বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের ৩২তম আসরের পর্দা উঠলো জাপানের টোকিও শহরে। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বর্ণিল আলোকসজ্জা, জাপানের নানা সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলার মধ্যদিয়ে পর্দা উঠেছে টোকিও অলিম্পিকের। উদ্বোধন ঘোষণা করেন জাপানের রাজা নারুহিতো।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনও ঊর্ধ্বমুখী বিশ্বের অনেক দেশে। খোদ জাপানও নিরাপদ নয়। এর মধ্যেই রাজধানী টোকিওতে ১১ হাজারের বেশি ক্রীড়াবিদকে নিয়ে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ অলিম্পিক আয়োজনের কঠিন চ্যালেঞ্জটাই হাতে নিয়েছে আইওসি (ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি)।
বুধবার থেকেই অলিম্পিকের কিছু ইভেন্টের খেলা শুরু হয়েছে। তবে গেমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো শুক্রবার।করোনার কারণে এবারের অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছে নামকাওয়াস্তে।
অতীতের মত জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন ছিলনা। দর্শক নেই, স্বল্প সংখ্যক অ্যাথলেট, অনেক অনেক ফেসমাস্ক এবং জীবাণুবিহীন ফ্ল্যাগ-এসব নিয়েই শুরু হলো টোকিও অলিম্পিক। বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক এই ক্রীড়াযজ্ঞের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাতেগোনা ৯৫০ জন। প্রধান অতিথি হিসেবে আছেন জাপানের সম্রাট নারুহিতো করোনার কারনে গত বছরের স্থগিত গেমসের উদ্বোধন করেছেন।
করোনার মহামারির এই সময়ে চলে গেছে অনেক প্রাণ। তাদের উদ্দেশে শুরুতেই সমবেদনা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয় অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।
গত বছর হওয়ার কথা থাকলেও করোনার জন্যই পিছিয়ে যায় টোকিও অলিম্পিক। ভিলেজের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ায় এবারও শেষ মুহূর্তে আসর বাতিল হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল আয়োজক প্রধানের কথায়। তবে শেষ পর্যন্ত অলিম্পিক শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরল ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে।
অনুষ্ঠানে অলিম্পিক লরেল নামের বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের নোবেল পদকজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। অ্যাথলেটদের প্যারেড শুরুর আগে ভার্চুয়ালি তাকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসরের আয়োজক জাপানের সংস্কৃতি বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। জাপানের অক্ষর অনুযায়ী মার্চ পাস্টে অংশ নেয় অংশগ্রহণকারী দেশগুলো।
অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী অ্যাথলেটের সংখ্যা ১১ হাজারের বেশি। নিয়মানুযায়ী প্রতিটি দেশের অ্যাথলেটরাই মার্চপাস্টে অংশগ্রহণ করে থাকেন। মার্চ পাস্টে সবার আগে ছিল গ্রিস, যারা অলিম্পিক গেমসের প্রথম আয়োজক। এরপর অলিম্পিকসের রিফিউজি দল এবং সবশেষে আসে স্বাগতিক জাপান দল। সব মিলিয়ে ২০৭টি দেশ এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশের পতাকা বহন করেন সাঁতারু আরিফুল ইসলাম। বাংলাদেশের হয়ে এই আসরে অংশ নিচ্ছেন মোট ৬ অ্যাথলেট। বাকিরা হলেন সাঁতারু জুনাইনা আহমেদ, দুই আর্চার রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী, স্প্রিন্টার জহির রায়হান ও শুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকি। টোকিওর অলিম্পিকস স্টেডিয়ামে আনা হয় অলিম্পিক রিং। তাতে ফিরে আসে টোকিওর ১৯৬৪ আসরের স্সৃতিও। অলিম্পিকস রিংয়ের সাতটি বৃত্ত তৈরি করা হয়েছে সেই গাছের কাঠ দিয়ে, যে গাছগুলো ১৯৬৪ সালের অ্যাথলেটরা লাগিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য এবারের অলিম্পিকে ৩৩টি খেলার ৫০টি ডিসিপ্লিনে ৩৩৯টি ইভেন্ট তথা স্বর্ণপদকের জন্য লড়বেন প্রায় ২০৫টি দেশের ১১ হাজার ৩২৪ জন ক্রীড়াবিদ। বাংলাদেশ থেকে ৬ জন ক্রীড়াবিদ রয়েছেন এবারের আসরে।
সর্বশেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১, ১১:৩১
পাঠকের মন্তব্য