৫ আগস্ট পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট

মুক্তিবাণী অনলাইন ডেস্ক :

একদিন পর ভোট। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ প্রার্থী, কর্মী-সমর্থক ও ভোটাররা শেষ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন। সোমবার সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদানের বিষয়ে ভোটারদের ধারণা দেয়া হচ্ছিল।

হঠাৎ করে নির্বাচন স্থগিতের খবর আসায় থেমে গেল নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত থাকা মাইকের আওয়াজ। সোমবার রাত থেকে নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা বন্ধের নির্দেশ ছিল। কিন্তু ভোটগ্রহণের একদিন আগে সোমবার দিনই জানা গেল ৫ আগস্ট পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এতে প্রার্থীদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা বাড়ছে।

শেষ সময়ে নির্বাচন স্থগিতের বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা। সিলেট-৩ আসনের বালাগঞ্জ উপজেলার ভোটার ও প্রার্থীদের সমর্থকেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করছেন।

তারা বলছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে যদি নির্বাচন স্থগিত করা হয়, তাহলে তফসিল ঘোষণার সঙ্গে-সঙ্গে কেন করা হলো না? এত প্রচার-প্রচারণা হলো, সব প্রস্তুতি শেষে এখন তাদের (রিটকারীরা) ঘুম ভেঙেছে। নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে নৌকা সমর্থক আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অভিযোগের তীর দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিতদের দিকে।

মনোনয়ন বঞ্চিতরা নেপথ্যে থেকে ইন্ধন দিচ্ছেন বলে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন। বিশেষ কোনো মহলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এটি দূরভিসন্ধিমূলক ষড়যন্ত্র বলে তারা মনে করছেন।

তারা জোর দিয়ে বলছেন, নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরণের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হবে না। অপেক্ষা করুন, ২৮ জুলাই নির্বাচন হবে। তবে এ বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থীর মধ্যে কেউ-ই এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। প্রার্থীদের মুঠোফানে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কথা বলা যায়নি।

নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রার্থীদের ঘনিষ্ঠ লোকজন জানিয়েছেন, এখন তারা ইসির সিদ্ধান্তের দিকে চেয়ে আছেন। করোনার কারণে ভোট গ্রহণের তারিখ ১৪ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই করা হয়। এখন আবার স্থগিত করা হলো। সময় যত দীর্ঘ হচ্ছে প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ও তত বাড়ছে। এ নিয়ে প্রার্থীরাও চিন্তিত।

এদিকে উপনির্বাচন উপলক্ষে ২৪ জুলাই সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেছিলেন, আইনি ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই। নির্বাচনের সকল কার্যক্রম লকডাউনবহির্ভূত থাকবে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোটগ্রহণ নিশ্চিতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে। যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোটগ্রহণের জন্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ওই সভায় নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরীও বক্তব্য দেন।

বিজ্ঞজনেরা বলছেন, এখানে আইনি কোনো জটিলতা নেই। বিষয়টি ইসির ওপর নির্ভর করছে। ইসি চাইলে এই আদেশের বিরুদ্ধে দ্রুত অ্যাপিলেড ডিভিশনের (চেম্বার জজের) মাধ্যমে বিশেষ বেঞ্চের আদেশ স্থগিত করে নতুন আদেশের মাধ্যমে আগের নির্ধারিত তারিখেই নির্বাচন করা সম্ভব।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, করোনার সংক্রমণ যা হওবার হয়ে গেছে। করোনাকালীন তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচনী প্রস্তুতি নেয়া হলো। এত প্রচার-প্রচারণা, উৎসব-আমেজের পর এখন নির্বাচন স্থগিত করা হলো। একদিন তো নির্বাচন হবেই। দেরিতে যদি নির্বাচন হয় তাহলে নির্বাচন ঘিরে জনসমাগম তো লেগেই থাকবে।

বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কনিষ্ট সদস্য শাহ আলম সজিব তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন- ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জনের কাছে করোনা পৌঁছে দিয়ে ভোট গ্রহণের ২ দিন আগে নির্বাচন স্থগিত। রিটকারী শিবিরের সাবেক সেক্রেটারি। নিশ্চয় সে কারও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে নির্বাচন স্থগিত করিয়েছে।

উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শেখ মো. ফজলু মিয়া বলেন, সব প্রস্তুতি শেষে নির্বাচন স্থগিত করা এটা কেমন সিদ্ধান্ত। বালাগঞ্জ সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি টিপু সুলতান বলেন, করোনার এ সময়ে দ্রুত নির্বাচন শেষ করাটাই উচিত।

সর্বশেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২১, ০০:৫৫
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও