বিদেশী ঋণ আর অর্থনৈতিক দৈন্যতায় বাংলাদেশ কার্যক শ্রীলংকার মতো হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেছেন, দেশের মানুষের অজান্তে দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে অসহনীয় দিন কাটাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সরকার তথাকথিত উন্নয়নের নামে দেশটাকে ঋণনির্ভর করে ফেলেছে। আগামী ৫০ বছর দেশের মানুষকে এই ঋণের বোঝা বইতে হবে। আমরা দেশটাকে শ্রীলংকা হতে দিতে পারি না। গতকাল শনিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাতীয় যুব সংহতির কাউন্সিলে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে ঋণ নিয়েছেন লুটপাটের জন্য। জনগণের মাথায় এই ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন। আপনাদের কাছে যদি অর্থ থাকে, ডলার থাকে; তাহলে কেন কয়লা কিনেননি, কেন কাঁচামাল আমদানি করতে পারছে না ব্যবসায়ীরা? ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করা যায় না কেন?
জিএম কাদের বলেন, সরকার উন্নয়নের নামে লোনের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে জনগণের মাথায়। ব্যাংক, মেগা প্রজেক্ট সবকিছুতে লুটপাট করেন। অর্থ পাচার করেন। শ্রীলংকার মানুষ রাস্তায় নেমেছিল, বাংলাদেশের মানুষ এখনও নামেনি। মূলত শ্রীলংকার পুলিশ গুলি করে না, গুম করে না, শ্রীলংকার পুলিশ মানুষের পক্ষে। বাংলাদেশের পুলিশ মানুষের পক্ষে না। তিনি বলেন, আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমেরিকা দেশের মানুষের উপকার করছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্লাস’ এখন দেশ চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাথে প্রশাসন এক হয়ে গেছে। তারা দেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করেন না।
নিজের আত্মসমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, আমাদের দল জাতীয় পার্টিকে দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। জনগণ মনে করে আমরা (জাতীয় পার্টি) কিছু আসনের বিনিময়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাতে চাই। আমাদের ভেতরে কেউ কেউ গোপনে ষড়যন্ত্র (২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো সীট ভাগ) করছে। জাপাকে আর বেঁচা-কেনা করতে দেওয়া হবে না। জাতীয় পার্টি জনপ্রিয় দল হওয়ার পরও আমাদের মানুষ দালাল হিসেবে চিহ্নিত করে। এটা আর হতে দেওয়া যাবে না।
জি এম কাদের আরো বলেন, সামাজিক-রাজনৈতিক প্রোগ্রামকে বাধা দেয়া হচ্ছে। আমরা উন্নয়নের জন্য কাজ করি। আমরা যাই করি, গোয়েন্দা লাগানো হয়, ফোন ট্যাপ করা হয়। আমরা কি সন্ত্রাসী? যারা দুর্নীতি করে, অর্থ পাচার করে, তাদের প্রতি মুহূর্তের খোঁজ কেন রাখেন না? আওয়ামী লীগ এককভাবে দেশ পরিচালনা করছে না। তাদের সাথে আছে পুলিশ, আরও অনেকে।
জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সম্মেলনে জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক এইচ এম শাহরিয়ার আসিফের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা প্রমুখ।
সর্বশেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৩, ০০:৫৯
পাঠকের মন্তব্য