ইসিতেও বৈধ হাবিব, উচ্চ আদালতে যাবেন আতিক

সিলেট প্রতিনিধি :

দ্বৈত নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে সিলেট-৩ আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন-ইসি। বুধবার প্রধান নির্বাচন কার্যালয়ে শুনানি শেষে হাবিবের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়। তবে ইসির এই রায়ে অসন্তুষ্ট এই আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আতিকুর রহমান উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

জানা যায়, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকলে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থীতা অবৈধ হলেও মনোনয়নপত্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব যুক্তরাজ্যের নাগরিত্ব বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি। এমন অভিযোগ করেন সিলেট-৩ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। হাবিবের দ্বৈত নাগরিকত্ব চ্যালেঞ্জ করে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ অভিযোগ করেছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান। তার অভিযোগ, রিটার্নিং কর্মকর্তা একতরফা রায় দিয়েছেন, তাদের কথা শোনেননি। যে কারণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরে ২০ জুন লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। বুধবার নির্বাচন কমিশন সেই অভিযোগের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগের শুনানি শেষে হাবিবের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক জানান, তার অভিযোগের পর আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব নির্বাচন কমিশনের কাছে যে তথ্য দিয়েছেন তা আমলে নিলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হতে পারে না। তিনি জানান, হাবিবুর রহমান ইসিতে আইনজীবীর মাধ্যমে জানিয়েছেন- তিনি ১৩ জুন কুরিয়ারের মাধ্যমে তার নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের আবেদনপত্র যুক্তরাজ্যে পাঠিয়েছেন। সেই আবেদনপত্র গ্রহণ হয়েছে কিনা কিংবা কী সিদ্ধান্ত দিয়েছে যুক্তরাজ্য সে বিষয়ে কোনো তথ্য নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হয়নি। আতিক বলেন, ১৩ জুন নাগরিত্ব প্রত্যাহারের আবেদন কুরিয়ারে যুক্তরাজ্যে পাঠিয়ে ১৫ জুন মনোনয়নপত্র জমা দিলে সেটা কোনোভাবেই আইনে বৈধ হতে পারে না। তাই তিনি নির্বাচন কমিশনের এই আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়েছেন। আদেশের কপি হাতে পেলেই উচ্চ আদালতে এই আদেশের বিরুদ্ধে রিট আবেদন করবেন বলে যুগান্তরকে জানান আতিকুর রহমান আতিক।

এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি সব আইন মেনেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সব কাগজপত্র দেখেই আদেশ দিয়েছেন। দেশের আইন অনুযায়ী, যেভাবে প্রত্যাহার করলে মনোনয়নপত্র বৈধ হয় সেভাবেই করেছি। এসব ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের একাংশ নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ এ বছরের ১১ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। করোনা পরিস্থিতির কারণে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ৯০ দিন বিলম্বের পর আগামী ২৮ জুলাই এ আসনে ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন। ১৫ জুন ৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর বাছাইয়ে চারজনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য (বহিষ্কৃত) স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমেদ চৌধুরী ও বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির প্রার্থী জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া।

সর্বশেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২১, ১২:১১
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও