ছেলেমেয়েদের স্কুলে ভর্তি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কাজে প্রতিনিয়ত প্রয়োজন পড়ছে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি)। কিন্তু বড় একটা অংশেরই এনআইডিতে নানা ধরনের ভুল-ত্রুটি রয়ে গেছে। এসব ভুল-ত্রুটি থাকার কারণে পড়ত হচ্ছে নানা ধরনের জটিলতায়। এনআইডির ভুল-ত্রুটির সংশোধন করতে প্রতিনিয়তই মানুষ ছুটছে নির্বাচন কার্যালয়ে। সঠিক তথ্য জানা না থাকায় অনেকেই ভোগান্তিরও শিকার হন অনেক সময়।
কোনো ধরনের সংশোধনের জন্য কী কী কাগজপত্র লাগবে, তা অনেকেই জানেন না। এসব না জানার কারণেও অনেকে হয়রানির শিকার হন। এনআইডির কোনো সংশোধনের জন্য কী ধরনের কাগজপত্র লাগবে, নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্যগুলো জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
১. জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর নাম (বাংলা/ইংরেজি) এবং জন্মতারিখ সংশোধন
এই ধরনের সংশোধনের জন নিচে বর্ণিত কাগজপত্র/তথ্যাদি জমা দিতে হবে-
ক. শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি/সমমান হলে এসএসসি/সমমান সনদপত্র;
খ. শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি/সমমান না হলে এবং তিনি সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত কিংবা সংবিধিবদ্ধ কোনো সংস্থায় চাকরিরত হলে, চাকরি বই/মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও);
গ. অন্যান্য ক্ষেত্রে, জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধন সনদ/ড্রাইভিং লাইসেনস/ট্রেড লাইসেনস/কাবিননামার সত্যায়িত অনুলিপি;
ঘ. নামের আমূল পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, প্রার্থিত পরিবর্তনের যথার্থতা সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য দলিলাদি [এসএসসি সনদ/পাসপোর্ট/চাকরি বই/মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও)/ড্রাইভিং লাইসেনস, যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য] ছাড়াও ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পাদিত হলফনামা ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কপি;
ঙ. ধর্ম পরিবর্তনের কারণে নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পাদিত হলফনামা ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কপি এবং আবেদনের যথার্থতা সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য দলিলাদি (শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেনস/জন্মনিবন্ধন সনদ, ইত্যাদি যাহার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)।
২. বিবাহ বা বিবাহবিচ্ছেদ বা অন্য কোনো কারণে কোনো নারী তার নামের সঙ্গে স্বামীর নামের অংশ (টাইটেল) সংযোজন বা বিয়োজন বা সংশোধন করতে চাইলে, তাকে কাবিননামা/তালাকনামা/মৃত্যু সনদ/ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পাদিত হলফনামা/বিবাহবিচ্ছেদ ডিক্রির সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রয়োজনে, সরেজমিন তদন্ত করতে পারবেন।
৩. পিতা/মাতার নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে, জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর এসএসসি, এইচএসসি বা সমমান সনদপত্র (যদি তা বাবা/মায়ের নাম উল্লিখিত থাকে) এবং জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর পিতা, মাতা, ভাই ও বোনের জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রয়োজনে, সরেজমিন তদন্ত করতে পারবেন।
৪. বাবা/মায়ের নামের আগে ‘মৃত’ অভিব্যক্তিটি সংযোজন বা বিয়োজন করতে চাইলে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পিতা/মাতার মৃত্যু সনদের সত্যায়িত অনুলিপি বা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত অনুলিপি ও জীবিত থাকবার সমর্থনে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান/পৌর মেয়র/কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে।
৫. ঠিকানা (বাসা/হোল্ডিং/গ্রাম/রাস্তা/ডাকঘর) সংশোধনের ক্ষেত্রে, সঠিক ঠিকানার স্বপক্ষে বাড়ির দলিল/টেলিফোন, গ্যাস বা পানির বিল/বাড়িভাড়ার চুক্তিপত্র/বাড়িভাড়া রশিদের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।
৬. রক্তের গ্রুপ সংযোজন বা সংশোধনের ক্ষেত্রে, এটার স্বপক্ষে চিকিৎসকের সনদপত্র জমা দিতে হবে।
৭. শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশোধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।
৮. টিআইএন/ড্রাইভিং লাইসেনস নম্বর/পাসপোর্ট নম্বর সংশোধনের ক্ষেত্রে, প্রয়োজনে, টিআইএন সনদ/ড্রাইভিং লাইসেনস/পাসপোর্টের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।
৯. অন্য যেকোনো সংশোধনের ক্ষেত্রে, এ-রকম সংশোধনের স্বপক্ষে উপযুক্ত সনদ, দলিল ইত্যাদির সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।
আবেদনপত্রের সঙ্গে দাখিল করা অনুলিপিগুলো নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিরা সত্যায়িত করতে পারবেন: সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান। অসম্পূর্ণ বা ত্রুটিপূর্ণ আবেদন বাতিল হয়ে যাবে।
সর্বশেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৫৩
পাঠকের মন্তব্য