রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম আরও এক দফা বাড়ানো হয়েছে। এই দফায় বেড়েছে ৫০ পয়সা। আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম হবে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা। রপ্তানিতে ডলারের দাম বাড়ানোর কারণে ব্যাংকগুলোর ডলার কেনার খরচ বাড়বে। ফলে আমদানিতেও এর দাম বাড়বে।
তবে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে ডলারের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ডলারের এই নতুন দাম কার্যকর হবে ২ জুলাই থেকে।
সোমবার বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আলোকে ওইদিন রাতেই বাফেদা থেকে এ বিষয়ে একটি চিঠি বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠি অনুযায়ী, রপ্তানিকারকরা ২ জুলাই থেকে প্রতি ডলারে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা করে পাবেন। এখন পাচ্ছেন ১০৭ টাকা। এ খাতে ডলারের দাম বাড়ছে ৫০ পয়সা।
আন্তঃব্যাংকে রোববার প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১০৮ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে ১০৮ টাকা ৯০ পয়সা দরে। এর মধ্যে দুই দিন এর দাম সর্বোচ্চ ১০৯ টাকায় উঠেছে। বাফেদা বলেছে, ২ জুন থেকে আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম ১০৯ টাকার বেশি হবে না। যে ব্যাংক ডলার বিক্রি করবে, তারা ইচ্ছা করলে সর্বোচ্চ ১ টাকা ফি নিতে পারবে। তবে এ ফিসহ ডলারের দাম ১০৯ টাকার বেশি হবে না।
রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ১০৮ টাকা ৫০ পয়সায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এর সঙ্গে প্রবাসীরা সরকারের দেওয়া আড়াই শতাংশ প্রণোদনা পাবেন। এসব মিলে প্রতি ডলারে সর্বোচ্চ ১১১ টাকা ২৫ পয়সা পাবেন। এই দর ১ জুন থেকে কার্যকর করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দিচ্ছে। একই সঙ্গে ডলারের একক দর নির্ধারনের পথে এগোচ্ছে। এটি করা হচ্ছে বাফেদার মাধ্যমে। যে কারণে এখন বাফেদা ব্যাংকগুলোর এমডিদের নিয়ে বৈঠক করে ডলারের দাম নির্ধারণ করে। ডিসেম্বর থেকে প্রতিমাসের শুরুর দিকেই ডলারের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এর আগে ১ জুন থেকে ডলারের দাম বাড়ানো হয়। ওই দর ১ জুলাই পর্যন্ত বহাল থাকবে। ২ জুলাই থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
ঈদের ছুটির কারণে আজ থেকে ব্যাংক বন্ধ। টানা ৫ দিন বন্ধের পর ২ জুলাই ব্যাংক খুলবে। যে কারণে আজ থেকে শনিবার পর্যন্ত ব্যাংকগুলোয় লেনদেন হবে না। ওই সময়ে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় বন্ধ থাকবে। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় ছুটির দিনেও কিছু ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে। যে কারণে মাস শেষ হওয়ার আগেই ডলারের নতুন দাম নির্ধারণ করে তা প্রকাশ করেছে বাফেদা।
এদিকে রপ্তানিতে ডলারের দাম বাড়ায় ব্যাংকগুলোর ডলার কেনার খরচ বেড়ে যাবে। এতে আমদানির ডলারের দামও বাড়বে। ফলে আমদানি খরচও বেড়ে যাবে।
এদিকে জুলাই থেকে ডলারের দর বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ডলারের একক দর পর্যায়ক্রমে কার্যকর করা হচ্ছে। এসব কারণে রপ্তানিতেও ডলারের দাম বাড়ানো হলেও রেমিট্যান্সে বাড়ানো হয়নি। এখনো রপ্তানির ডলারের দামের চেয়ে রেমিট্যান্সের দাম ১ টাকা বেশি। এ অর্থও পর্যায়ক্রমে সমন্বয় করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে এখন ডলার বিক্রি করে ১০৬ টাকা করে। আইএমএফ-এর শর্ত অনুযায়ী আন্তঃব্যাংকের সমান দরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলার বিক্রি করতে হবে। আন্তঃব্যাংকে এখন ডলার ১০৯ টাকার কাছাকাছি। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলারের দামও বাড়াতে হবে।
সর্বশেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৩, ০১:০৩
পাঠকের মন্তব্য