ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাবি করেছেন যে তারা হামাসের বেশ ক্ষতি করেছেন, গাজার নিয়ন্ত্রণকারী এই গ্রুপটির শক্তি বেশ খর্ব করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু গাজায় বিপুল সংখ্যক বোমা ফেলেও ওই লক্ষ্য অর্জনের সরকারি দাবির ব্যাপারে ইসরাইলিরা সংশয়ে রয়েছে। আবার ইসরাইলের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও বিপদে রয়েছেন। গাজায় হামলার মাধ্যমে তিনি উগ্রপন্থীদের সমর্থন আদায় করে আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন বলে অনেকে মনে করছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে বাধ্য হওয়ার কারণে তিনি বরং আরো সমর্থন হারাচ্ছেন।
পশ্চিম জেরুসালেম থেকে আল জাজিরার সংবাদদাতা হ্যারি ফাওসেট বলেন, অনেক ধ্বংস ও অনেক মৃত্যুর পর কী পাওয়া গেল তা নিয়ে অনেক উদ্বেগ ও প্রশ্ন রয়ে গেছে। তিনি বলেন, ইসরাইলে এমন ধারণাই বিরাজ করছে যে হামাসকে গুঁড়িয়ে দেয়া নিয়ে এখন যেসব দাবি করা হচ্ছে, তা আগেও অনেকবার করা হয়েছে।
এদিকে ইসরাইলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আকিভা এলডার বলেন, ফিলিস্তিনিদেরকে বিভক্ত করার সরকারি কৌশল ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন যে গাজা, পশ্চিম তীর ও ইসরালি প্রপারে ফিলিস্তিনি সমাজগুলোর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করার ইসরাইলি কৌশল গত কয়েক বছরের মধ্যে প্রথমবার ব্যর্থ হয়েছে।
তেল আবিব থেকে স্কাইপের মাধ্যমে আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ইসরাইল প্রপারে ইসরাইলি ও আরবদের মধ্যকার ক্ষত নিরাময় হতে শুরু করেছে বলে আমরা বিশ্বাস করার পর তা আবার বেড়ে গেছে। ইসরাইলি সংখ্যাগরিষ্ঠ ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে কোনো যুদ্ধবিরতি হয়নি।
তিনি বলেন, অধিকন্তু, এই যুদ্ধবিরতিতে উগ্র ডানপন্থীরা খুবই অসন্তুষ্ট। ফলে নেতানিয়াহু তার উগ্র ডানপন্থী অংশীদারদের হারাতে পারেন।
গাজায় বিজয়ের উল্লাস
ইসরাইলের সাথে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হওয়ার পর গাজা উপত্যকায় বিজয়ের উল্লাস দেখা যাচ্ছে। ১১ দিন যুদ্ধের পর বৃহস্পতিবার রাতে ইসরাইল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা ঘোষণা করে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিস জানায়, সিকিউরিটি ক্যাবিনেট সর্বসম্মতভাবে শর্তহীন একটি যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে মিসরীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার সুপারিশ করেছে।
আর ফিলিস্তিনি গ্রুপ হামাস ও ইসলামিক জিহাদ এক বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছে। এটি ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর গাজা ও ফিলিস্তিনি এলাকাগুলোতে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে আসে, তারা বিজয়সূচক ‘ভি,’ সংকেত প্রদর্শন করে, পতাকা দোলায়। ধ্বংসস্তুপের মধ্যেই তারা বিজয়ের গান গাইতে থাকে।
আল জাজিরার সংবাদদাতা সাফওয়াত আল-কালুত শুক্রবার সকালে বলেন, ফিলিস্তিনিরা আতশবাজি পুড়িয়ে, ফাঁকা গুলি ছুড়ে উল্লাস করছে।
তিনি বলেন, হাজার হাজার লোক বিজয় উদযাপনের জন্য রাস্তায় নেমে এসেছে।
হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা গাজার একটি পরিবারের সাথে সাক্ষাত করার পরিকল্পনা করছেন। ইসরইলি হামলায় তিনটি ভবনে বসবাসরত ওই পরিবারের ৪৫ জন নিহত হয়।সূত্র : আল জাজিরা
সর্বশেষ আপডেট: ২১ মে ২০২১, ১৬:০০
পাঠকের মন্তব্য