ভারতের প্রমোদতরী ‘গঙ্গা বিলাস’ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মোংলা বন্দরের ৬ নম্বর জেটিতে ভিড়বে বিলাসবহুল পাঁচ তারকা মানের এই জাহাজ।
সীমান্ত থেকে সুন্দরবনের নৌপথে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের একটি টিম রয়েছে। এছাড়া মোংলা বন্দর জেটিতে প্রমোদতরী ও বিদেশি পর্যটকদের স্বাগত জানাতে নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহামুদ চৌধুরী, ভারতীয় হাইকমিশনার, বন্দর চেয়ারম্যানসহ পদস্থ কর্মকর্তারা অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিদেশি পর্যটকবাহী ‘গঙ্গা বিলাস’ সুন্দরবনের আংটিহারায় প্রবেশের পর ইমিগ্রেশনপ্রক্রিয়া শুরু হয়। এ পয়েন্টে নাবিকদের কোভিড-১৯ সার্টিফিকেট পরীক্ষা করার ব্যবস্থা রয়েছে। ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসি থেকে বাংলাদেশ হয়ে আসাম পর্যন্ত ৩২০০ কিলোমিটার পাড়ি দেবে নদীপথে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ যাত্রার প্রমোদতরী ‘গঙ্গা বিলাস’।
সুন্দরবনসহ দুদেশের ২৭টি নদী ও ৪০টি ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনে ৫১দিন সময় লাগবে এই যাত্রাপথে। যাত্রাপথে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন নদ-নদী ঘুরে আসামের ডিব্রুগড়ে পৌঁছাবে পর্যটকবাহী এ প্রমোদতরী। ভারতের বারানসি থেকে যেসব পর্যটক ‘গঙ্গা বিলাস’-এ আরোহণ করছেন শুধু তারাই পুরো পথ ভ্রমণ করবেন।
দৈর্ঘ্যে ৬২ মিটার এবং ১২ মিটার চওড়া এ গঙ্গা বিলাসে ২৮টি বিলাসবহুল কামরা রয়েছে। এসব কামরায় ৩৬ জন পর্যটক থাকার অত্যাধুনিক ব্যবস্থা আছে। এছাড়া নাবিকসহ প্রায় ৮০ জন ধারণক্ষমতা ও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে প্রথম যাত্রায় গঙ্গা বিলাসে ৩২ জন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক পর্যটক হিসেবে আরোহণ করছেন। এ প্রমোদতরীতে সম্পূর্ণ যাত্রায় জনপ্রতি ব্যয় হবে ২০ লাখ রুপি।
বাংলাদেশে অবস্থানকালে ‘গঙ্গা বিলাস’ খুলনা জেলার কয়রার আংটিহারা হয়ে ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে প্রবেশ করে মোংলা বন্দর হয়ে বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ এলাকা ঘুরবেন বিদেশি পর্যটকরা। পরে নৌপথে বরিশাল হয়ে মেঘনা ঘাটে অবস্থান করে সোনারগাঁ ও ঢাকায় ভ্রমণ করবেন প্রমোদতরী গঙ্গা বিলাসের যাত্রীরা। পরে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ হয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী, রংপুরের দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণের সুযোগ থাকছে তাদের। ভারতে প্রবেশ করবে চিলমারী থেকে। গঙ্গা বিলাসের দেশের অভ্যন্তরে থাকাকালীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ প্রটোকল রুটের নাব্য রক্ষা, বার্দিং সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও নৌপথ ব্যবহারের জন্য ভয়েজ পারমিশন প্রদান এবং ভয়েজ পারমিশনের সার্বিক মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবে। ১৩ মার্চ গঙ্গাবিলাস আসামের ডিব্রুগড় থেকে একই পথে ফেরার কথা রয়েছে।
নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৯৭২ সালে প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের অধীনে বাংলাদেশ-ভারত নৌপথে বাণিজ্য শুরু হয়। প্রটোকলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যাত্রী ও পর্যটকবাহী নৌযান চলাচলের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কোস্টাল এবং প্রটোকল রুটে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ সমঝোতা স্বাক্ষরের আওতায় ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর পর থেকে এ রুটে তিনটি ভারতীয় এবং একটি বাংলাদেশি নৌযান চলাচল করেছে।
সর্বশেষ আপডেট: ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৯:৪১
পাঠকের মন্তব্য