গত শুক্রবার ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বক্তব্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি রাতে যুগান্তরকে বলেন, বক্তব্যটা একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এটা ওইভাবে বলতে চাইনি। সেটা বলতে চেয়েছিলাম সরকারই এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে।’ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি ঠাকুগাঁওয়ে যে কথাটা বলেছিলাম-‘জামায়াতে ইসলামী একটা রাজনৈতিক দল, সে তার নিজস্ব ধারায় রাজনীতি করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, মূল কথাটা হচ্ছে-সরকারের বিরুদ্ধে যারাই আন্দোলন করবে তাদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। আমরা যুগপৎভাবে আন্দোলন করছি, জোটবদ্ধ আন্দোলন করছি না। প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল যারা মনে করে, এই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত তারা করতে পারে এটা স্বাভাবিক। কমিউনিস্ট পার্টি নিজস্ব জায়গা থেকে আন্দোলন করছে, বাসদ নিজস্ব জায়গা থেকে আন্দোলন করছে। জামায়াতে ইসলামী তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে আন্দোলন করছে। অনেক দল আছে, যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে নেই, কিন্তু তারা তাদের মতো আন্দোলন করছে। আমরা তাদের সবাইকে স্বাগত জানিয়েছি।
এর আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এক বিবৃতিতে জানায়, ৩০ জুন কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বরাত দিয়ে ‘সরকারের সঙ্গে জামায়াতের যোগাযোগ এখন স্পষ্ট’ শিরোনামে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তাতে বিস্ময় প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “৩০ জুন শুক্রবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ‘সরকারের সঙ্গে জামায়াতের যোগাযোগ এখন স্পষ্ট’ বলে মন্তব্য করেন মর্মে কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ও অনলাইনে প্রচারিত হয়। বিএনপি মহাসচিবের এ বক্তব্যে জনগণ হতাশ হয়েছে। আমরা বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য সর্বোতভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী অতীতে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মজবুত ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমান স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধেও জামায়াত নিয়মতান্ত্রিভাবে রাজপথে আন্দোলন করে যাচ্ছে। গত ১৫ বছরে জামায়াত সবচাইতে বেশি নির্যাতিত এবং মজলুম। জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দেকে ফাঁসি দেওয়ার পর বর্তমান আমীরে জামায়াত, নায়েবে আমীর, সেক্রেটারি জেনারেল, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকেও কারাগারে আটক রাখা হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী কোনো ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার ও জালেমের সঙ্গে আঁতাত, সমঝোতা বা যোগাযোগ করে কখনো রাজনীতি করে না। করার প্রশ্নই আসে না। কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা ও এক দফার আন্দোলনের জন্য গোটা জাতি যখন ঐক্যবদ্ধ, তখন এ জাতীয় বক্তব্য সরকার বিরোধী আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আরও বলেন, আমরা বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাই। এবং সরকার বিরোধী একদফা আন্দোলন জোরদার করার জন্য সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানাচ্ছি।
সর্বশেষ আপডেট: ২ জুলাই ২০২৩, ০১:৫৬
পাঠকের মন্তব্য