বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় সৎ মেয়ে ও স্ত্রীর ঘুমের ঘরে পেট্টল দিয়ে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মেয়ে কারিমা আক্তার (১০) ঘটনাস্থলে পুড়ে মারা যায়। স্ত্রী সাজেনুর বেগমের (৩০) অবস্থ আশঙ্কাজনক।

বুধবার (১২জুন) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার সদর পাথরঘাটা ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘাতক সৎ পিতা মো. বেল্লাল হোসেন (৩৫) পলাতক রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৩জুন) সকালে মৃত্যু কারিমার মা সাজেনুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। ছকিনার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। ৮০ ভাগ পুড়ে যাওয়া সাজনুরের চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে নগদ ১০ হাজার অনুদান দেয়া হয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী এবং সাজেনুরের চাচাতো ভাই মো. ইব্রাহিম জানান, বেল্লাল হোসেন বাড়ি বরগুনার তালতলী উপজেলার ছকিনা এলাকায়। প্রায় দেড় বছর আগে সাজেনুরের সাথে বেল্লালের বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায় একাধিকবার শালিসী ব্যবস্থাও হয়েছে। শালিসী ব্যবস্থা মাঝে প্রায় সময়ই স্বামী বেল্লাল হোসেন মা-মেয়েকে আগুনে পুড়ে মারার হুমকি দিয়েছে।

সাজেনুরের ফুফাতো বোন ফাতেমা বেগম বলেন, আমার বোন সাজেনুর অসুস্থ্য অবস্থায় বলেছেন ঘটনার সময় রাতে ঘর থেকে বাহিরে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ধাউ ধাউ করে আগুন জ্বলছে শুরু করে। এ সময় সাজেনুর ও তার মেয়ে কারিমা আক্তার ঘর থেকে বের হতে চাইলে মা-মেয়েকে রামদা দিয়ে ধাওয়া করলে ঘর থেকে আর মা-মেয়ে বের হতে পারেনাই। এতে ঘটনাস্থলেই ঘরের মধ্যে আগুনে পুড়ে মেয়ে কারিমা মারা যান। আর মা সাজেনুর শরীরের ৮০ভাগই পুড়ে যায়।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, সাজেনুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরের ৮০ ভাগই পুড়ে গেছে।

পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফ শিকদার বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা পারভীন বলেন, সাজেনুর ও বেল্লালের দাম্পত্য বিষয় নিয়ে একাধিকবার শালিসী ব্যবস্থা হয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সাজেনুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।