মৌলভীবাজারে কিছুতেই থামানো যাচ্ছেনা অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ ব্যাবসা। কিছু দিন আগে বিভিন্ন খবরের কাগজ ও টেলিভিশনে উঠে আসে এসব অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ ব্যাবসার খবর। তার পরও প্রশাসনের নজরে পড়ছে না । কি এমন অদৃশ্য কারন হতে পারে? যে প্রশাসন নজরে নিচ্ছে না,সে টা জানতে চায় সাধারন মানুষ।
সাধারন মানুষ মনে করে অবৈধ বৈদেশিক মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের কারনে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
প্রবাসী অধ্যূষিত মৌলভীবাজার শহরের বেরির পাড় এলাকায় রয়েল ম্যানসন মার্কেটের দ্বিতীয় তালায় সোনালী ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা। এই মার্কেটের নিচ তলা ও আশপাশের এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি অবৈধ বৈদেশিক মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান। এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলছে ডলার পাউন্ড এর অবৈধ ব্যবসা।
সোনালী ব্যাংকের বৈদেশিক বানিজ্য শাখার ব্যবস্থাপক মো. আজিজুল হক রাসেল বলেন অবৈধ ভাবে কেউ ব্যাবসা করছে কিনা আমার জানা নেই। অবৈধভাবে কিংবা সরকারের চ্যানেলের বাইরে কেউ মানি লেনদেন করলে অবশ্যই সরকার রাজস্ব হারাবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব অবৈধ ব্যাবসা বন্ধ করা প্রয়োজন। এ যেনো বাতির নিজ অন্ধকার। তবে সাধারন মানুষ মনে করছে ব্যবস্থাপক মো. আজিজুল হক রাসেল এর সাথে অবৈধ ব্যাবসায়ীরা হাত মিলিয়ে অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ এর ব্যাবসা করছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জমা দেয়া অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের তালিকাসহ একটি নথি এসেছে। তালিকায় অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে শহরের রয়েল ম্যানশনের তরফদার এন্টারপ্রাইজ,শাহ মোস্তফা টেলিকম,রুমন এন্টার প্রাইজ,ফারিয়া ইলেট্রনিক্স,মদিনা ট্রেডার্স, ডায়গষ্টিক সেন্টার, এফ ইলেট্রনিক্স কৌরেশী টেডার্স, আহমদ ম্যানশনের নিউ জলি ক্লথ স্টোর এর নাম।
ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এগুলো ছাড়াও অবৈধ আরো শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা প্রকাশ্যে এবং গোপনে বৈদেশিক মূদ্রা বিনিময় করে আসছে। বিদেশ থেকে আসা বৈদেশিক মূদ্রা কম দামে প্রবাসীদের কাছ থেকে কিনে। যখন দাম বেড়ে যায় তা আবার বেশি মূল্যে হুন্ডি ব্যাবসায়িদের কাছ বিক্রি করে দেয়। রয়েল ম্যানসনের ভিতরে এফ ইলেট্রনিক্স এর মালিক ফয়েজ মিয়ার সঙ্গে তরফদার এন্টারপ্রাইজ এর সত্ত্বাধিকারী নুবেল তরফদার টিটুর জগড়া হয়ে থাকে বিদেশিদের কাছ থেকে বৈদেশিক মূদ্রা কিনতে দর কশা কশিতে।
প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে বুক ফুলিয়ে বাহিরে বসে প্রকাশ্যে অবৈধ ডলার পাউন্ড এর ব্যাবসা করছে হান্নান মিয়া ও ডায়গষ্টিক সেন্টারের মালিক সিতন। রয়েল ম্যানসনের সামনে অবৈধ ডলার পাউন্ড এর ব্যাবসায়ীরা দুজন লোক বসিয়ে রাখে পাহারাদার হিসেবে,প্রশামনের লোক আসলেই তাদের খবর দেয়ার জন্য। আবার এই দুই জন দিয়ে ম্যানসনের সামনে যারা বৈদেশিক মূদ্রা কিনতে এবং বিক্রি করতে আসা লোকদের ডাকা ডাকি করে নিয়ে যায় মার্কেটের ভিতরে। এসব দেখে সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জ মালিক ফয়ছল আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক বার অবৈধ ব্যাবসায়ীদের সাথে মারপিটে জড়িয়ে পড়েন। এধরনের ঘটনা একবার জেলা পরিষদে বসে মিমাংশা করা হয়। কিছুদিন যেতে না যেতে আবার মারপিটে জড়িয়ে পড়েন তারা । এবার মৌলভীবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর সৈয়দ সেলিম হক দুপক্ষকে ডেকে সমাধান করে দেন।
সাধারন মানুষ মনে করছেন বৈধ অবৈধ ডলার পাউন্ড এর ব্যাবসা নিয়ে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে তাই প্রসাশন এদিকে নজর দেয়া প্রযোজন। তবে এসব ব্যাবসায়ীদের মৌলভীবাজার পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে।
সরকার অনুমোদিত মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ এর এক মাত্র মানি এক্সচেঞ্জ সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জ। যে নো দুধে-ধোয়া-তুলশি-পাতা।
সিলেট যেখানে পাসপোর্টে এন্ডোর্স করতে লাগে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা সেখানে সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জে লাগে ৬৫০ থেকে ৭৫০টাকা।
কিছুদিন আগে বিদেশ যাত্রি আফজাল মিয়া বলেন সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জে আমি কিছু ডলার পাউন্ড এক্সচেঞ্জ করি তখন আমি আমার পাসপোর্ট এন্ডোর্স করতে বলি তখন আমাকে বলেন ৭৫০ টাকা লাগবে অনেক তর্ক বির্তকের পর আমি নিরুপায় হয়ে ৭৫০ টাকা দিয়ে এন্ডোর্স করি। এন্ডোর্স করার পর আমি মেমো চাইলে তারা বলে আমরা মেমো দেই না। মেমো দিলে আমি যেকোনো জায়গায় অভিযোগ দিতে পারতাম।আমরা প্রবাসিরা বড়ই অসহায়।
সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জ নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ আসছে।
এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ জিয়াউর রহমান,বলেন আমরা কাউকে লাইন্সেস দেই না কেউ যদি এই অবৈধ ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা তদন্ত করে বিষটি দেখবো।
সর্বশেষ আপডেট: ৭ অক্টোবর ২০২২, ১৭:৫৫
পাঠকের মন্তব্য