আওয়ামী লীগ সিট ভাগ করে দিলে ভোটের কি দরকার

মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্স :

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাথে এখন যোগ দিয়েছে পুলিশ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন। তারা একটা নতুন দল হয়েছে ‘আওয়ামী লীগ প্লাস’। সবাই যেনো এখন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন। সবাই এখন আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলে। পার্লামেন্টও এখন আওয়ামী লীগের অঙ্গ হয়েছে। বিচার বিভাগকে আওয়ামী লীগের অঙ্গ বানানোর চেষ্টা চলছে।

কয়েক দিন আগে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেছেন, এক প্রধান বিচারপতিকে নামিয়ে দিয়েছি। প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। গতকাল জাতীয় পার্টি ঢাকা জেলা শাখার দ্বি-বার্ষিক সেেম্মলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, রাজনীতির মাঠে কথা আছে আওয়ামী লীগ জামায়াতকে বিভিন্ন নামে কিছু সিট দিবে। আমাদেরও কিছু সিট দিবে। আমাদের বলা হয়, আপনারা আরো সংগঠিত হন, আপনাদের আরো বেশি সিট দিবে। কে দিবে? আওয়ামী লীগ দিবে? জনগণ ভোট দেবে না? আওয়ামী লীগের নেতা নেত্রীরা সিট দিতে পারে তাহলে নির্বাচনের দরকার কী? তাহলে ঘোষণা দিয়ে দেন কে কে পাশ করেছে। সাংবাদিকরাও প্রশ্ন করছে আওয়ামী লীগ কোন কোন সিট দিবে আপনাদের? নির্বাচনের অর্থ হচ্ছে জনগণ ঠিক করবে কে হবেন তাদের প্রতিনিধি। যদি আওয়ামী লীগই জনপ্রতিনিধি ঠিক করে দেন তাহলে নির্বাচনের প্রয়োজন কেন? আওয়ামী লীগ প্লাস ধংস না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ প্লাস ধংস না হওয়া পর্যন্ত দেশের মানুষের মুক্তি সম্ভব নয়। আইনগতভাবে বাকশাল করা হয়েছিলো। এখন আইনগত ভাবে না করলেও বাকশালের আদলে ‘আওয়ামী লীগ প্লাস’ তৈরী করা হয়েছে। আমাদের দুর্ভাগ্য আর তাদের সৌভাগ্য হলে আগামী নির্বাচনের পর বাকশালের নাম হবে ‘আওয়ামী লীগ প্লাস’।

সম্মেলনে ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি’র নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির আরো বলেন, সারাদেশ গরমে পুড়ছে, সরকারের খবর নেই। সরকার ভাবছে দেশের মানুষ মরণের পরে সবাই দোজখে যাবে। তাই দেশের মানুষকে এই গরমে প্রাকটিস করার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ দাবি করে দেশের মানুষ বেহেস্তে রয়েছে তাহলে তাদের দোজখের প্রাকটিস করাচ্ছে কেন? যারা আমাদের দোজখের প্রাকটিস করাচ্ছেন তারা ভাবছেন তারাই বেহেস্তে যাবেন। আসলে কী তারা বেহেস্তে যাবেন? সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুত দেয়ার কথা বলে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরী করে রেখেছে। তারপরও দেশের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না কেন? আসলে তারা আমাদের বিদ্যুত দেয়ার জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরী করেননি। তারা লুটপাটের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরী করেছে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। আমাদের দরকার ১৪ হাজার মেগাওয়াট আর তৈরী করা হচ্ছে ২৪ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু আমরা পাচ্ছি ১০ হাজার মেগাওয়াটেরও কম বিদ্যুৎ।

জিএম কাদের বলেন, সরকার এখন গ্যাস কিনতে পারছে না, কয়লা কিনতে পারছে না, তেল কিনতে পারছে না টাকার অভাবে। এদেশের গরিব মানুষও বিদ্যুতের বিল বকেয়া রাখেনি তাহলে সরকার কয়লা কিনতে পারবে না কেন? হাসি হাসি মুখে তারা বলেন, কয়লা কিনতে আরো দেড় মাস লাগবে। তাহলে আপনারাও আমাদের সাথে আসুন, আপনারাও থাকুন আমাদের সাথে দোজখের আগুনে। সরকার বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে। টেন্ডার ছাড়াই কাজ দেয়া হয়েছে বিদ্যুত খাতে। রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের নামে ঋণ করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। ১ হাজার কোটি টাকার স্টিমেটের প্লান্টের জন্য খরচ হয়েছে মাত্র ৩ শো কোটি টাকা। প্রকল্পে ৭ থেকে ৮ শো কোটি টাকা ঋণ করে বাকি টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও ক্যাপাসিটি চার্জের নামে লক্ষ-লক্ষ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। তাই এক শ্রেণীর মানুষ দেশে টাকা রাখার জায়গা পাচ্ছে না। দেশের মানুষ যেনো নরকে বাস করছে।

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি প্রমূখ।

সর্বশেষ আপডেট: ৬ জুন ২০২৩, ০২:২৩
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও