ফিলিস্তিনের অধিকৃত জেরুজালেমে মঙ্গলবার পতাকা মিছিল করেছে ইসরায়েলের উগ্রপন্থী ইহুদিরা। নতুন করে উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কায় এর আগে মিছিলটির অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানায় পুলিশ। তবে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার শেষ মুহূর্তে এই মিছিলের অনুমতি দেয়। পরে নাফতালি বেনেটের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার এর অনুমতি দেয়।
পতাকা মিছিলের মধ্য দিয়ে ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল কর্তৃক পূর্ব জেরুজালেম দখলের ঘটনা উদযাপন করে ইহুদিবাদী বিক্ষোভকারীরা। এ ধরনের বিক্ষোভকে উস্কানিমূলক হিসেবে দেখে থাকে ফিলিস্তিনিরা। কেননা এসব কর্মসূচিতে সাধারণত ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু কামনা করে স্লোগান দেওয়া হয়। বিক্ষোভ থেকে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা চালানো হয়। তবে এদিনের মিছিলে এখনও পর্যন্ত বড় ধরনের কোনও সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শতায়্যে বলেন, ‘এটা আমাদের জনগণের জন্য উস্কানি আর আমাদের জেরুজালেম এবং পবিত্র স্থানগুলোতে আগ্রাসন।’
উগ্রপন্থীদের পতাকা মিছিলের সমান্তরালে এদিন ফিলিস্তিনের ওপর ধরপাকড় চালায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। অন্তত ছয় ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করা হয়। আরও কয়েকজনকে লাঞ্ছিত করা হয়। দামাস্কাস গেট প্লাজা এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়া হয়।
ইহুদিবাদীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে জেরুজালেমে কড়া পাহারা বসায় ইসরায়েলি পুলিশ। ফিলিস্তিনের প্রবেশ ঠেকাতে দামাস্কাস গেট এলাকায় মেটাল ব্যারিয়ার বসানো হয়।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রী ওমর বার লেভ বলেন, দুনিয়ার সব গণতান্ত্রিক দেশেই বিক্ষোভের অধিকার রয়েছে। পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। সহাবস্থান ধরে রাখতে আমরা আমাদের সাধ্যমতো সবকিছু করবো।
গত মাসে জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদ এবং আশেপাশের এলাকায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলি পুলিশের সংঘর্ষের স্মৃতি এখনও তাজা। ওই সংঘর্ষের ধারাবাহিকতায় এক পর্যায়ে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় টানা ১১ দিন ধরে বিমান হামলা চালায় দখলদার বাহিনী। হত্যা করা হয় আড়াই শতাধিক ফিলিস্তিনিকে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বহু স্থাপনা।
ইসরায়েল ও গাজার শাসক দল হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে আপাত অবসান হয় ওই সংঘাতের। এরইমধ্যে মঙ্গলবার জেরুজালেমের রাস্তায় নেমে পড়ে উগ্রপন্থী ইহুদিরা।
উল্লেখ্য, পুরনো শহরের অন্তর্ভুক্ত পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী বানাতে চায় ফিলিস্তিনিরা। তবে ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর থেকে এলাকাটি দখলে রেখেছে ইসরায়েল। পেশী শক্তির জোরে পুরো জেরুজালেমকেই নিজেদের রাজধানী বানাতে চায় তারা। সূত্র: আল জাজিরা।
সর্বশেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২১, ১৬:০৪
পাঠকের মন্তব্য