারী বিধিবদ্ধ এসব আইন কখনও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেনি। কোম্পানি ২০০৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণ ও বেতন বৃদ্ধি করা হয়নি। এই ব্যাপারে কোম্পানী বরাবর দফায় দফায় লিখিতভাবে আবেদন করা হলেও আমাদের দাবী দাওয়া নিয়ে কোম্পানী আলোচনা পর্যন্ত করেনি। এর প্রতিবাদে ২০১৩ সালে সাধারণ শ্রমিকরা চাকুরি স্থায়ী ও বেতন বৃদ্ধির দাবী নিয়ে ১৫ দিন কর্মবিরতি পালন করি।
কোম্পানী আমাদের চাকুরি স্থায়ীকরণের প্রতিশ্রুতি দেয়ায় আমরা কর্মবিরতির কর্মসূচি থেকে সরে এসে পুনরায় কাজে যোগদান করি। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে ২০২৩ সাল এই ১০ বছরের মধ্যে বেতন বৃদ্ধি বা চাকুরি স্থায়ী করার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
১০ বছরেও চাকুরি স্থায়ীকরণ ও বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা শেভরন কর্তৃপক্ষ বরাবরে কয়েকদফা আবেদন করি। কিন্তু শেভরন কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় আমরা ২০২২ সালের মে মাসে ঢাকা শ্রম আদালতের দ্বারস্ত হই।
মামলা চলাকালে আদালত শেভরন ও নিয়োগকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে এই মামলা চলাকালীন সময়ে ২২ শ্রমিকের কোনো শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেন। আদালতের এমন নির্দেশ থাকা সত্বেও গত ১৩ জুন ২০২৩ তারিখে আমাদের ২২ জনকে চাকুরিচ্যুত করা হয়। এভাবে হঠাৎ করে আমাদের কর্মজীবন অবসান হওয়ায় এই দুর্মুল্যের বাজারে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিপাকে পড়েছি। আমাদের একেকজনের আয়ের উপর ৮/১০ জন পরিবারের মানুষ নির্ভরশীল। সন্তানদের পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার পথে। এ অবস্থায় আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছি।
এ নিয়ে আমরা ২২ জন কর্মচারী সম্মিলিত স্বাক্ষরে বিভিন্ন সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, মৌলভীবাজার গ্যাস প্লান্ট এর সুপারিনটেন্ডেট, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, শ্রীমঙ্গল থানা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, শ্রীমঙ্গল র্যাব ক্যাম্প ইনচার্জকে প্রতিকার চেয়ে পৃথক পৃথক ভাবে পত্র দিয়ে অবহিত করেছি। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাইনি।এ অবস্থায় আমরা সন্তানদের অনিশ্চিত ভবিষ্যত ও পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছেন। সংবাদ সম্মেলন শ্রীমঙ্গলস্থ কালাপুর গ্যাস প্লান্টের চাকুরিচ্যুত ২২ কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন
সর্বশেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩, ০০:৪৫
পাঠকের মন্তব্য